১৯৭০ সালের নির্বাচন ছিল তৎকালীন অবিভক্ত পাকিস্তানের প্রথম ও শেষ সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এই নির্বাচনে শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে। পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠী নির্বাচনের পর শেখ মুজিবের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর না করার ফলে সৃষ্টি হয় তীব্র রাজনৈতিক সংকট, যা পরবর্তীতে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে রূপ নেয়।

১৯৭০ সালের নির্বাচন প্রেক্ষাপট

১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচন ছিল পূর্ব পাকিস্তানের (বর্তমান বাংলাদেশ) জনগণের স্বাধীনতা সংগ্রামের পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। বাঙালি জাতির স্বাধিকার ও অর্থনৈতিক মুক্তির লক্ষ্যকে কেন্দ্র করে প্রণীত ‘ছয় দফা আন্দোলন’ ছিল নির্বাচনের প্রধান ইস্যু। ১৯৬৯ সালের মার্চ মাসে পূর্ব পাকিস্তানে গণআন্দোলনের কারণে আইয়ুব খান ক্ষমতা ছেড়ে দিতে বাধ্য হন। সেনাপ্রধান জেনারেল ইয়াহিয়া খান দায়িত্ব গ্রহণ করে সামরিক শাসন জারি করেন এবং জাতীয় পরিষদের নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেন। ইয়াহিয়া খানের তৎকালীন উপদেষ্টা জি.ডব্লিউ চৌধুরীর মতে, প্রেসিডেন্ট অবাধ নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যাপারে আগ্রহী ছিলেন এবং ক্ষমতা হস্তান্তর প্রক্রিয়া মসৃণ করতে চেয়েছিলেন।

১৯৭০ সালের ৭ই জুন আওয়ামী লীগ আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনী প্রচারাভিযান শুরু করে। স্থানীয় ইস্যুগুলোতে জোর দিয়ে শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ নির্বাচনী প্রচারাভিযানে বিশেষ ভূমিকা রাখেন। নির্বাচনী প্রচারাভিযানের ভাষণ-বক্তৃতাগুলোতে স্থানীয় ইস্যুগুলোর পাশাপাশি ছয়-দফা কর্মসূচীও তুলে ধরা হয়। শেখ মুজিবুর রহমান বলেন, “আমরা যদি সময়ের ডাকে সাড়া দিতে ব্যর্থ হই তাহলে আগামী প্রজন্ম আমাদেরকে দায়ী করবে।” তবে, নির্বাচন পূর্বকালীন জনপ্রিয়তা সত্ত্বেও এক সাক্ষাতকারে তিনি বলেন, নির্বাচনে না জেতার আগ পর্যন্ত তিনি নিজেকে জনগণের প্রতিনিধি হিসেবে ভাবতে পারেন না।

১৯৭০ সালের নির্বাচন

নির্বাচনকালীন প্রচারণায় শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাকে ‘সোনার বাংলা’ গড়ার প্রতিশ্রুতি দেন। ছয়দফা এবং বাঙালি জাতীয়তাবাদের ভিত্তিতে এই ‘সোনার বাংলা’ শ্লোগান পূর্ব পাকিস্তানের সাড়ে সাত কোটি মানুষের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলে।

আওয়ামিলীগ বিরোধী দলগুলো শেখ মুজিবকে ভারতের হিন্দুদের দালাল হিসেবে চিত্রিত করার চেষ্টা করলেও তা কাজে আসেনি। ভারত বিরোধীতার চেয়ে পশ্চিম পাকিস্তান বিরোধিতাই সেসময় প্রবলভাবে কাজ করেছিল।

যদিও শেখ মুজিবুর রহমানের মতে, বাঙালির মুক্তির সনদ ছয় দফার পক্ষে রেফারেন্ডাম বা গণভোট হলো ১৯৭০ সালের নির্বাচন, পাকিস্তানের শাসকরা এই ছয় দফাকে মনে করতেন ‘বিচ্ছিন্নতাবাদের ছদ্ম দলিল’।

তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে প্রভাবশালী নেতা ছিলেন মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী। ১৯৭০ সালের নির্বাচন বর্জনের ডাক দিয়ে নির্বাচন থেকে সরে যান। এ নিয়ে বিতর্ক থাকলেও, ভাসানী যদি নির্বাচনে শেষ পর্যন্ত থাকতেন তাহলে পূর্ব-পাকিস্তানে ভোট ভাগ হয়ে যেত এবং আওয়ামী লীগ হয়তো একচ্ছত্র আধিপত্য পেতো না। শেখ মুজিবুর এককভাবে বেরিয়ে আসতে পারলে স্বাধীনতার প্রশ্নটি সহজ হবে জন্যেই তিনি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা থেকে সরে এসেছিলেন।

১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনের ফলাফল

১৯৭০ সালে পূর্ব পাকিস্তানে এ নির্বাচন বন্যার কারণে কয়েক মাস পিছিয়ে ডিসেম্বর পর্যন্ত গড়ায়। ১৯৭০ সালের ৭ই ডিসেম্বর পাকিস্তানের প্রথম এবং শেষ সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনের সময় সমগ্র পূর্ব পাকিস্তানকে একটি প্রদেশ এবং পশ্চিম পাকিস্তানকে চারটি প্রদেশে ভাগ করা হয়। নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ছাড়াও পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল। পূর্ব পাকিস্তানে আওয়ামী লীগ সব আসনে প্রার্থী দিয়েছিল, অন্য কোনো রাজনৈতিক দল সব আসনে প্রার্থী দিতে পারেনি। শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ এ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে, পূর্ব পাকিস্তানের ১৬৯টি আসনের মধ্যে ১৬২টি আসনে বিজয়ী হয়। পাকিস্তান পিপলস পার্টি মাত্র ১২০ আসনে প্রার্থী দেয় এবং তারা পশ্চিম পাকিস্তানে ৮১ আসনে বিজয়ী হয়।

১৯৭০ সালের নির্বাচন

নির্বাচনে জিতে পূর্ব পাকিস্তানের নেতা হয়ে ওঠেন শেখ মুজিবুর রহমান। আর অন্যদিকে ভুট্টো নিজেকে পশ্চিম পাকিস্তানের নেতা ঘোষণা করেন। তিনি প্রশ্ন তোলেন, একটি প্রদেশে জয়ী হয়ে কিভাবে পুরো পাকিস্তানের শাসনভার শেখ মুজিবের হাতে তুলে দেয়া যায়? শেখ মুজিবর রহমানকে সরকার গঠনের সুযোগ না দিয়ে প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান ১৯৭১ সালের ১লা মার্চ অনির্দিষ্টকালের জন্য জাতীয় পরিষদ অধিবেশন স্থগিত ঘোষণা করেন।

রাজনৈতিক সংকট ও স্বাধীনতা যুদ্ধ

১৯৭০ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিজয়ের পর পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠী শেখ মুজিবুর রহমানের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরে টালবাহানা করে, যার ফলে তীব্র রাজনৈতিক সংকট সৃষ্টি হয়। অনির্দিষ্টকালের জন্য জাতীয় পরিষদ অধিবেশন স্থগিত ঘোষণার প্রতিবাদে শেখ মুজিবের নেতৃত্বে পূর্ব পাকিস্তানে অসহযোগ আন্দোলন শুরু হয়। সংকট তীব্র আকার ধারণ করলে ২৫ শে মার্চ রাতে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী শেখ মুজিবুর রহমানকে গ্রেফতার করে ঢাকায় ‘অপারেশন সার্চলাইট’ নামে বাঙালি জনগণের ওপর বর্বরোচিত গণহত্যা চালায় এবং শুরু হয় বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ।

শেখ মুজিবুর রহমানের আহ্বানে বাঙালি জাতি ঐক্যবদ্ধ হয়ে পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলে। মুক্তিযুদ্ধের সময় দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে স্থানীয় জনগণ ও মুক্তিবাহিনী পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর সাথে সশস্ত্র সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। স্বাধীনতা যুদ্ধে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ব্যাপক হত্যা, ধর্ষণ এবং লুণ্ঠন চালায়।

মুক্তিযুদ্ধে বাঙালি মুক্তিযোদ্ধারা, যারা ছিলেন বেসামরিক নাগরিক এবং প্রশিক্ষিত সৈন্য, তারা পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে গেরিলা যুদ্ধ পরিচালনা করে। মুক্তিযুদ্ধে নারীরাও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। নারীরা মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগিতা করা, গোয়েন্দা তথ্য সরবরাহ করা, এবং চিকিৎসা সেবায় অংশ নেন। ভারত সরকার মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ ও সহায়তা প্রদান করে এবং ১৯৭১ সালের ৩ ডিসেম্বরে যুদ্ধে সরাসরি জড়িয়ে পড়ে। স্বাধীনতা যুদ্ধে ভারতের সহায়তা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর আত্মসমর্পণের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটে।

নবগঠিত বাংলাদেশের চ্যালেঞ্জ

স্বাধীনতার পর শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। স্বাধীনতার পর নবগঠিত বাংলাদেশকে অনেক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয়।

  • অর্থনৈতিক দুর্বলতা দীর্ঘদিনের অবহেলা ও শোষণের ফলে স্বাধীনতার সময় বাংলাদেশের অর্থনীতি ছিল অত্যন্ত দুর্বল। পরিকাঠামো ছিল ধ্বংসস্তূপ, কৃষি উৎপাদন ছিল কম, এবং শিল্প ছিল প্রায় অনুপস্থিত।
  • খাদ্য ঘাটতি যুদ্ধের কারণে কৃষিক্ষেত্র ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল এবং খাদ্য উৎপাদন কমে গিয়েছিল। ফলে দেশে তীব্র খাদ্য ঘাটতি দেখা দেয়।
  • শরণার্থী সংকট মুক্তিযুদ্ধের সময় লক্ষ লক্ষ মানুষ ভারতে পালিয়ে গিয়েছিল। স্বাধীনতার পর তারা দেশে ফিরে আসতে শুরু করে। এই বিপুল সংখ্যক মানুষকে পুনর্বাসন করা একটি বড় চ্যালেঞ্জ ছিল।
  • সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি দীর্ঘদিনের পাকিস্তানি শাসনামলে বাঙালিদের উপর অত্যাচার ও নিপীড়নের ফলে অনেক হিন্দু বাঙালি ভারতে পালিয়ে গিয়েছিলেন। স্বাধীনতার পর তাদের ফিরিয়ে আনা এবং দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখা একটি গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জ ছিল।
  • রাজনৈতিক অস্থিরতা স্বাধীনতার পর বাংলাদেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা দেখা দেয়।

এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় বাংলাদেশ সরকার যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ পুনর্গঠন, অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা আনয়ন, এবং সামাজিক ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠার জন্য নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করে।

স্বাধীনতার ৫০ বছর পরেও ১৯৭০ সালের নির্বাচন ও পরবর্তী ঘটনাপ্রবাহ বাংলাদেশের ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হিসেবে স্থান পেয়েছে। এই নির্বাচনের মাধ্যমে বাঙালি জাতি তাদের অধিকার ও স্বাধীনতার সংগ্রামে একত্রিত হয়ে একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটায়।

আর্টিকেলটি শেয়ার করুন

আন্তর্জাতিক রাজনীতি রাকিবুল ইসলামের বিশেষ আগ্রহের বিষয়। তাঁর লেখালেখির মূল বিষয়বস্তু হলো রাজনীতি, সরকার, এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্ক।

Leave A Comment

সম্পর্কিত আর্টিকেল

কোন আর্টিকেল খুঁজছেন?
আমাদের অনুসরণ করুন

লেখক হিসেবে আমাদের সাথে যোগ দিন

সাম্প্রতিক আর্টিকেল

  • বিবিসির প্রতিবেদনে প্রকাশিত হয়েছে যে, শেখ হাসিনার ফাঁস হওয়া অডিওতে হাসিনা স্বয়ং নিরাপত্তা বাহিনীকে বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে হত্যার নির্দেশ দিয়েছিলেন।

বিবিসির তদন্তে শেখ হাসিনার ফাঁস হওয়া অডিও: ‘যেখানে পাবে সেখানেই গুলি করো’

বিবিসির প্রতিবেদনে প্রমান মিলেছে যে, শেখ হাসিনার ফাঁস হওয়া অডিওতে হাসিনা স্বয়ং নিরাপত্তা বাহিনীকে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনকারীদের হত্যার নির্দেশ দিয়েছিলেন।

  • কেন ইসরায়েল ইরানে আক্রমণ করেছিল? আন্তর্জাতিক বিচারের হাত থেকে বাঁচতে, গাজার নিপীড়ন থেকে দৃষ্টি সরাতে ও ইহুদি আধিপত্য জাহিরের হতাশাজনক প্রচেষ্টা।

কেন ইসরায়েল ইরানে আক্রমণ করেছিল তার প্রকৃত কারণ

কেন ইসরায়েল ইরানে আক্রমণ করেছিল? আন্তর্জাতিক বিচারের হাত থেকে বাঁচতে, গাজার নিপীড়ন থেকে দৃষ্টি সরাতে ও ইহুদি আধিপত্য জাহিরের হতাশাজনক প্রচেষ্টা।

  • গত ১৩ মে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সৌদি আরবের রিয়াদে এক বিনিয়োগ সম্মেলনে সিরিয়ার ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করার ঘোষণা দেন।

সিরিয়ার ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার যুক্তরাষ্ট্রেরঃ নতুন কূটনৈতিক অধ্যায়ের সূচনা

গত ১৩ মে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সৌদি আরবের রিয়াদে এক বিনিয়োগ সম্মেলনে সিরিয়ার ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করার ঘোষণা দেন।

  • গত ১২ই মে, ২০২৫ সাবেক শাসক দল আওয়ামী লীগের সব কার্যক্রম নিষিদ্ধ করে সরকারের প্রজ্ঞাপন জারির পর এবার আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিত করল নির্বাচন কমিশন।

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিত করল নির্বাচন কমিশনঃ রাজনৈতিক প্রভাব ও ভবিষ্যৎ পথ

গত ১২ই মে, ২০২৫ সাবেক শাসক দল আওয়ামী লীগের সব কার্যক্রম নিষিদ্ধ করে সরকারের প্রজ্ঞাপন জারির পর এবার আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিত করল নির্বাচন কমিশন।

  • পিকেকে-র বিলুপ্তির ঘোষণা: তুরস্কের সামনে শান্তি প্রতিষ্ঠার সুযোগ, নাকি কুর্দিদের জন্য অধিকার হারানোর নতুন ঝুঁকি?

পিকেকে-র বিলুপ্তি: তুরস্কের জন্য সুযোগ নাকি কুর্দিদের জন্য নতুন সংকট?

পিকেকে-র বিলুপ্তির ঘোষণা: তুরস্কের সামনে শান্তি প্রতিষ্ঠার সুযোগ, নাকি কুর্দিদের জন্য অধিকার হারানোর নতুন ঝুঁকি?