ইউক্রেন রাশিয়া সংকটের অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ

কয়েক বছর আগেই, ২০১৪ সালে ইউক্রেন আক্রমন করে ক্রিমিয়া দখল করে নেয় রাশিয়া। আবার এই ২০২২ সালে এসেও হম্বিতম্বি করছে ইউক্রেন সীমান্তে দাঁড়িয়ে। আমেরিকা ও ন্যাটোর দাবি বলছে, খুব শীঘ্রই যেকোন দিন রাশিয়া আগেরবারের মত আবারো ইউক্রেন আক্রমন করতে যাচ্ছে।
ইউক্রেন রাশিয়া, রাশিয়া ও ইউক্রেন সংকট, russia thrashed ukraine so badly

কয়েক বছর আগেই, ২০১৪ সালে ইউক্রেন আক্রমন করে ক্রিমিয়া দখল করে নেয় রাশিয়া। আবার এই ২০২২ সালে এসেও হম্বিতম্বি করছে ইউক্রেন সীমান্তে দাঁড়িয়ে। আমেরিকা ও ন্যাটোর দাবি বলছে, খুব শীঘ্রই যেকোন দিন রাশিয়া আগেরবারের মত আবারো ইউক্রেন আক্রমন করতে যাচ্ছে। রাশিয়া এক লাখেরও বেশী সৈন্য জড়ো করেছে ইউক্রেন রাশিয়া সীমান্তে। আমেরিকা ও ন্যাটোও ইতোমধ্যে কয়েক হাজার সৈন্য ইউক্রেনের পাশের ন্যাটোভুক্ত দেশগুলোতে মোতায়েন করেছে এবং যুদ্ধাস্ত্র সরবরাহ করছে ইউক্রেনকে। আমেরিকার গোয়েন্দ তথ্য অনুযায়ী, চীনের শীতকালীন অলিম্পিক শেষ হওয়া পর্যন্ত পুতিন অপেক্ষা করার কথা। এরপরে যেকোন সময়ে ইউক্রেনের ওপর আগ্রাসন শুরু হতে পারে। কিন্তু রাশিয়া বরাবরের মত এই দাবী অস্বীকার করে আসছে খুব বড় গলা করেই যে, এমন কোন পরিকল্পনা রাশিয়ার মাথাতেই নেই।

ইউক্রেন আক্রমনের পরিকল্পনা অস্বীকার করলেও রাশিয়ার কাজ-কর্ম ভিন্ন কথা বলছে। গত বছরের অক্টোবর থেকেই ইউক্রেন সীমান্তে সৈন্য ও যুদ্ধাস্ত্র মজুদ করা শুরু করেছে। এই মুহুর্তে রাশিয়ার কমপক্ষে ১১৫০০০ সৈন্য রাশিয়া-ইউক্রেন সীমান্তে টহল দিচ্ছে। কোন ধরণের দাফতরিক ঘোষণা ছাড়াই রাশিয়া ভারী অস্ত্রশস্ত্র, মিসাইল, চিকিৎসা সংক্রান্ত প্রস্তুতি, হাসপাতাল স্থাপণ করছে ইউক্রেন সীমান্তে। এর পাশাপাশি রাশিয়ার মিত্র বেলারুশের সাথে বেশ ঘটা করেই যৌথ সামরিক অনুশীলনী চালাচ্ছে। আমেরিকার গোয়েন্দা সংস্থার মতে যেকোন দিনই ইউক্রেনের উত্তরে বেলারুশ থেকে ইউক্রেনের ওপর রাশিয়া সামরিক আগ্রাসন শুরু কতে পারে।

ইউক্রেন রাশিয়া, russia thrashed ukraine so badly

সীমান্তে রাশিয়ার উপস্থিতি আর পশ্চিমা বিশ্বের অনবরত প্রোপাগান্ডায় ইউক্রেনবাসী যুদ্ধের সাজে সাজতে বাধ্য হচ্ছে। তারা প্রস্তুতি নিচ্ছে রাশিয়ার সম্ভাব্য আগ্রাসনকে মোকাবেলা করতে। ইউক্রেনের বেশিরভাগ বেসামরিক নাগরিক অস্ত্রের প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন পশ্চিমা রসদ হাতে পেয়ে। যেন প্রত্যেকটা বাড়ি একেকটা দুর্গে আর ভূগর্ভস্থ রেলস্টেশন, টানেলগুলো শেল্টারে পরিণত হয়েছে।

এই অবস্থায় রাশিয়ার সাথে আমেরিকা, ন্যাটো আলোচনায় বসছে, আলোচনা বিফলে যাচ্ছে, ফ্রান্স, জার্মানি এগিয়ে আসছে সমস্যা মিটিয়ে দিতে কিন্তু নিজেই এক পক্ষভুক্ত হওয়ার ফলে মধ্যস্তা করতেও ব্যর্থ হচ্ছে। বহু বছর ধরে এমন জটিল পরিস্থিতির অভিজ্ঞতা বিশ্ববাসীর হয়নি।

ইউক্রেন রাশিয়া সংকটের পটভূমি

ইউক্রেন-রাশিয়ার এই সংকটের গোড়াপত্তন মূলত সোভিয়েত ইউনিয়নের ভাঙন থেকেই। নব্বইয়ের শুরুর দিকে যখন সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে গেল, সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের অংশ ইউক্রেনে বিশ্বের দুই-তৃতীয়াংশ পারমানবিক অস্ত্রেরর মজুদ ছিল। পরবর্তিতে আমেরিকা ও রাশিয়ার যৌথ প্রচেষ্টায় ইউক্রেনকে রাশিয়ার কাছে পারমানবিক অস্ত্রগুলো ফেরত দিতে রাজি করা হয় এই শর্তে যে, রাশিয়া ইউক্রেনকে কখনো আক্রমন করবে না। ইউক্রেন রাশিয়াকে শত শত পারমানবিক অস্ত্র ফেরত দেয়।

২০১৩ সালে যখন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ইউরোপীয় ইউনিয়নের সাথের অর্থনৈতিক সম্পর্ক সংক্রান্ত চুক্তি বাতিল করে দেয় ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে এর তীব্র প্রতিবাদ শুরু হয়। এই প্রতিবাদ দমনে শক্তি প্রয়োগ করলে হিতে বিপরীত হয়ে যায় এবং সেটা সংঘর্ষে পরিণত হয়। প্রেসিডেন্ট ইয়েনুকোভিচ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪ তে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান।

Is the USA a Leading Terrorist State?

মার্চে রাশিয়ার সেনাবাহিনী ইউক্রেনে আগ্রাসন চালিয়ে ক্রিমিয়া দখল করে নেয়। ক্রিমিয়াকে সংযুক্ত করে নিয়ে পুর্বাঞ্চলীয় ডোনবাজ রাজ্যের রাশিয়াপন্থী বিচ্ছিন্নতাবাদী গ্রুপকে সহায়তা করে। পুর্ব ইউক্রেনে রাশিয়াপন্থী বিচ্ছিন্নতাবাদী গ্রুপ ও রাশিয়ার সাথে সেনাবাহিনীর সংঘর্ষে প্রায় সাড়ে দশ হাজার লোক নিহত হয়েছেন এবং চব্বিশ হাজারের মত লোক আহত হয়েছেন।

ইউক্রেনের এই সংকট আন্তর্জাতিক সংকটে রূপ নেয় যখন জুলাই ২০১৪ সালে মালয়েশীয়ার একটি বিমান ভূপাতিত হয়। বিমানের ২৯৮ জন যাত্রীর সকলেই নিহত হন। তদন্তকারীরা ২০১৫ সালে সিদ্ধান্তে আসেন যে, রাশিয়ার তৈরী ভূমি থেকে আকাশে নিক্ষেপযোগ্য মিসাইল দিয়ে ওই বিমান ভূপাতিত করা হয় এবং এরও এক বছর পরে জানা যায় ওই মিসাইল ব্যবস্থা রাশিয়াই সরবরাহ করেছিল।

ইউক্রেন রাশিয়া মিনস্ক চুক্তি

জুলাই থেকে আলোচনা শুরু করে সেপ্টেম্বর, ২০১৪-এ রাশিয়া,ইউরোপের নিরাপত্তা ও সহযোগিতা মূলক সংগঠন, ইউক্রেন ও রাশিয়াপন্থী বিচ্ছিন্নতাবাদীরা বেলারুশের মিনস্কে প্রথম মিনস্ক চুক্তিতে সই করতে সম্মত হন। চুক্তিতে বন্দি বিনিময়, মানবিক সাহায্য এবং ভারী অস্ত্র প্রত্যাহার সহ ১২ টি বিষয়ে তিন পক্ষই সম্মত হয়। কিন্তু মাস পেরোতে না পেরোতেই রাশিয়া ও ইউক্রেন উভয়েই চুক্তি ভঙে প্রতিযোগিতায় নেমে পড়ে।

১ম মিনস্ক চুক্তির ব্যর্থতা পর আবার ফেব্রুয়ায়ীর, ২০১৫ এর শুরু থেকেই ফ্রান্স, জার্মানি, রাশিয়া ও ইউক্রেন মিনস্ক চুক্তি অনুযায়ী সংঘাত কমাতে আলোচনা করেন। প্রথম মিনস্ক চুক্তির ব্যর্থতার পর নতুন করে দ্বিতীয় মিনস্ক চুক্তিতে তারা রাজি হন। এখানে সর্বমোট ১৩ টি বিষয়ে তারা সম্মত হন। চুক্তির বিষয় গুলো হচ্ছেঃ

  • তাৎক্ষণিক অস্ত্রবিরতি;
  • দু পক্ষের ভারী অস্ত্র প্রত্যাহার;
  • ইউরোপীয় নিরাপত্তা ও সহযোগিতা সংস্থা কর্তৃক পর্যবেক্ষণ;
  • ইউক্রেনীয় আইন অনুযায়ী ডোনেটস্ক ও লুহান্সকের অন্তর্বর্তী সরকারের জন্য আলোচনা এবং সংসদ কর্তৃক বিশেষ মর্যাদা স্বীকার করা;
  • যোদ্ধাদের ক্ষমা ঘোষণা করা;
  • জিম্মি ও বন্দি বিনিময়;
  • মানবিক সহায়তা;
  • আর্থসামাজিক সম্পর্ক পুনরুদ্ধার;
  • সীমান্তে ইউক্রেনের নিয়ন্ত্রণ পুনরুদ্ধার;
  • বৈদেশিক সৈন্য, অস্ত্র প্রত্যাহার;
  • ডোনেটস্ক ও লুহানস্কের জন্য বিশেষ বিধান রেখে বিকেন্দ্রিকরণসহ ইউক্রেনের সাংবিধানিক পূণর্বিন্যাস;
  • ডোনেটস্ক ও লুহানস্কে নির্বাচন এবং
  • ত্রিপক্ষীয় চুক্তির পক্ষসমুহের মধ্যে চুক্তি সম্পাদন ত্বরান্বিত করা।

সামরিক ও রাজনৈতিক অমীমাংসিত পদক্ষেপগুলো কি হতে পারে তা দ্বিতীয় মিনস্ক চুক্তি তুলে এনেছে। কিন্তু রাশিয়ার অসহযোগিতা চুক্তি সম্পাদনে বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। রাশিয়ার মতে, মস্কো যেহেতু ওই সংঘাতের কোন পক্ষ নয় সেহেতু এর কোন বিধান মানতে মস্কো বাধ্য নয়। এই চুক্তিকে রাশিয়া দেখছে ডোনবাসে স্বায়ত্বশাসিত সরকার মেনে নিতে ও ইউক্রনের কেন্দ্রীয় সরকারে নিজের প্রতিনিধি বসানোর মাধ্যমে ইউক্রেনের নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ে রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার চুক্তি হিসেবে। তবেই রাশিয়া ইউক্রেনের হাতে ইউক্রেন-রাশিয়া সীমান্তের নিয়ন্ত্রণ তুলে দেবে।

ধাঁধার চুক্তি

আর অন্যদিকে ইউক্রেন এই চুক্তিকে দেখছে বিদ্রোহপূর্ণ অঞ্চলগুলোতে ইউক্রেন নিয়ন্ত্রণের পূনঃ প্রতিষ্ঠা হিসেবে। এর মাধ্যমে রাশিয়া-ইউক্রেন সীমান্তে গোলাগুলি বন্ধ ও সীমান্তের নিয়ন্ত্রণ, ডোনবাসে নির্বাচন এবং বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সীমিত ক্ষমতা হস্তান্তর চাইছে ইউক্রেন।

সোজা কথায় মস্কো ও কিয়েভ ভিন্ন ভিন্ন ভাবে যার যার মতো করে মিনস্ক চুক্তি ব্যাখ্যা করেছে, ফলে চুক্তিটি এক ধাঁধায় পরিণত হয়েছে।

২০১৬’র এপ্রিলে ন্যাটো, পুর্ব ইউরোপের এস্তোনিয়া, লাটভিয়া, লিথুয়ানিয়া এবং পোলান্ডে, সম্ভাব্য রাশিয়ান আগ্রাসন সামলাতে চার ব্যাটালিয়ন সৈন্য পাঠাবে। এদের সাথে যোগ দিতে আমেরিকাও ২০১৭ সালে পোলান্ডে দুই ব্রিগ্রেড ট্যাংক পাঠায়।

Let’s call Israel’s violence what it is: terrorism, not clashes

২০১৪ সালের শুরু থেকেই ইউক্রেন অনেকগুলো সাইবার হামলার শিকার হয়। বেশ কয়েকটি হামলা ইউক্রেনের ইউটিলিটি কোম্পানী ও বিশেষ করে বিদ্যুৎ খাতের কম্পিউটার ব্যবস্থায় করা হয়। ফলে পরপর দুবার ইউক্রেনে ব্লাকআউট হয় যার ভুক্তভোগী হয় লাখো মানুষ। ২০১৭ সালে নোটপেটিয়া ম্যালওয়ারের আক্রমনে বিলিয়ন ডলারের ক্ষতি সাধন হয়।

ইউক্রেনের ন্যাটোভুক্তি

গত ট্রাম্প আমলে আমেরিকা ইউক্রেনকে নিরাপত্তা সহায়তা বৃদ্ধি করে। ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে ইউক্রেন সংঘাতে জড়িত রাশিয়ার ২১ ব্যক্তি ও নয়টি কোম্পানির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে। মার্চে প্রথমবারের মত আমেরিকার স্টেট ডিপার্টমেন্ট এন্টি-ট্যাংক অস্ত্রসামগ্রি ইউক্রেনের কাছে বিক্রির সিদ্ধান্ত অনুমোদন করে। আর একই বছরের অক্টোবরে আমেরিকা ও ন্যাটোভুক্ত সাতটি দেশের সাথে ইউক্রেন বেশ বড় ধরণের সামরিক অনুশীলনে অংশগ্রহণ করে। ন্যাটোভুক্ত দেশোগুলোর সাথে ইউক্রেনের এই সখ্যতা পুতিনের মাথা গরম করে দেয় এবং ইউক্রেনের ন্যাটোভুক্তি বন্ধ করতে পুতিন উঠেপরে লাগে।

আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের মতে, খুব শীঘ্রই ইউক্রেন ন্যাটোয় যোগ না দিলেও যদি ন্যাটোভুক্ত কোন দেশের ওপর হামলা হয়, তাহলে সেটা পুরো ন্যাটো জোটের ওপর হামলা বলে বিবেচিত হবে। আর যদি কথার কথা ধরেও নেয়া হয় যে, ইউক্রেন ন্যাটোভুক্ত দেশ তাহলে ইউক্রেনের ওপর রাশিয়ার হামলা আমেরিকা, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও বাকি ২৭ ন্যাটোভুক্ত দেশ এই যুদ্ধে জড়িয়ে পড়বে।

আরো পড়ুনঃ রাশিয়া কেন ইউক্রেন আক্রমন করল?

আমেরিকার সামরিক ও গোয়েন্দা সহায়তা পাওয়া দেশের তালিকায় ইউক্রেন চতুর্থ বৃহত্তম দেশ। ব্যাপারটা এমন যে, আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে ইউক্রেন প্রায় অনানুষ্ঠানিকভাবে ন্যাটোর সদস্য হয়েই গেছে।  আমেরিকা, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও ন্যাটোর প্রতি ইউক্রেনের এই টানকে কোনভাবেই রাশিয়া বরদাশত করবে না নিজের নিরাপত্তার খাতিরেই। 

গত বছরের শেষের দিক থেকে আমেরিকা রাশিয়ার সাথে সম্পর্কোন্নন করার চেষ্টা বাড়িয়ে দিয়েছে। গত ডিসেম্বরে আমেরিকার হাতে রাশিয়া কতগুলো “আইনত বাধ্যকর নিরাপত্তা সংক্রান্ত নিশ্চয়তা”র তালিকা ধরিয়ে দিয়েছে। এগুলোর মধ্যে ইউক্রেন যেন ন্যাটোয় যোগ দিতে না পারে সেই নিশ্চয়তাও চাওয়া হয়েছে। কিন্তু ন্যাটোতে অন্তর্ভুক্তকরণ সংক্রান্ত রাশিয়ার এমন নিষেধাজ্ঞার দাবীকে আমেরিকা ও ন্যাটো প্রত্যাখান করেছে।

কিন্তু সমস্যাটা অন্য জায়গায়। ন্যাটোভুক্ত প্রত্যেকটি দেশই যদি সর্বসম্মতভাবে ইউক্রেনের অন্তর্ভুক্তি মেনে না নেয় তাহলে ইউক্রেন ন্যাটোতে যোগ দিতে পারবে না। আর বিপদটা এই জায়গাতেই যে, ইউক্রেনের ন্যাটোভুক্তি্র সিদ্ধান্ত অনেক দেশই বিরোধিতা করেছে যে, আইনের শাসন ও গণতন্ত্রের মাপকাঠিতে ইউক্রেন ন্যাটোর মত আঞ্চলিক নিরাপত্তা সংস্থায় যোগ দেয়ার যোগ্যতা নাই। ফলে ইউক্রেন ন্যাটোতেও যোগ দিতে পারছে না।

এই সমস্ত কিছু ইউক্রেনকে একেবারে কোনঠাসা করে রেখেছে এমনভাবে যে, ন্যাটোর সামান্যতম নিরাপত্তা বলয়ে না থেকে একদিকে ন্যাটোভুক্ত হওয়ার জন্য আবেদন করে প্রত্যাখিত হয়ে আছে, আর আরেকদিকে রাশিয়ার মত বিপক্ষ দরজায় কড়া নাড়ছে! উভয় সংকটে ইউক্রেন!

কি ঘটবে যদি রাশিয়া আক্রমন করে?

পুতিন কখনোই সাবেক সোভিয়েত ভুক্ত ইউক্রেনকে রাশিয়ার ঐতিহাসিক অঞ্চলে রাশিয়ার জাতভাইদেরকে রাশিয়ার বিরুদ্ধে ব্যবহার হতে দেবেন না। পুতিন মনে করেন, “ইউক্রেনিয়ান ও রাশিয়ানরা একই মানুষ।” পুতিন যেকোন মূল্যে ন্যাটোতে ইউক্রেনের অংশগ্রহন বন্ধ করতে চাইছেন। তবে যদি যুদ্ধ শুরু হয়ই তাহলে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ভাষায়, “যদি আমেরিকা ও রাশিয়া একে অপরের দিকে গুলি ছোড়ে সেটা হবে বিশ্বযুদ্ধ।” আর যুদ্ধের এমন অবস্থায় জীবন বিপন্ন করে ইউক্রেনে মার্কিন নাগরিকদের উদ্ধারে আমেরিকা কোন সৈন্যও পাঠাবে না। তাই বাইডেন ইতোমধ্যেই সকল মার্কিনীদের ইউক্রেন ছাড়তে বলেছেন সময় থাকতে।

২০১৪ সালে রাশিয়া ইউক্রেনের সাথে গতানুগতিক ধারার বাইরে গিয়ে যুদ্ধে লিপ্ত হয়েছিল। বিশ্ব এক নতুন ধরণের যুদ্ধের স্বাদ পেয়েছে। সে এক বহুমুখী যুদ্ধ যেখানে মিলিশিয়া, সাইবার হামলা, গুজবের মত অস্ত্র ব্যবহার করে বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিয়েছিল রাশিয়া। রাশিয়া তখন থেকেই সাইবার আক্রমন করে, গুজব ছড়িয়ে ইউক্রেনকে অস্থিতিশীল রাখার চেষ্টা করেই যাচ্ছে।

তবে ২০২২ এ এসে মস্কো নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছে ইউক্রেন আর সেই ২০১৪ সালের ইউক্রেন নেই। রাশিয়ার আগ্রাসনের বিরুদ্ধে আমেরিকা, তুরস্ক, অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত ইউক্রেনের সেনাবাহিনী এখন আর সাত বছর আগের মত অত দুর্বল নেই। এত বছর পরে ইউক্রেন আধুনিক অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে বেশ দক্ষও হয়েছে।

এটা স্বাভাবিক যে, মস্কো চাইবে সীমান্ত থেকে সৈন্য না সরিয়েই ইউক্রেনের ওপর সম্ভাব্য সব ধরণের চাপ প্রয়োগ করা। আগেরবারের অভিজ্ঞতায় প্রক্সি যুদ্ধ, গুজব, সাইবার হামলার মত আক্রমন চালিয়ে ইউক্রেনকে নাস্তানাবুদ করতে চাইবে।

What is cultural aggression? How does it threaten world cultural diversity?

তবে ইউক্রেন যুদ্ধ কোন সাধারণ বা প্রচলিত কৌশলে হবে না এটা নিশ্চিত করেই বলা যায়। ইউক্রেনের ওপর আক্রমণ শুধু কিয়েভ, ক্রিমিয়ার পুর্বাঞ্চল থেকেই আক্রমন হবেনা। বরং ইউক্রেনের উত্তরে বেলারুশ, উত্তর-পশ্চিম, দক্ষিণ-পুর্ব থেকেও আক্রমন হতে পারে। এক্ষেত্রে রাশিয়ার জন্য সবচেয়ে কার্যকরী হলো চারদিক থেকে একযোগে ইউক্রেন আক্রমন করা।

এমন সর্বব্যপি, সর্বগ্রাসী যুদ্ধের অভিজ্ঞতা হয়ত ইউরোপের খুব কাছাকাছি সময়ে হয়নি। কিয়েভের অলি-গলিতে, স্থলযুদ্ধ কিংবা আকাশ যুদ্ধ কোনটাই বাদ থাকবে না। মানবিক দুর্গতির অন্ত থাকবেনা। আমেরিকার হিসাব মতে, ৫০০০০-এরও বেশী সাধারণ নাগরিক নিহত হতে পারেন আর ১ থেকে ৫ মিলিয়নের মত শরণার্থীকে সামলাতে হবে ইউরোপকে।

সর্বগ্রাসী এই আগ্রাসনের ক্ষতি রাশিয়াকেও ছাড়বে না। এমন ব্যয়বহুল যুদ্ধের খরচ সামলাতে রাশিয়া হিমশিম খাবে। সর্বগ্রাসী এই যুদ্ধের সিদ্ধান্ত রাশিয়ার জন্য রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও হতাহতের দিক বিবেচনাতেও বড় ঝুঁকির। ইউক্রেনের বিরুদ্ধে আগ্রাসন রাশিয়ার জন্য আত্মঘাতী হয়ে দাঁড়াবে। কারণ, যদি রাশিয়া আগ্রাসন চালায়, তাহলে আমেরিকা-ইউরোপ হাত গুটিয়ে বসে থাকবে না। অবশ্যম্ভাবিভাবেই রাশিয়ার অর্থনীতির ওপর পশ্চিমারা নিষেধাজ্ঞা জারি করবে যেটা হবে রাশিয়ার জন্য বড়সড় একটা চপেটাঘাত।

আমেরিকা ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন উভয়েই রাশিয়ার হাইড্রোকার্বন ও সার কেনা বন্ধ করে দেবে। আর যদি নর্ড ট্রিম ২ গ্যাস পাইপলাইনের ওপর নিষেধাজ্ঞা আসে তাহলে রাশিয়া বৈদেশিক বানিজ্যের দুই তৃতীয়াংশই হারাবে। এর ফাঁকে আমেরিকান কোম্পানিগুলো রাশিয়ার তেল-গ্যাসের বাজার দখল করে বসবে।

যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রীর ভাষায়, রাশিয়া যদি ইউক্রেনে আগ্রাসন চালায় তাহলে, রাশিয়া বড় ধরণের ক্ষয়-ক্ষতি বহন করতে হবে। এরমধ্যেই ইউক্রেনে ২০০০ এন্টি-ট্যাংক মিসাইল পাঠিয়েছে যুক্তরাজ্য। ক্রেমলিনের সাথে সংশ্লিষ্ট অনেক ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান নিষেধাজ্ঞার আওতায় আসবে যদি রাশিয়া আক্রমণ করে।

ন্যাটোর দরজা সবার জন্য খোলা, এই নীতি আসলে কোনভাবে শিথীলযোগ্য নয় বরং আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করতে হবে। রাশিয়ার আপত্তি শুনতে ন্যাটো প্রস্তুত কিন্তু প্রত্যেকেরই ন্যাটোর আওতায় এসে এর আত্মরক্ষা ও প্রতিরোধের অধিকারের নীতিতে ন্যাটো কাউকে ছাড় দেবে না। রাশিয়াকে অনেক হিসেব বুঝেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে কোন পথে হাটবে। আমেরিকা এর মধ্যে আসন্ন যুদ্ধের প্রস্তুতি হিসেবে পোল্যান্ডে আরো কয়েক হাজার সৈন্য জড়ো করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে গত ১১ ফেব্রুয়ায়ী।

শেষ পর্যন্ত কি ঘটবে?

যদিও ২০১৪ সালে খুব সহজেই ক্রিমিয়া দখল করতে পেরেছে কিন্তু এখন ২০২২ এ এসে রাশিয়ার জন্য বেশ কঠিন পরিস্থিতি অপেক্ষা করছে। এই কয়েক বছরে ইউক্রেন বেশ ভালভাবেই পশ্চিমা অস্ত্রেশস্ত্রে সজ্জিত হতে পেরেছে এবং পাশে আমেরিকা ও ন্যাটোর মত মিত্রকে পেয়েছে। আগেরবারের মত অত সহজ নয় এবারের ইউক্রেন অভিযান। রাশিয়া হয়ত ইউক্রেনকে ধরশায়ী করে দেবে কয়েক দিনের মধ্যে কিন্তু শেষ পর্যন্ত ইউক্রেনে নিজের অবস্থান ধরে রাখাটা রাশিয়ার জন্য কঠিন শুধু সামরিক দিক থেকেই নয়, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ভাবেও বেশ কঠিন।

যদি সত্যি সত্যিই বড় ধরণের সংঘাত শুরু হয় তাহলে ইউক্রেনের তিনভাগই আক্রান্ত হবে যেখানে প্রায় ৪৩ মিলিয়ন মানুষের বসবাস। খুব দ্রুত শুরু হয়ে বড় জোর এক মাস ব্যাপি এই যুদ্ধ হয়ে যাবে। কিন্তু ক্ষণস্থায়ী এই যুদ্ধ আগের যেকোন যুদ্ধের ভয়াবহতাকে ছাড়িয়ে যাবে।

পুতিন চায় না ইউক্রেন ন্যাটোতে যোগদিক। সাবেক সোভিয়েতের অংশ যদি ন্যাটোতে যোগ দেয় তাহলে ন্যাটোর সামরিক ও রাজনৈতিক বলয়ের প্রভাব পড়বে রাশিয়ার ওপর। ন্যাটোর সামরিক শক্তিমত্তার মাস্তানিকে কোনভাবেই রাশিয়া মেনে নেবে না। রাশিয়া চাইবে না, এক সময়ের ‘নিজের লোক’ এখন এই সময়ে এসে রাশিয়ার বিরুদ্ধ বলয়ে যোগ দিক। রাশিয়া চাইবে না ইউক্রেনের ভূমি ব্যবহার করে ন্যাটো বা আমেরিকা রাশিয়াকে সামরিক ও রাজনৈতিকভাবে চেপে ধরুক।

ইউক্রেন ন্যাটোতে যোগ দেবে না, এই ‘গ্যারান্টি’ পেলেই  পুতিন ইউক্রেনে আগ্রাসন চালাবে না। রাশিয়াকে আরো কাছাকাছি থেকে চেপে ধরার এই সুযোগ কি আমেরিকা ন্যাটো ছেড়ে দেবে! পশ্চিমারা চাইবেই এই সুযোগে ইউক্রেনকে রাশিয়ার ভয় দেখিয়ে নিজের দলে ভিড়িয়ে নেবার। আমেরিকা ও ন্যাটোর কাজ-কারবার দেখে মনে হচ্ছে ইউক্রেনীয়দের চেয়ে তারাই ইউক্রেনের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত। রাশিয়া কি করছে না করছে, কি করতে না পারে ইউক্রেনের চেয়ে তারাই ভাল খোঁজ রাখছে।

ইউক্রেনকে তারা সব ধরণের বিপদ থেকে উদ্ধারের কথা বলছে। এখন পর্যন্ত তারা ইউক্রেনে সরাসরি সেনাবাহিনী পাঠাতে না পারলেও ইউক্রেনের পাশের দেশগুলোতে সৈন্য জড়ো করে রেখেছে উদ্ভুত পরিস্থিতি মোকাবেলা করার জন্য। তারা অস্ত্রশস্ত্রও পাঠানো শুরু করেছে ইউক্রেনে। ইউক্রনের সেনাবাহিনী এখন আগের যেকোন সময়ের চেয়ে আধুনিক মানসম্পন্ন।

যদিও অনেক দেশই ইউক্রেনকে সাহায্য করতে চাচ্ছে তবু ইউক্রেন ঠিকই জানে বিপদে ইউক্রেন কাউকেই পাশে পাবে না। ইউক্রেনের নিজের লড়াই ইউক্রেনিয়দের নিজেদেরকেই করতে হবে, পশ্চিমারা এসে করবেনা। যুদ্ধের দামামা বাজিয়ে ইউক্রেনে যেভাবে অস্ত্রের বাজার তৈরী করতে চাচ্ছে পশ্চিমারা, সেই সুযোগ চতুরতার সাথে কাজে লাগাচ্ছে ইউক্রেন। পশ্চিমাদের আধুনিক অস্ত্রগুলো বগলদাবা করছে যুদ্ধের দামামা বাজিয়ে।

ইউক্রেন ন্যাটোতে যোগ দিলে শুধু যে ইউক্রেনের লাভ, তা নয়। বরং ইউক্রেনের চেয়ে ন্যাটো ও আমেরিকার স্বার্থ নিশ্চিত হওয়াটাই বড় লাভ। ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়াকে নাস্তানাবুদ করতে পারলে আঞ্চলিক রাজনীতিতে রাশিয়াকে চেপে ধরার সুযোগ আরো বাড়বে। ইউক্রেনকে ব্যবহার করে তখন ন্যাটো ও আমেরিকার বিভিন্ন সামরিক স্থাপনার নাগালের মধ্যে রাশিয়াকে আনা যাবে।

পশ্চিমাদের সাথে সম্পর্কোন্নয়ন ইউক্রেনকে হয়ত সাময়িক স্বস্তি দেবে। কিন্তু দীর্ঘমেয়াদে ইউক্রেনের নিজের সার্বভৌমত্ব পশ্চিমাদের হাতে চলে যাবে। এই সংকটে চতুরতার সাথে পশ্চিমাদের সাথে দরদাম করে বড়জোর অস্ত্রশস্ত্র আদায় করে নিতে পারে কিন্তু, রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করার আগে ইউক্রেনকে দুইবার, তিনবার ভাবতে হবে। রাশিয়ার সাড়াশি আক্রমন ইউক্রেনের কোমড় ভেঙে দেবে, অর্থনৈতিক ভাবে এবং রাজনৈতিক ভাবে।

লেখক

  • রাকিবুল ইসলাম, মেরুনপেপার

    রাকিবুল ইসলাম রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএলবি ও এলএলএম সম্পন্ন করেছেন। রাজনীতি, আইন, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ও ইতিহাস নিয়ে স্পষ্ট ও তথ্যসমৃদ্ধ বিশ্লেষণ তুলে ধরেন। ওয়ার্ডপ্রেসসহ ডিজিটাল প্রকাশনার মাধ্যমে তিনি পাঠককে বিষয়ভিত্তিক আলোচনা তুলে ধরার চেষ্টা করেন।

    শেয়ার করুনঃ
    আরো আর্টিকেল পড়ুন
    মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতি আজ যে উত্তেজনায় ভরা, তার কেন্দ্রবিন্দুতে আছে ফিলিস্তিনি সংকট এবং আব্রাহাম চুক্তি নামের এক পরিবর্তনশীল কূটনৈতিক প্যাকেজ।
    ফিলিস্তিনি সংকট ও আব্রাহাম চুক্তিঃ সমালোচনা, সুফল ও বাস্তবতা

    মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতি আজ যে উত্তেজনায় ভরা, তার কেন্দ্রবিন্দুতে আছে ফিলিস্তিনি সংকট এবং আব্রাহাম চুক্তি নামের এক পরিবর্তনশীল কূটনৈতিক প্যাকেজ।

    পি আর পদ্ধতি কী — ধরন, সুবিধা-অসুবিধা ও বাংলাদেশের নির্বাচনে প্রাসঙ্গিকতা (1)
    পি আর পদ্ধতি কী — ধরন, সুবিধা-অসুবিধা ও বাংলাদেশের নির্বাচনে প্রাসঙ্গিকতা

    পি আর পদ্ধতি হলো আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বমূলক নির্বাচন ব্যবস্থা। পি আর পদ্ধতির ধরন, সুবিধা, অসুবিধা বিবেচনায় বাংলাদেশে পি আর পদ্ধতি প্রাসঙ্গিক কি না প্রশ্ন উঠেছে।

    বিশ্বের প্রথম লিখিত সংবিধানগুলোর অন্যতম মদিনা সনদ ইসলামি রাষ্ট্র, ধর্মীয় স্বাধীনতা ও সামাজিক সম্প্রীতির অনন্য ঐতিহাসিক দলিল। 
    মদিনা সনদ কীঃ মদিনা সনদের প্রধান ধারা ও বিশ্ব ইতিহাসে এর গুরুত্ব বিশ্লেষণ

    বিশ্বের প্রথম লিখিত সংবিধানগুলোর অন্যতম মদিনা সনদ ইসলামি রাষ্ট্র, ধর্মীয় স্বাধীনতা ও সামাজিক সম্প্রীতির অনন্য ঐতিহাসিক দলিল। 

    বিবিসির প্রতিবেদনে প্রকাশিত হয়েছে যে, শেখ হাসিনার ফাঁস হওয়া অডিওতে হাসিনা স্বয়ং নিরাপত্তা বাহিনীকে বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে হত্যার নির্দেশ দিয়েছিলেন।
    বিবিসির তদন্তে শেখ হাসিনার ফাঁস হওয়া অডিও: ‘যেখানে পাবে সেখানেই গুলি করো’

    বিবিসির প্রতিবেদনে প্রমান মিলেছে যে, শেখ হাসিনার ফাঁস হওয়া অডিওতে হাসিনা স্বয়ং নিরাপত্তা বাহিনীকে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনকারীদের হত্যার নির্দেশ দিয়েছিলেন।

    কেন ইসরায়েল ইরানে আক্রমণ করেছিল? আন্তর্জাতিক বিচারের হাত থেকে বাঁচতে, গাজার নিপীড়ন থেকে দৃষ্টি সরাতে ও ইহুদি আধিপত্য জাহিরের হতাশাজনক প্রচেষ্টা।
    কেন ইসরায়েল ইরানে আক্রমণ করেছিল তার প্রকৃত কারণ

    কেন ইসরায়েল ইরানে আক্রমণ করেছিল? আন্তর্জাতিক বিচারের হাত থেকে বাঁচতে, গাজার নিপীড়ন থেকে দৃষ্টি সরাতে ও ইহুদি আধিপত্য জাহিরের হতাশাজনক প্রচেষ্টা।

    গত ১৩ মে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সৌদি আরবের রিয়াদে এক বিনিয়োগ সম্মেলনে সিরিয়ার ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করার ঘোষণা দেন।
    সিরিয়ার ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার যুক্তরাষ্ট্রেরঃ নতুন কূটনৈতিক অধ্যায়ের সূচনা

    গত ১৩ মে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সৌদি আরবের রিয়াদে এক বিনিয়োগ সম্মেলনে সিরিয়ার ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করার ঘোষণা দেন।

    গত ১২ই মে, ২০২৫ সাবেক শাসক দল আওয়ামী লীগের সব কার্যক্রম নিষিদ্ধ করে সরকারের প্রজ্ঞাপন জারির পর এবার আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিত করল নির্বাচন কমিশন।
    বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিত করল নির্বাচন কমিশনঃ রাজনৈতিক প্রভাব ও ভবিষ্যৎ পথ

    গত ১২ই মে, ২০২৫ সাবেক শাসক দল আওয়ামী লীগের সব কার্যক্রম নিষিদ্ধ করে সরকারের প্রজ্ঞাপন জারির পর এবার আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিত করল নির্বাচন কমিশন।

    আজ ১০ মে, পাকিস্তান সেনাবাহিনী ভারতের বিরুদ্ধে "অপারেশন বুনিয়ান-উন-মারসুস" নামে ব্যাপক পাল্টা হামলা শুরু করে। এই অভিযানের নামটি কোরআনের সূরা আস-সাফের ৪ নম্বর আয়াত থেকে নেওয়া হয়েছে, যার অর্থ "গলিত সীসায় নির্মিত অভেদ্য প্রাচীর"। গত ৬ মে’র ভারতের "অপারেশন সিঁদুর"-এর জবাবে পাকিস্তান এই পাল্টা হামলা চালিয়েছে। যদিও এখন পর্যন্ত ক্ষয়ক্ষতির পরিমান ভারত প্রকাশ করেনি, পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর দাবি, এই অভিযানে জম্মু-কাশ্মীর, পাঞ্জাব, ও রাজস্থানের একাধিক সামরিক টার্গেটে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়েছে, যার মধ্যে ব্রাহ্মোস মিসাইল ডিপো এবং এস-৪০০ এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম অন্তর্ভুক্ত।
    অপারেশন বুনিয়ান-উন-মারসুসঃ ভারতে পাকিস্তানের পাল্টা হামলা

    পাকিস্তান ভারতের বিরুদ্ধে “অপারেশন বুনিয়ান-উন-মারসুস” নামে ব্যাপক পাল্টা হামলা শুরু করে। এই অভিযানের নামটির অর্থ “গলিত সীসায় নির্মিত অভেদ্য প্রাচীর”।

    এই আর্টিকেলগুলিও আপনি পড়তে পারেন

    মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতি আজ যে উত্তেজনায় ভরা, তার কেন্দ্রবিন্দুতে আছে ফিলিস্তিনি সংকট এবং আব্রাহাম চুক্তি নামের এক পরিবর্তনশীল কূটনৈতিক প্যাকেজ।

    ফিলিস্তিনি সংকট ও আব্রাহাম চুক্তিঃ সমালোচনা, সুফল ও বাস্তবতা

    মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতি আজ যে উত্তেজনায় ভরা, তার কেন্দ্রবিন্দুতে আছে ফিলিস্তিনি সংকট এবং আব্রাহাম চুক্তি নামের এক পরিবর্তনশীল কূটনৈতিক প্যাকেজ।

    পি আর পদ্ধতি কী — ধরন, সুবিধা-অসুবিধা ও বাংলাদেশের নির্বাচনে প্রাসঙ্গিকতা (1)

    পি আর পদ্ধতি কী — ধরন, সুবিধা-অসুবিধা ও বাংলাদেশের নির্বাচনে প্রাসঙ্গিকতা

    পি আর পদ্ধতি হলো আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বমূলক নির্বাচন ব্যবস্থা। পি আর পদ্ধতির ধরন, সুবিধা, অসুবিধা বিবেচনায় বাংলাদেশে পি আর পদ্ধতি প্রাসঙ্গিক কি না প্রশ্ন উঠেছে।

    বিশ্বের প্রথম লিখিত সংবিধানগুলোর অন্যতম মদিনা সনদ ইসলামি রাষ্ট্র, ধর্মীয় স্বাধীনতা ও সামাজিক সম্প্রীতির অনন্য ঐতিহাসিক দলিল। 

    মদিনা সনদ কীঃ মদিনা সনদের প্রধান ধারা ও বিশ্ব ইতিহাসে এর গুরুত্ব বিশ্লেষণ

    বিশ্বের প্রথম লিখিত সংবিধানগুলোর অন্যতম মদিনা সনদ ইসলামি রাষ্ট্র, ধর্মীয় স্বাধীনতা ও সামাজিক সম্প্রীতির অনন্য ঐতিহাসিক দলিল। 

    জুলাই অভ্যুত্থানের ইতিহাস

    জুলাই অভ্যুত্থানের ইতিহাস

    ইতিহাসের পাতায় যেসব মুহূর্ত স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে, তার মধ্যে বাংলাদেশের জুলাই অভ্যুত্থানের ইতিহাস অন্যতম।

    নিয়মিত আর্টিকেল পেতে

    সাবস্ক্রাইব করুন

    Scroll to Top
    ×