বাংলাদেশের জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন এক অবিস্মরণীয় নেতা, যাঁর অসীম নেতৃত্ব ও ত্যাগের মাধ্যমে বাংলাদেশ স্বাধীনতার সম্মান লাভ করে। তার জীবন ছিল একদিকে সংগ্রাম ও বিপ্লবের প্রতীক, অন্যদিকে ক্ষমতার প্রতি এক অনিবার্য আকর্ষণও কিছু গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ব্যর্থতার প্রতিচ্ছবি। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে স্বাধীনতার সংগ্রামে এক অনন্য দৃষ্টিভঙ্গি ও সাহসের পরিচয় পাওয়ার পাশাপাশি তার শাসনামলে রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক পরিস্থিতির উত্থান-পতনও জনমনে গভীর প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছিল। এই নিবন্ধে আমরা শেখ মুজিবুর রহমানের জীবন, তার ব্যক্তিগত দিক, রাজনৈতিক ভূমিকা, এবং তার শাসনামলে বাংলাদেশে ঘটে যাওয়া রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক বাস্তবতার একটি বিশ্লেষণ উপস্থাপন করবো।
শেখ মুজিবের শৈশব ও শিক্ষা
শেখ মুজিবুর রহমান ১৯২০ সালের ১৭ই মার্চ গোপালগঞ্জের টুঙ্গীপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা শেখ লুৎফর রহমান এবং মা সায়েরা খাতুন তাকে আদর করে “খোকা” নামে ডাকতেন। মুজিব ছিলেন তাদের চার কন্যা ও দুই পুত্রের মধ্যে তৃতীয়। শৈশব থেকেই তিনি ছিলেন প্রাণবন্ত, সাহসী এবং অন্যায়ের বিরুদ্ধে আপসহীন।
মুজিব তার প্রাথমিক শিক্ষা শুরু করেন টুঙ্গিপাড়া মিশন স্কুলে। অল্প বয়সেই তার অসাধারণ নেতৃত্বগুণের প্রকাশ ঘটে। সহপাঠীদের প্রতি তার সহযোগিতা এবং অন্যায়ের প্রতিবাদ করার সাহস তাকে সবার কাছেই প্রিয় করে তোলে। ১৯২৯ সালে গোপালগঞ্জ পাবলিক স্কুলে ভর্তি হন। কিন্তু বারবার অসুস্থতার কারণে তার পড়াশোনায় বিঘ্ন ঘটে।
১৯৩৭ সালে গোপালগঞ্জ মিশন স্কুল থেকে মুজিব তার মাধ্যমিক শিক্ষা শুরু করেন। এই সময়েই তিনি রাজনীতির প্রতি আকৃষ্ট হন। ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলন এবং মুসলিম লীগের কার্যক্রম তাকে গভীরভাবে প্রভাবিত করে। ১৯৪২ সালে গোপালগঞ্জ মিশন স্কুল থেকে তিনি ম্যাট্রিকুলেশন পাস করেন।
ম্যাট্রিকুলেশনের পর তিনি কলকাতার ইসলামিয়া কলেজে ভর্তি হন। সেখানকার ছাত্রাবাসে থাকাকালীন তার নেতৃত্বগুণের আরও বিকাশ ঘটে। তিনি ইসলামিয়া কলেজ ছাত্র ইউনিয়নের জেনারেল সেক্রেটারি নির্বাচিত হন। ১৯৪৬ সালে তিনি বিএ পাস করেন। এই সময়েই তিনি হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী এবং আবুল হাশিমের ঘনিষ্ঠ সান্নিধ্যে আসেন, যা তার রাজনৈতিক জীবনের ভিত্তি স্থাপনে বড় ভূমিকা রাখে।
শেখ মুজিব বিএ পাস করার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিভাগে ভর্তি হন। কিন্তু ১৯৪৮ সালে ভাষা আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণের কারণে তাকে বহিষ্কার করা হয়। যদিও তার আনুষ্ঠানিক শিক্ষা এখানে শেষ হয়, তবুও রাজনীতির ক্ষেত্রে তার অর্জন এবং অভিজ্ঞতা তাকে একজন অসামান্য নেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে।
শেখ মুজিবের রাজনৈতিক উত্থান: প্রাথমিক পর্যায়
শেখ মুজিব ১৯৪৯ সালে আওয়ামী মুসলিম লীগের প্রতিষ্ঠার সময় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। পরবর্তী সময়ে এই দলটি ধর্মনিরপেক্ষ রাজনৈতিক দল হিসেবে পরিণত হয় এবং নাম পরিবর্তন করে “বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ” রাখা হয়। ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় শাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ, প্রতিটি আন্দোলনে তার নেতৃত্ব ছিল অগ্রগণ্য। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে তার সক্রিয় ভূমিকা তাকে জনগণের প্রিয় নেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে।
১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্টের নির্বাচনে শেখ মুজিব মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৫৮ সালে আইয়ুব খানের সামরিক শাসন জারির পর তাকে বারবার গ্রেফতার করা হয়। তবে এই সময়েই তার রাজনৈতিক দর্শন আরও শক্তিশালী হয়ে ওঠে।
ছয় দফা আন্দোলন: স্বাধীনতার রূপরেখা
১৯৬৬ সালে শেখ মুজিব ছয় দফা দাবি উত্থাপন করেন, যা মূলত বাঙালির স্বায়ত্তশাসনের রূপরেখা। এই দাবি পশ্চিম পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় শাসকদের চ্যালেঞ্জ জানায়। ছয় দফার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দাবি ছিল পূর্ব পাকিস্তানের অর্থনৈতিক স্বায়ত্তশাসন এবং আলাদা মুদ্রানীতি। ছয় দফা ছিল বাঙালি জাতীয়তাবাদের কেন্দ্রীয় স্লোগান। তবে পশ্চিম পাকিস্তান এই দাবি কঠোরভাবে দমন করতে চেয়েছিল।
১৯৬৮ সালে “আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা” শেখ মুজিবের জনপ্রিয়তাকে আকাশচুম্বী করে তোলে। এই মামলায় শেখ মুজিবসহ ৩৫ জনকে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করার অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়। তবে ব্যাপক আন্দোলনের ফলে মামলাটি প্রত্যাহার করতে হয়।
১৯৭০ সালের নির্বাচন ও স্বাধীনতার সংগ্রাম
১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ জাতীয় পরিষদের ১৬৯টি আসনের মধ্যে ১৬৭টি আসনে জয়লাভ করে। কিন্তু পশ্চিম পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠী শেখ মুজিবকে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে অস্বীকৃতি জানায়। ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ রেসকোর্স ময়দানে শেখ মুজিবের ঐতিহাসিক ভাষণ বাঙালিকে স্বাধীনতার চেতনার জন্য প্রস্তুত করে।
২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী “অপারেশন সার্চলাইট” চালায়, যা বাঙালির ওপর ব্যাপক হত্যাযজ্ঞের সূচনা করে। শেখ মুজিব সেই রাতে গ্রেফতার হন এবং পশ্চিম পাকিস্তানে প্রেরিত হন। তার নির্দেশনায় বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয় এবং ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের পর ১৬ই ডিসেম্বর ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়।
স্বাধীন বাংলাদেশে শেখ মুজিব: সাফল্য ও ব্যর্থতা
শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে বাঙালি জাতি ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের শাসন থেকে মুক্তি পান। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে তিনি নিঃসন্দেহে একজন দুর্দান্ত সংগঠক এবং জনমোহিনী নেতা ছিলেন। কিন্তু ১৯৭১ সালের যুদ্ধোত্তর বাংলাদেশে তার শাসন নিয়ে সমালোচনা কম নয়।
স্বাধীনতার পর শেখ মুজিব বাংলাদেশে ফিরে আসেন এবং প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তার নেতৃত্বে একটি যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ পুনর্গঠনের কাজ শুরু হয়। তবে তার প্রশাসনিক সিদ্ধান্তগুলো প্রায়ই সমালোচনার মুখে পড়ে। তড়িঘড়ি করে নেওয়া অনেক সিদ্ধান্ত, যেমন একদলীয় শাসন ব্যবস্থা বাকশাল গঠন, তার নেতৃত্বের প্রতি প্রশ্ন তুলে দেয়। স্বাধীনতার জন্য প্রয়োজনীয় যে গণতান্ত্রিক চেতনা, তা একদলীয় শাসনের মাধ্যমে ক্ষুণ্ন হয়। এর ফলে দেশের রাজনীতি বিভক্ত হয় এবং সাধারণ মানুষের আস্থা নষ্ট হয়।
একদলীয় শাসন বাকশাল: গণতন্ত্র নাকি কর্তৃত্ববাদ?
১৯৭৫ সালে শেখ মুজিব “বাকশাল” প্রতিষ্ঠা করেন। বাকশাল গঠনের পেছনে দাবি ছিল একটি ঐক্যবদ্ধ ও স্থিতিশীল প্রশাসনিক কাঠামো তৈরি করা। কিন্তু বাস্তবে এটি গণতান্ত্রিক চর্চার অবসান ঘটায়। এই সিদ্ধান্তকে অনেকেই তার ক্ষমতার প্রতি মোহ এবং গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের পরিপন্থী বলে মনে করেন। এই সময়ে তিনি তাজউদ্দীন আহমদসহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ নেতাকে দল থেকে দূরে সরিয়ে দেন। তাজউদ্দীন ছিলেন মুক্তিযুদ্ধকালীন সরকারের প্রাণভোমরা, কিন্তু মুজিবের সাথে মতপার্থক্যের কারণে তাকে দূরে ঠেলে দেওয়া হয়। বিরোধী দল নিষিদ্ধ হয়, সংবাদমাধ্যমের উপর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হয়, এবং একটি ক্ষমতাকেন্দ্রিক শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হয়।
শেখ মুজিব ১৯৭২ সালে জাতীয় রক্ষীবাহিনী নামে একটি নিয়মিত আধা-সামরিক বাহিনী গঠন করেন। শুরুতে মুজিব বাহিনী ও কাদেরিয়া বাহিনীর সদস্যদের নিয়ে এই বাহিনীর গঠন করা হয় বিদ্রোহ দমন এবং আইন শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য। সাদা পোশাকের এই বাহিনীর কার্যক্রম ছিল হিটলারের গেস্টাপো বাহিনীর মত। এই বাহিনী রাজনৈতিক হত্যাসহ মানবাধিকার অপব্যবহারের অসংখ্য অভিযোগে যেমন গুম, গোলাগুলি, এবং ধর্ষণের সাথে জড়িত হয়ে পড়ে। সাংবাদিক গোলাম মুরশিদ, অ্যান্থনি মাসকারেনহাস এই বাহিনীকে গেস্টাপোর সাথে তুলনা করেছিলেন। ক্ষমতার প্রতি এই মোহ এবং গণতন্ত্রবিরোধী কর্মকাণ্ড জনগণের মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টি করে।
১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষ
১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষ ছিল শেখ মুজিবুর রহমানের শাসনের একটি কালো অধ্যায়। দুর্ভিক্ষে প্রায় ১০ লাখ মানুষ প্রাণ হারায়। প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং সঠিক পরিকল্পনার অভাবে খাদ্য উৎপাদন ব্যাপকভাবে কমে যায়। খাদ্য সংরক্ষণ ও বণ্টনের ক্ষেত্রে সরকারের ব্যর্থতা এবং দুর্নীতি জনজীবনে বিপর্যয় ডেকে আনে। খাদ্য সংকট মোকাবিলায় সরকারের অদক্ষতা ও দুর্নীতি এই দুর্যোগকে আরও তীব্র করে তোলে। আন্তর্জাতিক সাহায্য আসতে দেরি হওয়া এবং প্রশাসনিক অব্যবস্থাপনা পরিস্থিতি আরও জটিল করে। এই দুর্ভিক্ষ শেখ মুজিবের প্রশাসনের প্রতি জনগণের আস্থা কমিয়ে দেয়। দুর্ভিক্ষ পরবর্তী সময়ে দেশে চোরাকারবারি, কালোবাজারি এবং রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা চরম আকার ধারণ করে।
দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতি
শেখ মুজিবের সরকারের মধ্যে দুর্নীতি এবং স্বজনপ্রীতির অভিযোগ ওঠে। তার প্রশাসন ছিল অব্যবস্থাপনার শিকার এবং দলীয়করণ ছিল প্রাধান্য পেয়েছে। দলীয় স্বার্থে প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ পদে নির্দিষ্ট ব্যক্তিদের নিয়োগ দেয়া হয়, যা কার্যকরী সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করে। বিভিন্ন ক্ষেত্রে দুর্নীতির অভিযোগ উঠলেও, তা যথাযথভাবে মোকাবিলা করা হয়নি, যার ফলে জনগণের মধ্যে অসন্তোষ তৈরি হয়।
শেখ মুজিবের হত্যা: ১৯৭৫
রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং প্রশাসনিক ব্যর্থতা শেখ মুজিবের শাসন ব্যবস্থাকে জটিল করে তোলে। আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরে ষড়যন্ত্র এবং অসন্তোষ বাড়তে থাকে। তাজউদ্দীন আহমদসহ মুক্তিযুদ্ধকালীন গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের দূরে সরিয়ে দেওয়া শেখ মুজিবের অন্যতম বড় ভুল ছিল। এর ফলে তিনি তার সবচেয়ে বিশ্বস্ত ও দক্ষ সহযোগীদের সমর্থন হারান।
একই সঙ্গে সেনাবাহিনীর একটি অংশ তার শাসনের প্রতি অসন্তুষ্ট হয়ে পড়ে। তাদের অভিযোগ ছিল, একদলীয় শাসন বাকশাল গঠন এবং ক্রমবর্ধমান দুর্নীতি দেশের অগ্রগতিতে বড় বাধা সৃষ্টি করেছিল। ১৯৭৪ সালের ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ এবং এর প্রতিক্রিয়ায় সরকারের ব্যর্থতা জনমানুষের আস্থা ভেঙে দেয়। সংবাদমাধ্যমের উপর নিয়ন্ত্রণ আরোপ এবং রাজনৈতিক বিরোধীদের দমনে কঠোর নীতি তার জনপ্রিয়তাকে আরও ক্ষতিগ্রস্ত করে।
১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা মূলত সেনাবাহিনীর কিছু উচ্চাভিলাষী কর্মকর্তার মধ্যে গড়ে ওঠে। মেজর সৈয়দ ফারুক রহমান, মেজর বজলুল হুদা এবং মেজর শরিফুল হক ডালিম এই পরিকল্পনার প্রধান সংগঠক ছিলেন। তাদের নেতৃত্বে একটি সশস্ত্র দল রাতের অন্ধকারে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে প্রবেশ করে। শেখ মুজিবের বাসভবনে উপস্থিত সবাইকে হত্যা করা হয়।
এই আক্রমণে শেখ মুজিবের স্ত্রী ফজিলাতুন্নেছা মুজিব, দুই পুত্র শেখ কামাল এবং শেখ জামাল, কনিষ্ঠ পুত্র শেখ রাসেলসহ পরিবারের অনেক সদস্য নিহত হন। নৃশংসতার মাত্রা এমন ছিল যে শিশু শেখ রাসেল পর্যন্ত রক্ষা পাননি। হত্যাকাণ্ডের সময় শেখ মুজিবের দুই কন্যা শেখ হাসিনা এবং শেখ রেহানা বিদেশে থাকায় প্রাণে বেঁচে যান। হত্যাকারীরা শেখ মুজিব এবং তার পরিবারের সদস্যদের হত্যা করে ক্ষমতা দখলের প্রক্রিয়া শুরু করে।
১৫ আগস্ট ১৯৭৫ সালের এই হত্যাকাণ্ড বাংলাদেশের ইতিহাসে গভীর প্রভাব ফেলে। একদিকে এটি একটি রাজনৈতিক যুগের সমাপ্তি ঘটায়, অন্যদিকে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে দীর্ঘমেয়াদি অস্থিরতার বীজ বপন করে। ক্ষমতার পট পরিবর্তনের ফলে বাংলাদেশ সামরিক শাসনের অধীনে প্রবেশ করে। জাতির পিতা হিসেবে শেখ মুজিবের অবদান ম্লান হয়ে যায় এবং তার পরিবারকে নির্মূল করার প্রচেষ্টা বাংলাদেশের রাজনীতিকে একটি বিভক্ত ধারায় নিয়ে যায়।
শেখ মুজিব ছিলেন একদিকে বাংলাদেশের স্বাধীনতার প্রধান স্থপতি, অন্যদিকে তার শাসনকাল প্রশ্নবিদ্ধ অনেক সিদ্ধান্তের জন্য সমালোচিত। তার শাসন গণতান্ত্রিক হতে পারত কি না, দুর্ভিক্ষ এড়ানো সম্ভব ছিল কি না, এবং বিশ্বস্ত নেতাদের দূরে সরিয়ে দেওয়া তার সবচেয়ে বড় ভুল ছিল কি না—এমন বহু প্রশ্ন আজও ঐতিহাসিক গবেষণার বিষয়।
শেখ মুজিবের উত্থান এবং পতন একদিকে একটি জাতির গৌরবগাথা, অন্যদিকে একটি শাসকের ক্ষমতার মোহে পতনের করুণ কাহিনি। ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ড এই দ্বৈত চিত্রকে আরও তীক্ষ্ণ করে তোলে। এটি বাংলাদেশের ইতিহাসের একটি অনন্য এবং মর্মান্তিক অধ্যায়, যা জাতি হিসেবে আমাদের অনেক শিক্ষা দিয়েছে।
সম্পর্কিত আর্টিকেল
কোন আর্টিকেল খুঁজছেন?
আমাদের অনুসরণ করুন
এক নজরে এই আর্টিকেলে যেসব বিষয় আলোচনা করা হয়েছে…
- Early Life of Sheikh Mujibur Rahman
- Political awareness
- Political Affiliation
- Sheikh Mujibur Rahman: The Unstoppable Journey of a Nation’s Hero
- Founding of Awami League
- The Historic 1971 Liberation Movement
- Mujib’s Triumphant Return and the Birth of Bangladesh
- Formation of Bangladesh and Sheikh Mujib
- The assassination of Sheikh Mujibur Rahman
- Legacy of Sheikh Mujib
সাম্প্রতিক আর্টিকেল
কেন ইসরায়েল ইরানে আক্রমণ করেছিল তার প্রকৃত কারণ
কেন ইসরায়েল ইরানে আক্রমণ করেছিল? আন্তর্জাতিক বিচারের হাত থেকে বাঁচতে, গাজার নিপীড়ন থেকে দৃষ্টি সরাতে ও ইহুদি আধিপত্য জাহিরের হতাশাজনক প্রচেষ্টা।
সিরিয়ার ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার যুক্তরাষ্ট্রেরঃ নতুন কূটনৈতিক অধ্যায়ের সূচনা
গত ১৩ মে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সৌদি আরবের রিয়াদে এক বিনিয়োগ সম্মেলনে সিরিয়ার ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করার ঘোষণা দেন।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিত করল নির্বাচন কমিশনঃ রাজনৈতিক প্রভাব ও ভবিষ্যৎ পথ
গত ১২ই মে, ২০২৫ সাবেক শাসক দল আওয়ামী লীগের সব কার্যক্রম নিষিদ্ধ করে সরকারের প্রজ্ঞাপন জারির পর এবার আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিত করল নির্বাচন কমিশন।
পিকেকে-র বিলুপ্তি: তুরস্কের জন্য সুযোগ নাকি কুর্দিদের জন্য নতুন সংকট?
পিকেকে-র বিলুপ্তির ঘোষণা: তুরস্কের সামনে শান্তি প্রতিষ্ঠার সুযোগ, নাকি কুর্দিদের জন্য অধিকার হারানোর নতুন ঝুঁকি?
অপারেশন বুনিয়ান-উন-মারসুসঃ ভারতে পাকিস্তানের পাল্টা হামলা
পাকিস্তান ভারতের বিরুদ্ধে "অপারেশন বুনিয়ান-উন-মারসুস" নামে ব্যাপক পাল্টা হামলা শুরু করে। এই অভিযানের নামটির অর্থ "গলিত সীসায় নির্মিত অভেদ্য প্রাচীর"।