মানবসভ্যতায় এত এত বছর ধরে যে চড়াই উৎরাই গুলো এসেছে তা একটা প্রবাহমান ধারা হিসেবে দেখতে পছন্দ করি। এই যুগে এসে আমরা অনেক সময় ভেবে বসি যে আধুনিক যে রাষ্ট্র কাঠামো, যে সীমারেখা এটাই বুঝি চিরন্তন। কিন্তু কিছুকাল আগের ঘটনায় যদি আলোকপাত করি, দেখবো যে সেটা সম্পূর্ণ অন্যরকম।
আসলে সমস্যাটা একেবারে প্রকৃতিগত। পৃথিবীতে একটা সীমাবদ্ধ পরিমাণের সম্পদ আছে। এখন একজন মানুষের অভাব শুরু হয় যখন তার মনে নতুন কিছু পাওয়ার ইচ্ছে জাগে। আর এই ইচ্ছা, আকাঙ্ক্ষা ব্যাপারটা মানুষের মাঝে অসীমই বলা যায়। এর মধ্যে আরেকটা ব্যাপার হচ্ছে, সম্পদের সুষম বন্টন। এখানে এসে দেখা যায় মানুষের গায়ের জোর ঐ ইচ্ছের সাথে যোগ হয়েছে যা ঐ সুষমটাকে অসম করে। যার ফলে পৃথিবীর মোট সম্পদের মধ্যে জোয়ার-ভাটার একটা প্রতিচ্ছবি দেখা গিয়েছে। আর সম্পদের পিছনেই থাকে রাজনীতি, সমাজনীতি ইত্যাদি যা কিছু আছে।
এখন আসি মূল কথায়। বলা যায় যে গত ১০০ বছরে মোটামুটি সারা বিশ্বে পশ্চিমা সকল প্রকার দর্শনের অভূতপূর্ব বিস্তৃতি ঘটেছে যা এর আগে ছিলো না। সেই দর্শনকেই আমাদের সামনে তুলে ধরা হয়েছে মানবজাতির সকল সমস্যার একটা সমাধান হিসেবে। কিন্তু সব ওষুধ যেমন সবখানে কাজ করে না, তেমনি ওই দর্শনের বিষক্রিয়াতে দূরবর্তী অঞ্চল থেকে রাজনৈতিক অস্থিরতা শুরু হয়ে আস্তে আস্তে পশ্চিমে আগাচ্ছে।
আরো পড়ুনঃ শরণার্থী সংকট নিয়ে নোয়াম চমস্কি
এই ধারণাটা আজকে মাথায় আসলো ম্যাক্রোর চড় খাওয়া এবং একজন ইসলামিক স্কলারের (আব্দুল হাই মুহাম্মদ সাইফুল্লাহ) সেই ব্যাপারে একটা স্ট্যাটাস দেখার মাধ্যমে-
“থাপ্পড় খাওয়া অসম্মানের হলেও, ম্যাক্রো যে থাপ্পড় খেয়েছেন তা কিঞ্চিৎ সম্মানের! একজন প্রেসিডেন্টের সাধারণ মানুষের হাতে থাপ্পড় খাওয়া মানে তিনি সাধারণ মানুষের আয়ত্বে থাকেন ও মানুষ তার নাগাল পায়! জনগনের খোঁজ খবর সরাসরি জনগনের কাছে নিতে গিয়ে ক্ষোভের স্বীকার তিনি! বহুস্তরের পাচিল তুলে একদম ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকলে জনগনের প্রেসিডেন্ট আর দায়িত্বশীল হওয়া যায়না!”
এইযে পাঁচিল তোলার যে কথাটা বলা হলো সেটা তো মোটামুটি বলা যায় ইউরোপ/আমেরিকা ছাড়া বাকি বিশ্বের জন্যে একটা খুব স্বাভাবিক ঘটনা। এখন এই চড় খাওয়ার পর সাধারণ বুদ্ধিমত্তায় মনে হয় না যে তারা আর এইভাবে জনগণের সাথে মত বিনিময়ে যাবে। সুতরাং পাঁচিল ওঠা শুরু হলো।
এখন আসি যে চড় মারলো তার কথায়। সে নিশ্চয়ই কোনো একটা ক্ষোভ থেকে এই কাজটি করেছে। কারণ যা ই হোক না কেন তা গ্রোথিত আছে ঐ সম্পদের অসম বন্টনের মধ্যেই। এতদিন ঐ অঞ্চলের মানুষ একটা সাম্যাবস্থার মধ্যে ছিলো বলে মনে করা যেতে পারে। কিন্তু নিশ্চিতভাবে অধঃগমন শুরু হয়েছে সেখানেও।
সুতরাং সামাজিক উৎকর্ষতা কোনো অঞ্চলের নিজের সম্পত্তি না। এটা একটা সাইন কার্ভের মতো চলে। পৃথিবীর কোনো মানবসৃষ্ট দর্শনই পরম না। ভূল থাকে বলেই পরম সাম্যাবস্থা বলে কিছুই আমরা দেখি না। একদম প্রথমে বলা দুইটা কথা আমার মনে হয় এই বক্তব্যের মধ্যে এখন মানিয়ে যায়।
সম্পর্কিত আর্টিকেল
কোন আর্টিকেল খুঁজছেন?
আমাদের অনুসরণ করুন
এক নজরে এই আর্টিকেলে যেসব বিষয় আলোচনা করা হয়েছে…
সাম্প্রতিক আর্টিকেল
শেষপর্যন্ত কাশ্মীরের পেহেলগাম সন্ত্রাসী হামলাই কি ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ বাঁধাবে?
পেহেলগাম সন্ত্রাসী হামলা, ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের আশঙ্কা, সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিত, ও সীমান্তে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের অবনতি নিয়ে বিস্তারিত বিশ্লেষণ।
আদালত কী? আদালত কত প্রকার ও কি কি?
আদালত হলো রাষ্ট্র কর্তৃক স্বীকৃত সেই বৈধ প্রতিষ্ঠান, যেখানে প্রচলিত আইন অনুযায়ী বিরোধ নিষ্পত্তি, অপরাধের বিচার ও আইনি অধিকার রক্ষার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়।
ইক্যুইটি বা ন্যায়বিচার (Equity) কী? ইক্যুইটির ম্যাক্সিম সমূহ কী কী?
ইক্যুইটি বা ন্যায়বিচার (Equity) হল সাধারণ আইন (Common Law) এর শর্তের বাইরে গিয়ে ন্যায্যতা ও ন্যায় নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে সৃষ্টি হওয়া একটি স্বতন্ত্র বিচারব্যবস্থা
আব্রাহাম চুক্তিঃ মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতি, এবং ফিলিস্তিনের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা
আব্রাহাম চুক্তি হলো ইসরাইলের সাথে সংযুক্ত আরব আমিরাত ও বাহরাইন সহ আরব দেশগুলোর মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণের জন্য একাধিক চুক্তির সমষ্টি।
পশ্চিমা ডাবল স্ট্যান্ডার্ডঃ ফিলিস্তিনের লাশের ওপর দাঁড়িয়ে মানবাধিকারের বুলি!
পশ্চিমা ডাবল স্ট্যান্ডার্ড দেখলে মনে হয়, গাজায় কোনো মানুষ নিহত হয় না—শুধু "হামাস মেম্বার" হয়! আর ইউক্রেনের গমের ক্ষেত ধ্বংস হলে "হিউম্যানিটি ক্রাইম" হয় ।