মার্শাল পরিকল্পনা কি? মার্শাল পরিকল্পনার বাস্তবায়ন ও প্রভাব

মার্শাল পরিকল্পনা ছিল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধোত্তর ইউরোপের অর্থনৈতিক পুনর্গঠনের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি আর্থিক সহায়তা কর্মসূচি।
মার্শাল পরিকল্পনা, মেরুনপেপার, marshall plan,

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ইউরোপভিত্তিক রাষ্ট্রগুলোর পারস্পরিক বিভিষীকাময় তান্ডবলীলায় গোট ইউরোপ ধ্বংসস্তুপের নিচে চাপা পড়ে। গোটা  ইউরোপের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক পরিস্থিতি অত্যন্ত বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। এই ধ্বংসলীলার ফলে সৃষ্ট বৈশ্বিক মোড়লশূণ্যতা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে বিশ্বের সামনে মাথা চাড়া দেয়ার সুযোগ করে দেয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অব্যবহিত পরে বিশ্বের অন্যতম প্রধান শক্তি হিসেবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আবির্ভূত হয়।  দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের তান্ডবলীলায় বিধ্বস্ত পশ্চিম ইউরোপে অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সংকটের অবসানের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র পদক্ষেপ গ্রহণ করে। এই অর্থনৈতিক সহযোগিতাই মার্শাল পরিকল্পনা নামে অভিহিত। এই নিবন্ধে মার্শাল পরিকল্পনা সম্বন্ধে বিস্তারিত আলোচনা করব।

 মার্শাল পরিকল্পনার পটভূমি

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক পরিস্থিতি ছিল অত্যন্ত বিপর্যস্ত। যুদ্ধের কারণে ইউরোপের বেশিরভাগ দেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। গোটা পশ্চিম ইউরোপে এক অভূতপূর্ব অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সংকটের সৃষ্টি হয়েছিল।  ব্রিটেন, ফ্রান্সসহ প্রভৃতি দেশে উৎপাদন কমে আসে, শিল্পায়ন ব্যাহত হয়, যোগাযোগ ব্যবস্থা ধ্বংস হয়, এবং বেকারত্ব ব্যাপক আকার ধারণ করে অর্থনৈতিক জীবনের চরম দুরবস্থা নেমে আসে।। ১৯৪৬-৪৭ সালের বিপর্যয়কর  শীতে ইউরোপে কয়লা উৎপাদনকে একেবারে বন্ধ হয়ে আসে। ১৯৪৭ সালের ফেব্রুয়ারি নাগাদ বৃটেনের প্রায় অর্ধেক কলকারখানা বন্ধ হয়ে যায়। এর ফলে ইউরোপে রাজনৈতিক অস্থিরতা দেখা দেয় এবং কমিউনিস্ট আন্দোলন শক্তিশালী হতে থাকে।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের একমাত্র প্রভাবশালী শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হয়। বিশ্বের প্রত্যেকটি অঞ্চলে তাদের সাম্রাজ্যবাদী পররাষ্ট্রনীতি বাস্তবায়নে ছড়িয়ে পড়ে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক স্বার্থের জন্য ইউরোপ একটি গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল অনেক আগে থেকেই। ইউরোপের পুঁজিবাদী দেশগুলোর নেতৃত্ব দিয়ে আসছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। আর এসব রাষ্ট্রে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নিজের স্বার্থ রক্ষার জন্য সর্বদাই তৎপর ছিল। 

সাম্রাজ্যবাদ কি? মধ্যপ্রাচ্যে জার্মান সাম্রাজ্যবাদের প্রকৃতি ও ইউরোপের অন্যান্য সাম্রাজ্যবাদীদের প্রতিক্রিয়া

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ইউরোপের এই বিপর্যয় ছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জন্য একটি বড় হুমকি। ইউরোপের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক অস্থিরতা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকিস্বরূপ। কারণ, ইউরোপের অর্থনৈতিক অস্থিরতা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শুধু বাণিজ্যিক স্বার্থকেই ক্ষতিগ্রস্ত করে তা নয়। বরং ওই অঞ্চলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক স্বার্থকেও হুমকিতে ফেলে। 

অন্যদিকে, ইউরোপে কমিউনিস্ট আন্দোলনের বিস্তার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পুঁজিবাদী ব্যবস্থার জন্য হুমকিস্বরূপ।যদি পরিস্থিতি উন্নতি না করা যায় তাহলে প্রতিদন্দ্বী কমিউনিস্ট ভাবধারার প্রসার প্রতিরোধ অসম্ভব হয়ে পড়বে এবং গোটা অঞ্চল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হাতছাড়া হয়ে যাবে। এ অবস্থায় মার্কিন সরকারের পররাষ্ট্র সচিব জর্জি মার্শাল হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় এক ভাষণের ইউরোপে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক স্বার্থের ভিত্তিতে এ পরিকল্পনার কথা ঘোষণা।

মার্শাল পরিকল্পনা কি?

মার্শাল পরিকল্পনা ছিল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধোত্তর ইউরোপের অর্থনৈতিক পুনর্গঠনের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি আর্থিক সহায়তা কর্মসূচি। ইংরেজিতে মার্শাল পরিকল্পনার দাফতরিক নাম হলো European Recovery Program (ERP)। ১৯৪৭ সালের ৫ জুন মার্কিন রাষ্ট্রসচিব জর্জ সি. মার্শাল হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রদত্ত একটি ভাষণে ইউরোপের অর্থনৈতিক পুনরুজ্জীবন বা পুনরুদ্ধার সম্পর্কে এক নতুন পরিকল্পনা ঘোষণা করেন। এই ঘোষণাকে মার্শাল পরিকল্পনা নামে অভিহিত করা হয়।

মার্শাল পরিকল্পনা,
On the steps of Widener Library in 1947, front row, from left: Laird Bell, Class of 1904; Massachusetts Gov. Robert F. Bradford ’23; R. Keith Kane ’22; Harvard President James B. Conant; and honorary degree recipients George C. Marshall, Gen. Omar N. Bradley, and Sen. James W. Wadsworth. ©The Harvard Gazette

যদিও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দাবি অনুযায়ী, মার্শাল পরিকল্পনা কোন বিশেষ দেশ বা মতাদর্শের বিরুদ্ধে নয় বরং ইউরোপে স্বাধীন দেশগুলোতে ক্ষুধা, দারিদ্র, হতাশা ও বিশৃঙ্খলার বিরুদ্ধে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক পরিস্থিতি স্থিতিশীল করার জন্য ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবে। তবে, মার্শাল পরিকল্পনার প্রধান উদ্দেশ্য ছিল ইউরোপে সোভিয়েত কমিউনিজমের প্রভাব বিস্তার রোধ করতে ইউরোপের অর্থনীতিকে পুনর্গঠন করার মাধ্যমে ইউরোপকে আয়ত্তে নিয়ে আসা এবং ইউরোপে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান পাকাপোক্ত করা। বাণিজ্যিক প্রতিবন্ধকতা দূর করা, শিল্প প্রযুক্তির উন্নতি সাধন করার মাধ্যমে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের বাজার অর্থনীতিকে একটি একক অর্থনৈতিক ব্যবস্থার অধীনে আনার লক্ষ্যে মার্শাল পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ করে। 

মার্শাল পরিকল্পনার অধীনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ১৯৪৮ থেকে ১৯৫২ সাল পর্যন্ত পশ্চিম ইউরোপের ১৬টি দেশকে মোট ১৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের অর্থ সহায়তা প্রদান করে। মার্শাল পরিকল্পনার ফলে পশ্চিম ইউরোপের অর্থনীতি পুনর্গঠিত হয় এবং ইউরোপে সোভিয়েত কমিউনিজমের বিস্তার রোধ হয়। এই পরিকল্পনার ফলে পশ্চিম ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে আন্তঃসম্পর্ক বৃদ্ধি পায় এবং ইউরোপীয় পুঁজিবাদী ব্যবস্থার শক্তি বৃদ্ধি পায়।

মার্শাল পরিকল্পনার বাস্তবায়ন

মার্শাল পরিকল্পনার বাস্তবায়নের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র পশ্চিম ইউরোপের ১৬টি দেশ নিয়ে একটি আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থাটি গঠন করে। এই সংস্থার নাম দেওয়া হয় ইউরোপীয় অর্থনৈতিক সহযোগিতা সংস্থা বা Organisation for European Economic Co-operation (OEEC)। ইউরোপীয় অর্থনৈতিক সহযোগিতা সংস্থার কাজ ছিল পশ্চিম ইউরোপীয় দেশগুলোর কাছ থেকে অর্থনৈতিক পুনর্গঠনের পরিকল্পনা গ্রহণ করা এবং এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ সহায়তা প্রদান করা। 

ভার্সাই চুক্তি ও এর সংক্ষিপ্ত বিবরণঃ ভার্সাই চুক্তিতে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের বীজ নিহিত ছিল কি?

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেস ১৯৪৮ সালের ১২ ডিসেম্বর মার্শাল পরিকল্পনা আইন পাস করে। এই আইনের অধীনে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ১৬টি পশ্চিম ইউরোপীয় দেশকে চার বছরের জন্য মোট ১৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের অর্থ সহায়তা প্রদানের সিদ্ধান্ত নেয়। এই অর্থের মধ্যে ১১ বিলিয়ন ডলার ইউরোপীয় দেশগুলোকে ঋণ হিসেবে দেওয়া হয় এবং ২ বিলিয়ন ডলার অনুদান হিসেবে দেওয়া হয়। ১৯৪৮ থেকে ১৯৫২ সাল পর্যন্ত চার বছর মেয়াদি এই কর্মসূচির মোট পরিমানের ২৬ শতাংশ বা ৩.২ বিলিয়ন ডলার অর্থ পায় ব্রিটেন। অন্যদিকে এই কর্মসূচির ফ্রান্স পায়  ২.৭ বিলিয়ন ইতালি পায়  ১.৫ বিলিয়ন এবং জার্মানি পায় ১.৪ বিলিয়ন ডলার সহায়তা। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের মতে, ১৬ টি দেশ মার্শাল প্ল্যান সহায়তা পেয়েছে। এই দেশগুলি হল অস্ট্রিয়া, বেলজিয়াম, ডেনমার্ক, ফ্রান্স, গ্রীস, আইসল্যান্ড, আয়ারল্যান্ড, ইতালি, লুক্সেমবার্গ, নেদারল্যান্ডস, নরওয়ে, পর্তুগাল, সুইডেন, তুরস্ক, যুক্তরাজ্য এবং পশ্চিম জার্মানি। 

সোভিয়েত প্রতিক্রিয়া

মূলতঃ মার্শাল পরিকল্পনা ছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ট্রুম্যান নীতির অর্থনৈতিক সম্প্রসারণ মাত্র। আর এটা সোভিয়েত ইউনিয়ন খুব ভালভাবেই বুঝতে পেরেছিল। সোভিয়েত ইউনিয়ন মনে করত যে, এই পরিকল্পনাটি ছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দ্বারা ইউরোপে সাম্রাজ্যবাদী প্রভাব বিস্তারের একটি প্রচেষ্টা। সোভিয়েত ইউনিয়নের মতে, এই পরিকল্পনার উদ্দেশ্য ছিল পশ্চিম ইউরোপকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবের অধীনে আনা এবং পশ্চিম ইউরোপে সোভিয়েত কমিউনিজমের বিস্তার রোধ করার জন্য একটি হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হবে।

সোভিয়েত ইউনিয়ন মার্শাল পরিকল্পনার প্রতিক্রিয়ায় এই পরিকল্পনায় সমাজতান্ত্রিক দেশগুলোকে  অংশগ্রহণ নিষিদ্ধ করে। সোভিয়েত ইউনিয়নের এই পদক্ষেপের ফলে মার্শাল পরিকল্পনা কেবল পশ্চিম ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে সীমাবদ্ধ হয়ে যায়। সোভিয়েত ইউনিয়নের চাপে, পোল্যান্ড, চেকোস্লোভাকিয়া, হাঙ্গেরি, রোমানিয়া, এবং পূর্ব জার্মানি মার্শাল পরিকল্পনা থেকে প্রত্যাহার করে নেয়। মার্শাল পরিকল্পনার বিকল্প হিসেবে ১৯৪৯ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন ও সমমনা দেশগুলোর মধ্যে অর্থনৈতিক সহযোগিতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে কোমেকন বা Council for Mutual Economic Assistance নামে একটি অর্থনৈতিক সহযোগিতা সংস্থা গঠন করে। এবং পরবর্তিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন ন্যাটো গঠনের প্রতিক্রিয়ায় ১৯৫৫ সালে ওয়ার্শ প্যাক্টের অধীনে সোভিয়েত ইউনিয়ন একটি সামরিক জোটও গঠন করে। মার্শাল পরিকল্পনা থেকে বেরিয়ে আসা সোভিয়েতপন্থী দেশগুলো কোমেকন এবং ওয়ার্শ জোটে যোগদান করে। 

মার্শাল পরিকল্পনার প্রভাব বা ফলাফল

মার্শাল পরিকল্পনার প্রভাব ছিল ব্যাপক ও দীর্ঘস্থায়ী। এই পরিকল্পনার ফলে পশ্চিম ইউরোপের অর্থনীতি ও রাজনীতিতে ব্যাপক পরিবর্তন আসে এবং ইউরোপের ভবিষ্যৎ নির্ধারিত হয়। মার্শাল পরিকল্পনার প্রভাব তিনটি ভিন্ন ভিন্ন মাপকাঠিতে আলোচনা করা যায় যথাঃ অর্থনৈতিক প্রভাব, রাজনৈতিক প্রভাব ও সাংস্কৃতিক প্রভাব। নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হলোঃ

মার্শাল পরিকল্পনার অর্থনৈতিক অর্জন বা প্রভাবগুলিকে নিম্নলিখিতভাবে আলোচনা করা যেতে পারে:

  • উৎপাদন ও উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি: মার্শাল পরিকল্পনার ফলে পশ্চিম ইউরোপের দেশগুলোর উৎপাদন ও উৎপাদনশীলতা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পায়। উদাহরণস্বরূপ, পশ্চিম ইউরোপের দেশগুলোর মোট উৎপাদন ১৯৪৭ থেকে ১৯৫২ সালের মধ্যে প্রায় দ্বিগুণ হয়েছিল। এই বৃদ্ধির ফলে পশ্চিম ইউরোপের দেশগুলোর অর্থনীতিতে স্বস্তি আসে, বেকারত্ব হ্রাস পায়, এবং জীবনযাত্রার মান উন্নত হয়।
  • বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধি: মার্শাল পরিকল্পনার ফলে পশ্চিম ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধি পায়। এ সময় মার্কিন উদ্যোগে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সাধনের জন্য শুল্ক ও বাণিজ্য সংক্রান্ত একটি সংস্থা ‘জেনারেল এগ্রিমেন্ট এন্ড ট্রেড’ গঠিত হয়।  এই সংস্থার উদ্যোগে বাণিজ্য সংক্রান্ত বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা  শিথিল করা হয় এবং এর ফলে ১৯৪৮ সাল থেকে বার্ষিক শতকরা সাত ভাগ হারে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের প্রসার ঘটে। উদাহরণস্বরূপ, পশ্চিম ইউরোপের দেশগুলোর বাণিজ্য ১৯৪৭ থেকে ১৯৫২ সালের মধ্যে প্রায় ৬০% বৃদ্ধি পেয়েছিল। এই বৃদ্ধির ফলে পশ্চিম ইউরোপের দেশগুলোর অর্থনীতিতে গতিশীলতা আসে, এবং তারা বিশ্ব অর্থনীতিতে আরও বেশি অংশগ্রহণ করতে সক্ষম হয়।
  • শিল্প ও কৃষি উন্নয়ন: মার্শাল পরিকল্পনার ফলে পশ্চিম ইউরোপের দেশগুলোর শিল্প ও কৃষি উন্নয়ন ঘটে। উদাহরণস্বরূপ, পশ্চিম ইউরোপের দেশগুলোর শিল্প উৎপাদন ১৯৪৭ থেকে ১৯৫২ সালের মধ্যে প্রায় ৭০% বৃদ্ধি পেয়েছিল। এই বৃদ্ধির ফলে পশ্চিম ইউরোপের দেশগুলো আধুনিক শিল্পোন্নত দেশ হিসেবে আবির্ভূত হয়।
  • পরিবহন ও যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন: মার্শাল পরিকল্পনার অধীনে পশ্চিম ইউরোপের দেশগুলোর পরিবহন ও যোগাযোগ ব্যবস্থার ব্যাপক উন্নয়ন হয়। এই উন্নয়নের ফলে পশ্চিম ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে বাণিজ্য ও যোগাযোগ বৃদ্ধি পায়।
  • বিদ্যুৎ উৎপাদন ও সরবরাহ ব্যবস্থার উন্নয়ন: মার্শাল পরিকল্পনার অধীনে পশ্চিম ইউরোপের দেশগুলোর বিদ্যুৎ উৎপাদন ও সরবরাহ ব্যবস্থার ব্যাপক উন্নয়ন হয়। এই উন্নয়নের ফলে পশ্চিম ইউরোপের দেশগুলোর শিল্প ও কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।
  • শিল্প ও কৃষি উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির জন্য প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রদান: মার্শাল পরিকল্পনার অধীনে পশ্চিম ইউরোপের দেশগুলোকে শিল্প ও কৃষি উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির জন্য প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রদান করা হয়। এই সহায়তার ফলে পশ্চিম ইউরোপের দেশগুলোর শিল্প ও কৃষি উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি পায়।

মার্শাল পরিকল্পনার ফলে পশ্চিম ইউরোপীয় দেশগুলোর বাণিজ্যিক ঘাটতির পরিমাণ ১২.১২ বিলিয়ন ডলার থেকে দুই বিলিয়ন ডলার নেমে আসে। এছাড়া ইউরোপের শিল্প খাতে স্থিতিশীলতা ফিরে আসে বিধ্বস্ত শহরগুলির পুনঃনির্মাণ কর্মসূচি শুরু হয়। পরিকল্পনা অনুসারে সাহায্যপ্রাপ্ত দেশগুলোর আমদানি দুই-তৃতীয়াংশ ভাগ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে এসেছিল এবং এর ফলে মার্কিন অর্থনীতির বিকাশ সাধিত হয়। 

স্নায়ু যুদ্ধ কাকে বলে? স্নায়ু যুদ্ধের উদ্ভব, বিকাশ ও বর্তমান অবস্থা

মার্শাল পরিকল্পনার রাজনৈতিক প্রভাবগুলি নিম্নরূপ:

  • পশ্চিম ইউরোপের ঐক্যবদ্ধতা বৃদ্ধিঃ মার্শাল পরিকল্পনার অর্থনৈতিক সহায়তার ফলে পশ্চিম ইউরোপের দেশগুলোর অর্থনীতি পুনরুদ্ধার শুরু হয়। এই পুনরুদ্ধারের ফলে পশ্চিম ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে বাণিজ্য,  বিনিয়োগ, যোগাযোগ, এবং সহযোগিতা বৃদ্ধি পায়। বৃদ্ধি পায়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক সহায়তার শর্ত অনুসারে পশ্চিম ইউরোপের দেশগুলোকে একটি সমন্বিত অর্থনৈতিক পরিকল্পনা প্রণয়ন করতে হয়েছিল। এই পরিকল্পনার ফলে পশ্চিম ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সহযোগিতা বৃদ্ধি পায়। এই সহযোগিতার ফলাফল স্বরূপ ১৯৫৭ সালে পশ্চিম ইউরোপের ছয়টি দেশ মিলে ইউরোপীয় অর্থনৈতিক সম্প্রদায় (ইইসি) গঠন করে। পরবর্তিতে তারা ১৯৯৩ সালে ইইসি ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) হিসেবে পুনর্গঠিত হয়।
  • স্নায়ু যুদ্ধের সূচনাঃ মার্শাল পরিকল্পনা সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রতিনিধিত্বমূলক কমিউনিস্ট পার্টিগুলির মধ্যে ক্ষোভ ও সন্দেহের সৃষ্টি করে। এই সন্দেহের ফলে ইউরোপ দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে যায়। মার্শাল পরিকল্পনার ফলে সোভিয়েত ইউনিয়ন পশ্চিম ইউরোপের দেশগুলোকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব থেকে রক্ষা করার জন্য পদক্ষেপ নেয়। এই পদক্ষেপের মধ্যে ছিল পূর্ব ইউরোপের দেশগুলোকে কমিউনিস্ট ব্লক হিসেবে সংগঠিত করা। এই সংগঠনের মাধ্যমে সোভিয়েত ইউনিয়ন পূর্ব ইউরোপের দেশগুলোর উপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে। সোভিয়েতপন্থিদের সম্ভাব্য হুমকি বিবেচনা করে ১৯৪৯ সালে পশ্চিম ইউরোপের দেশগুলো মিলে ন্যাটো সামরিক জোট গঠন করে। ন্যাটোকে মোকাবিলা করতে ১৯৫৫ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন মিলে ওয়ার্সা চুক্তি সামরিক জোট গঠন করে।

What is cultural aggression? How does it threaten world cultural diversity?

মার্শাল পরিকল্পনার সাংস্কৃতিক প্রভাবগুলি নিম্নরূপ:

  • পশ্চিম ইউরোপীয় সংস্কৃতির আমেরিকানায়নঃ মার্শাল পরিকল্পনার অর্থনৈতিক সহায়তার ফলে পশ্চিম ইউরোপের দেশগুলোর অর্থনীতি পুনরুদ্ধার শুরু হয়। এই পুনরুদ্ধারের ফলে পশ্চিম ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে আমেরিকান পণ্য ও সংস্কৃতির আমদানি বৃদ্ধি পায়। এই আমদানির ফলে পশ্চিম ইউরোপের দেশগুলোতে আমেরিকান সংস্কৃতির প্রভাব বৃদ্ধি পায়। মার্শাল পরিকল্পনার ফলে পশ্চিম ইউরোপের দেশগুলোতে আমেরিকান সঙ্গীত, চলচ্চিত্র, এবং টেলিভিশনের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পায়। 
  • ইউরোপীয় সংস্কৃতির আন্তঃসম্পর্ক বৃদ্ধিঃ মার্শাল পরিকল্পনার ফলে পশ্চিম ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে বাণিজ্য, যোগাযোগ, এবং সহযোগিতা বৃদ্ধি পায়। এই বৃদ্ধির ফলে ইউরোপীয় সংস্কৃতির মধ্যে আন্তঃসম্পর্ক বৃদ্ধি পায়। মার্শাল পরিকল্পনার ফলে পশ্চিম ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে শিক্ষা, সংস্কৃতি, এবং বিজ্ঞান ক্ষেত্রে সহযোগিতা বৃদ্ধি পায়। 

মার্শাল পরিকল্পনার সমালোচনা

মার্শাল পরিকল্পনা ছিল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধোত্তর ইউরোপের অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি বৃহৎ অর্থনৈতিক সহায়তা কর্মসূচি। মার্শাল পরিকল্পনা তার লক্ষ্য পূরণের সফল হলেও সমালোচনার উর্ধ্বে ছিল না। এই পরিকল্পনার ফলে ইউরোপীয় মহাদেশের রাজনীতি ও অর্থনীতি দুটি পৃথক পরিমণ্ডলে বিভক্ত হয়ে পড়ে যা সার্বিক দিক থেকে গ্রহণযোগ্য ছিল না। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে পশ্চিম ইউরোপের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে যেয়ে পূর্ব ইউরোপের নিরাপত্তা  হুমকির সম্মুখীন হয়। ফলস্বরূপ সোভিয়েত ইউনিয়নের নেতৃত্বে সমাজতান্ত্রিক দেশগুলো নিজেদের প্রতিরক্ষায় জোটবদ্ধ হয় এবং গোটা বিশ্ব প্রত্যক্ষ করে ঠান্ডা যুদ্ধের মত ঐতিহাসিক ঘটনা। যাইহোক, মার্শাল পরিকল্পনার গঠনমূলক সমালোচনাগুলি নিম্নরূপ:

  • মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আধিপত্য বৃদ্ধিঃ মার্শাল পরিকল্পনার ফলে পশ্চিম ইউরোপের দেশগুলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবের অধীনে চলে আসে। এই প্রভাব বৃদ্ধির ফলে ইউরোপীয় দেশগুলোর স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব হুমকির মুখে পড়ে।
  • ইউরোপীয় দেশগুলোর মধ্যে অসমতা বৃদ্ধিঃ মার্শাল পরিকল্পনার অর্থনৈতিক সহায়তা পশ্চিম ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে অসমভাবে বন্টিত হয়। এই অসম বন্টনের ফলে পশ্চিম ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে অর্থনৈতিক বৈষম্য বৃদ্ধি পায়।
  • ইউরোপীয় সংস্কৃতির আমেরিকানায়নঃ মার্শাল পরিকল্পনার ফলে পশ্চিম ইউরোপের দেশগুলোতে আমেরিকান সংস্কৃতির প্রভাব বৃদ্ধি পায়। এই প্রভাব বৃদ্ধির ফলে ইউরোপীয় সংস্কৃতির বৈচিত্র্য হুমকির মুখে পড়ে।

মার্শাল পরিকল্পনা ছিল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধোত্তর ইউরোপের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। এই পরিকল্পনার ফলে পশ্চিম ইউরোপের দেশগুলোর অর্থনীতি ব্যাপকভাবে পুনরুদ্ধার হয় এবং ইউরোপীয় একীকরণের প্রক্রিয়া শুরু হয়।

তবে, মার্শাল পরিকল্পনার কিছু সমালোচনাও রয়েছে। এই সমালোচনাগুলির মধ্যে রয়েছে ইউরোপীয় মহাদেশের বিভাজন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আধিপত্য বৃদ্ধি, ইউরোপীয় দেশগুলোর মধ্যে অসমতা বৃদ্ধি, এবং ইউরোপীয় সংস্কৃতির আমেরিকানায়ন।

সামগ্রিকভাবে, মার্শাল পরিকল্পনা ছিল একটি সফল পরিকল্পনা। এই পরিকল্পনার ফলে পশ্চিম ইউরোপের দেশগুলোর অর্থনীতি পুনরুদ্ধার হয় এবং ইউরোপীয় একীকরণের প্রক্রিয়া শুরু হয়। তবে, এই পরিকল্পনার কিছু সমালোচনাও রয়েছে যা বিবেচনায় নেওয়া উচিত।

লেখক

  • রাকিবুল ইসলাম, মেরুনপেপার

    রাকিবুল ইসলাম রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএলবি ও এলএলএম সম্পন্ন করেছেন। রাজনীতি, আইন, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ও ইতিহাস নিয়ে স্পষ্ট ও তথ্যসমৃদ্ধ বিশ্লেষণ তুলে ধরেন। ওয়ার্ডপ্রেসসহ ডিজিটাল প্রকাশনার মাধ্যমে তিনি পাঠককে বিষয়ভিত্তিক আলোচনা তুলে ধরার চেষ্টা করেন।

    শেয়ার করুনঃ
    আরো আর্টিকেল পড়ুন
    মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতি আজ যে উত্তেজনায় ভরা, তার কেন্দ্রবিন্দুতে আছে ফিলিস্তিনি সংকট এবং আব্রাহাম চুক্তি নামের এক পরিবর্তনশীল কূটনৈতিক প্যাকেজ।
    ফিলিস্তিনি সংকট ও আব্রাহাম চুক্তিঃ সমালোচনা, সুফল ও বাস্তবতা

    মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতি আজ যে উত্তেজনায় ভরা, তার কেন্দ্রবিন্দুতে আছে ফিলিস্তিনি সংকট এবং আব্রাহাম চুক্তি নামের এক পরিবর্তনশীল কূটনৈতিক প্যাকেজ।

    পি আর পদ্ধতি কী — ধরন, সুবিধা-অসুবিধা ও বাংলাদেশের নির্বাচনে প্রাসঙ্গিকতা (1)
    পি আর পদ্ধতি কী — ধরন, সুবিধা-অসুবিধা ও বাংলাদেশের নির্বাচনে প্রাসঙ্গিকতা

    পি আর পদ্ধতি হলো আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বমূলক নির্বাচন ব্যবস্থা। পি আর পদ্ধতির ধরন, সুবিধা, অসুবিধা বিবেচনায় বাংলাদেশে পি আর পদ্ধতি প্রাসঙ্গিক কি না প্রশ্ন উঠেছে।

    বিশ্বের প্রথম লিখিত সংবিধানগুলোর অন্যতম মদিনা সনদ ইসলামি রাষ্ট্র, ধর্মীয় স্বাধীনতা ও সামাজিক সম্প্রীতির অনন্য ঐতিহাসিক দলিল। 
    মদিনা সনদ কীঃ মদিনা সনদের প্রধান ধারা ও বিশ্ব ইতিহাসে এর গুরুত্ব বিশ্লেষণ

    বিশ্বের প্রথম লিখিত সংবিধানগুলোর অন্যতম মদিনা সনদ ইসলামি রাষ্ট্র, ধর্মীয় স্বাধীনতা ও সামাজিক সম্প্রীতির অনন্য ঐতিহাসিক দলিল। 

    বিবিসির প্রতিবেদনে প্রকাশিত হয়েছে যে, শেখ হাসিনার ফাঁস হওয়া অডিওতে হাসিনা স্বয়ং নিরাপত্তা বাহিনীকে বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে হত্যার নির্দেশ দিয়েছিলেন।
    বিবিসির তদন্তে শেখ হাসিনার ফাঁস হওয়া অডিও: ‘যেখানে পাবে সেখানেই গুলি করো’

    বিবিসির প্রতিবেদনে প্রমান মিলেছে যে, শেখ হাসিনার ফাঁস হওয়া অডিওতে হাসিনা স্বয়ং নিরাপত্তা বাহিনীকে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনকারীদের হত্যার নির্দেশ দিয়েছিলেন।

    কেন ইসরায়েল ইরানে আক্রমণ করেছিল? আন্তর্জাতিক বিচারের হাত থেকে বাঁচতে, গাজার নিপীড়ন থেকে দৃষ্টি সরাতে ও ইহুদি আধিপত্য জাহিরের হতাশাজনক প্রচেষ্টা।
    কেন ইসরায়েল ইরানে আক্রমণ করেছিল তার প্রকৃত কারণ

    কেন ইসরায়েল ইরানে আক্রমণ করেছিল? আন্তর্জাতিক বিচারের হাত থেকে বাঁচতে, গাজার নিপীড়ন থেকে দৃষ্টি সরাতে ও ইহুদি আধিপত্য জাহিরের হতাশাজনক প্রচেষ্টা।

    গত ১৩ মে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সৌদি আরবের রিয়াদে এক বিনিয়োগ সম্মেলনে সিরিয়ার ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করার ঘোষণা দেন।
    সিরিয়ার ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার যুক্তরাষ্ট্রেরঃ নতুন কূটনৈতিক অধ্যায়ের সূচনা

    গত ১৩ মে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সৌদি আরবের রিয়াদে এক বিনিয়োগ সম্মেলনে সিরিয়ার ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করার ঘোষণা দেন।

    গত ১২ই মে, ২০২৫ সাবেক শাসক দল আওয়ামী লীগের সব কার্যক্রম নিষিদ্ধ করে সরকারের প্রজ্ঞাপন জারির পর এবার আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিত করল নির্বাচন কমিশন।
    বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিত করল নির্বাচন কমিশনঃ রাজনৈতিক প্রভাব ও ভবিষ্যৎ পথ

    গত ১২ই মে, ২০২৫ সাবেক শাসক দল আওয়ামী লীগের সব কার্যক্রম নিষিদ্ধ করে সরকারের প্রজ্ঞাপন জারির পর এবার আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিত করল নির্বাচন কমিশন।

    আজ ১০ মে, পাকিস্তান সেনাবাহিনী ভারতের বিরুদ্ধে "অপারেশন বুনিয়ান-উন-মারসুস" নামে ব্যাপক পাল্টা হামলা শুরু করে। এই অভিযানের নামটি কোরআনের সূরা আস-সাফের ৪ নম্বর আয়াত থেকে নেওয়া হয়েছে, যার অর্থ "গলিত সীসায় নির্মিত অভেদ্য প্রাচীর"। গত ৬ মে’র ভারতের "অপারেশন সিঁদুর"-এর জবাবে পাকিস্তান এই পাল্টা হামলা চালিয়েছে। যদিও এখন পর্যন্ত ক্ষয়ক্ষতির পরিমান ভারত প্রকাশ করেনি, পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর দাবি, এই অভিযানে জম্মু-কাশ্মীর, পাঞ্জাব, ও রাজস্থানের একাধিক সামরিক টার্গেটে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়েছে, যার মধ্যে ব্রাহ্মোস মিসাইল ডিপো এবং এস-৪০০ এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম অন্তর্ভুক্ত।
    অপারেশন বুনিয়ান-উন-মারসুসঃ ভারতে পাকিস্তানের পাল্টা হামলা

    পাকিস্তান ভারতের বিরুদ্ধে “অপারেশন বুনিয়ান-উন-মারসুস” নামে ব্যাপক পাল্টা হামলা শুরু করে। এই অভিযানের নামটির অর্থ “গলিত সীসায় নির্মিত অভেদ্য প্রাচীর”।

    এই আর্টিকেলগুলিও আপনি পড়তে পারেন

    মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতি আজ যে উত্তেজনায় ভরা, তার কেন্দ্রবিন্দুতে আছে ফিলিস্তিনি সংকট এবং আব্রাহাম চুক্তি নামের এক পরিবর্তনশীল কূটনৈতিক প্যাকেজ।

    ফিলিস্তিনি সংকট ও আব্রাহাম চুক্তিঃ সমালোচনা, সুফল ও বাস্তবতা

    মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতি আজ যে উত্তেজনায় ভরা, তার কেন্দ্রবিন্দুতে আছে ফিলিস্তিনি সংকট এবং আব্রাহাম চুক্তি নামের এক পরিবর্তনশীল কূটনৈতিক প্যাকেজ।

    পি আর পদ্ধতি কী — ধরন, সুবিধা-অসুবিধা ও বাংলাদেশের নির্বাচনে প্রাসঙ্গিকতা (1)

    পি আর পদ্ধতি কী — ধরন, সুবিধা-অসুবিধা ও বাংলাদেশের নির্বাচনে প্রাসঙ্গিকতা

    পি আর পদ্ধতি হলো আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বমূলক নির্বাচন ব্যবস্থা। পি আর পদ্ধতির ধরন, সুবিধা, অসুবিধা বিবেচনায় বাংলাদেশে পি আর পদ্ধতি প্রাসঙ্গিক কি না প্রশ্ন উঠেছে।

    বিশ্বের প্রথম লিখিত সংবিধানগুলোর অন্যতম মদিনা সনদ ইসলামি রাষ্ট্র, ধর্মীয় স্বাধীনতা ও সামাজিক সম্প্রীতির অনন্য ঐতিহাসিক দলিল। 

    মদিনা সনদ কীঃ মদিনা সনদের প্রধান ধারা ও বিশ্ব ইতিহাসে এর গুরুত্ব বিশ্লেষণ

    বিশ্বের প্রথম লিখিত সংবিধানগুলোর অন্যতম মদিনা সনদ ইসলামি রাষ্ট্র, ধর্মীয় স্বাধীনতা ও সামাজিক সম্প্রীতির অনন্য ঐতিহাসিক দলিল। 

    জুলাই অভ্যুত্থানের ইতিহাস

    জুলাই অভ্যুত্থানের ইতিহাস

    ইতিহাসের পাতায় যেসব মুহূর্ত স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে, তার মধ্যে বাংলাদেশের জুলাই অভ্যুত্থানের ইতিহাস অন্যতম।

    নিয়মিত আর্টিকেল পেতে

    সাবস্ক্রাইব করুন

    Scroll to Top
    ×