ইসরায়েল গাজার বেসামরিকদের উপর নির্বিচারে বোমা হামলা করছে নয় মাসেরও বেশি সময় ধরে। অথচ তথাকথিত পশ্চিমা মূলধারার নারীবাদীদের থেকে আমরা কেবল নীরবতাই দেখে আসছি। এই একই নারীবাদীরা বৈশ্বিক অবিচার, জলবায়ু জরুরি পরিস্থিতি থেকে শুরু করে ইরানে মহিলাদের উপর দমন, এবং তালেবানের শাসনে নারীদের অবস্থা সম্পর্কে সোচ্চার ছিল। কিন্তু গাজার ক্ষেত্রে তারা নির্লজ্জভাবে নিরবতা পালন করছে। যেন পৃথিবীর সবকিছু নিয়ে বলার থাকলেও গাজা নিয়ে তাদের বলার কিছু নেই।
গাজা নিয়ে পশ্চিমা নারীবাদীদের নীরবতা অনেক প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। কেন তারা ফিলিস্তিনের নারীদের জন্য আওয়াজ তুলছে না? কেন ইউক্রেনীয় নারীদের জন্য সক্রিয় সমর্থন দেখালেও ফিলিস্তিনের নারীদের বেলায় কোনো কার্যতঃ কোন কথাই বলছে না? এই নিবন্ধে আমরা এই দ্বিমুখী নীতির মূল কারণ অনুসন্ধান করব এবং বিষয়গুলি বিশদভাবে বিশ্লেষণ করার চেষ্টা করব।
গাজা নিয়ে পশ্চিমা নারীবাদীদের একপাক্ষিক আচরণ
আফগানিস্তানে তালেবানদের নিয়ন্ত্রণ গ্রহণের সময় সবচেয়ে বেশি প্রতিবাদ করেছিল পশ্চিমা নারীবাদীরা এবং ২০২২ সালে রো বনাম ওয়েড মামলার রায় তাদের মনোপূত না হওয়ার বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিল। তারা এমনকি ২০২৩ সালে “বার্বি” সিনেমাটি অস্কার না জেতায় দুঃখের শেষ ছিল না। “বার্বির” অস্কার না জেতাকে তারা নারীবাদীদের পরাজয়ের শামিল বলে গণ্য করেছিল। তারা ইউক্রেনের নারীদের উপর রাশিয়ার আগ্রাসনের প্রতিবাদে বিশ্বজুড়ে নারীবাদী আন্দোলনগুলো ব্যাপক সমর্থন দেখিয়েছে। এই সমর্থনের ফলে আন্তর্জাতিক মহলে ইউক্রেনীয় নারীদের জন্য নানাবিধ সহায়তা ও সহযোগিতা বৃদ্ধি পেয়েছে। আবার ইরানের মাশা আমিনীদের সমর্থণে তারা পৃথিবী জুড়ে তোলপাড় করেছিল।

কিন্তু ফিলিস্তিনের নারীদের ক্ষেত্রে একেবারে বিপরীত চিত্র দেখা যায়। তারা সব বিষয়ে কিছু না কিছু বলেছে শুধু গাজা নিয়ে তারা নিশ্চুপ। গাজায় নারী ও শিশুদের উপর নির্যাতন ও হত্যার ঘটনা নিয়মিত হলেও নারীবাদী সংগঠনগুলো এ নিয়ে তেমন কোন উচ্চবাচ্য করে না। কিছু পশ্চিমা নারীবাদী, যেমন গ্রেটা থানবার্গ এবং শার্লট চার্চ, গাজা নিয়ে জনসম্মুখে অবস্থান নিলেও, কিন্তু সংখ্যায় তারা একেবারেই নগণ্য। গাজা নিয়ে পশ্চিমা নারীবাদীরাদের নীরবতা বোঝায় যে তারা পক্ষপাতিত্ব করছে। কিছু জীবন তাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ মনে হলেও গাজার জীবনের কোন মূল্য নেই তাদের কাছে।
পশ্চিমা নারীবাদীদের ভণ্ডামি ও ফিলিস্তিনি নারীদের সঙ্গিন লড়াই
ইসরায়েলি দখলদারদের অধীনে ফিলিস্তিনি নারীরা মারাত্মক নিপীড়নের শিকার। এখন পর্যন্ত ৩৫৯৫৩ জন নিহত হয়েছেন যার মধ্যে ৯,০০০ এর বেশি নারী মারা গিয়েছেন, এবং যারা বেঁচে আছেন তারা ব্যথানাশক ছাড়া সন্তান প্রসব করছেন, অ্যানেসথেশিয়া ছাড়া সিজারিয়ান অপারেশন করছেন, এবং মৌলিক স্বাস্থ্যবিধি পণ্য ছাড়াই দিনাতিপাত করছেন। অনেককে অবৈধভাবে আটক করা হয়েছে এবং অবমাননাকর আচরণ করা হয়েছে।
ইসরায়েল ও ফিলিস্তিন যুদ্ধের ইতিহাস
ফিলিস্তিনি মানবাধিকার কর্মী রাশা আবুশাবান ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ভাই এবং অগণিত প্রিয়জনকে হারিয়েছেন, তার বাড়ি ধ্বংস হয়েছে এবং বহুবার বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। সম্প্রতি তাকে গাজা থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। গাজা নিয়ে পশ্চিমা নারীবাদীদের নীরবতায় তিনি জিজ্ঞাসা করেন, “গাজার অসংখ্য মা যারা প্রতিদিন ক্ষতি এবং বিপর্যয়ের মুখোমুখি হন তাদের কথা বলার কণ্ঠস্বর কোথায়? আমরা কি তাদের মনোযোগ এবং সমর্থন পাওয়ার যোগ্য নই?”

রাশা ফিলিস্তিনি নারীদের ভয়াবহ পরিস্থিতি তুলে ধরেন। তারা অকল্পনীয় কষ্টের মুখোমুখি হচ্ছেন; ব্যথানাশক ছাড়া প্রসব, মৌলিক প্রয়োজনীয় সামগ্রীর অভাব, এবং অবৈধভাবে আটক হওয়া ইত্যাদি। এই সমস্ত অত্যাচার সত্ত্বেও, বৈশ্বিক নারীবাদী সম্প্রদায়গুলি তাদের সংগ্রামকে উপেক্ষা করছে। পশ্চিমা নারীবাদীদের এই নীরবতা একদিকে যেমন মানবাধিকারের প্রতি অবহেলা প্রদর্শন করে, তেমনি অন্যদিকে তাদের দ্বিমুখী নীতির পরিচয় দেয়। কেন এই দ্বিমুখী আচরণ?
হামাসঃ ফিলিস্তিনিদের স্বাধীনতা আদায়ে যে সম্মুখে লড়ছে
গাজা নিয়ে পশ্চিমা নারীবাদীদের এই আচরণের কারণ খুঁজতে গেলে কিছু মৌলিক বিষয় উঠে আসে। যেমনঃ
নারীবাদীদের মুসলিম বিদ্বেষ
ব্রিটিশ লিবিয়ান সাংবাদিক এবং “দ্য আদারড উইমেন: হাউ হোয়াইট ফেমিনিজম হার্মস মুসলিম উইমেন” এর লেখক শাহেদ ইজায়দী বলেন, গাজা নিয়ে পশ্চিমা নারীবাদীদের নীরবতা এই ধ্যান-ধারণা থেকে উদ্ভূত যে মুসলিমরা প্রকৃতিগতভাবে আলাদা, “পশ্চাৎমুখী,” এবং “সহিংস।” এই ধ্যান-ধারণা ফিলিস্তিনিদের মানবিক অধিকার হরণ করেছে এবং তাদের প্রতি সহানুভূতি বা সাহায্যের মনোভাব নষ্ট করেছে।
এমনি ভাবে ব্রিটিশ লিবিয়ান সাংবাদিক এবং “ভেইল্ড থ্রেট” এর লেখক নাদেইন আসবালি বলেন, বর্ণবাদী শ্বেতাঙ্গ পশ্চিমা নারীবাদী পশ্চিমা সাম্রাজ্যবাদী এজেন্ডাকে সমর্থন করে। এই পশ্চিমা সাম্রাজ্যবাদী এজেন্ডা অনুযায়ী তারা একটি শ্রেণি বৈষম্য ধারণ করে, মেনে চলে এবং মুসলিম নারীদের তলানিতে রাখে।
“শ্বেতাঙ্গ পশ্চিমা নারীবাদীদের ভণ্ডামি কখনও এতটা স্পষ্ট হয়নি,” শাহেদ বলেন। “পশ্চিমা নারীবাদী সহজেই কৃষ্ণাঙ্গ, বাদামি, এবং মুসলিম নারীদের জন্য খুশি মনে কথা বলবে যখন তাদের নিজস্ব চেতনার মিলে যাবে। কিন্তু ফিলিস্তিনি নারীদের জন্য এই একই শক্তি কোথায়?”
রাজনৈতিক স্বার্থ এবং মিত্রতা
নারীবাদী আন্দোলন এবং পশ্চিমা দেশগুলির রাজনৈতিক অবস্থান একে অপরের সাথে যুক্ত। ইউক্রেনের প্রতি পশ্চিমা বিশ্বের সমর্থন এবং গাজা নিয়ে পশ্চিমা নারীবাদীদের নিরবতার পেছনে বড় কারণ হলো রাজনৈতিক স্বার্থ এবং মিত্রতা। ইউক্রেনের ক্ষেত্রে পশ্চিমা দেশগুলির অর্থনৈতিক এবং কৌশলগত স্বার্থ জড়িত। তারা রাশিয়ার প্রভাব কমাতে ইউক্রেনকে সমর্থন করছে।
পুঁজিবাদঃ লাভের লড়াই নাকি বৈষম্যের খেলা?
অন্যদিকে, ইসরায়েল পশ্চিমা বিশ্বের একটি গুরুত্বপূর্ণ মিত্র দেশ, যা মধ্যপ্রাচ্যে তাদের কৌশলগত স্বার্থ রক্ষা করতে সহায়তা করে। ইসরায়েলের সামরিক শক্তি এবং প্রযুক্তিগত উন্নয়ন পশ্চিমা দেশগুলির সাথে তাদের সম্পর্ককে আরও মজবুত করেছে। ফিলিস্তিনের বিপক্ষে ইসরায়েলের কার্যকলাপের সমালোচনা করা অনেক দেশেই রাজনৈতিক ভাবে সুবিধাজনক নয়, যা ফিলিস্তিনের নির্যাতিত নারীদের সমস্যা নিয়ে প্রকাশ্যে কথা বলাকে কঠিন করে তোলে।
ইসরায়েলি লবিস্টদের প্রভাব
ইসরায়েলি লবিস্ট গ্রুপগুলি যেমনঃ AIPAC, J Street, Zionist Organization of America শুধুমাত্র সরকারি স্তরে নয়, বরং নারীবাদী ও মানবাধিকার সংগঠনগুলির প্রতিও ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করছে। তাদের বিভিন্ন কৌশল ব্যবহার করে এ ধরনের সংগঠনগুলিকে নীরব রাখা হয়। ইসরায়েলি লবিস্ট গ্রুপগুলি প্রায়শই নারীবাদী ও মানবাধিকার সংগঠনগুলিকে হুমকি দেয় এবং হয়রানি করে যারা ফিলিস্তিনিদের অধিকার সম্পর্কে কথা বলতে চায়। এই হুমকি ও হয়রানির মধ্যে রয়েছেঃ অর্থায়ন হ্রাসের হুমকি, লবিস্ট গ্রুপগুলি নারীবাদী ও মানবাধিকার সংগঠনগুলিকে আর্থিক সহায়তা দিয়ে তাদের মুখ বন্ধ রাখে। এই গ্রুপগুলি দাতাদেরকে ফিলিস্তিনের পক্ষে কথা বলার জন্য অর্থায়ন বন্ধ করার জন্য চাপ দেয়; সামাজিকভাবে বিচ্ছিন্নতার হুমকি, তারা ফিলিস্তিনিদের সমর্থক সংগঠনগুলিকে “ইসরাইলবিরোধী” হিসাবে চিহ্নিত করে; মামলার হুমকি, কিছু ক্ষেত্রে, লবিস্ট গ্রুপগুলি মিথ্যা বা ক্ষতিজনক মামলা দায়ের করে নারীবাদী ও মানবাধিকার সংগঠনগুলিকে ভয় দেখায়। বিভিন্ন শর্তাবলী আরোপ করে, যা সংগঠনগুলিকে ইসরায়েল বিরোধী কর্মকান্ড থেকে বিরত রাখে।

গণমাধ্যমের প্রভাব
ইসরাইল বিভিন্ন মিডিয়া চ্যানেল এবং সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে মিথ্যা তথ্য ও বিকৃত সংখ্যার তথ্য উপস্থাপন করে ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালায় এবং তাদের কার্যকলাপকে নেতিবাচকভাবে উপস্থাপন করে । তারা গণমাধ্যমের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রাখে এবং তাদের পক্ষে প্রচার চালাতে গণমাধ্যমকে ব্যবহার করে। ফলে, সাধারণ মানুষ ইসরাইল-ফিলিস্তিন সংঘাত সম্পর্কে একটি একপক্ষীয় দৃষ্টিভঙ্গি লাভ করে। উদাহরণস্বপ, ফিলিস্তিনিদের হতাহতের সংখ্যা কমিয়ে দেখানো বা ইসরাইলের সামরিক অভিযানকে “আত্মরক্ষা” হিসাবে চিত্রিত করা এসব লবি গোষ্ঠীর কৌশলের মধ্যে পড়ে। এর ফলে ফিলিস্তিনিদের প্রতি জনমত বদলে যায় এবং তাদের সমর্থন কমে যায়।
ইসরাইল বৈশ্বিক পর্যায়ে ফিলিস্তিনিদের সমর্থন কমানোর জন্য বিভিন্ন আন্তর্জাতিক নারীবাদী সংস্থা এবং সরকারগুলির সাথে জোট গঠন করে এবং তাদের উপর প্রভাব বিস্তার করে যাতে তারা ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে কোন উদ্যোগ না নেয়।
নারীবাদ পুনঃসংজ্ঞায়িত করা: লেবেল এবং সীমানার বাইরে
নারীবাদ দীর্ঘকাল ধরে সমাজের বিভিন্ন স্তরে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে, ক্রমশ বিবর্তিত হচ্ছে এবং নতুন দিগন্ত স্পর্শ করছে। মিশরীয়-আমেরিকান নারীবাদী এবং লেখক মোনা এলতাহাউয়ি পিতৃতন্ত্রকে অক্টোপাস হিসেবে উপস্থাপন করেন, যেখানে অক্টোপাসের অনেক শুঁড় বিভিন্ন ধরনের দমনকে তুলে ধরে। প্রকৃত নারীবাদ মানে হলো এই সমস্ত ধরনের দমনের বিরুদ্ধে লড়াই করা।
অন্তর্ভুক্তিমূলক নারীবাদের প্রয়োজনীয়তা এবং অগ্রগতির পথ
গাজায় ইসরাইলের বর্ণবাদী ব্যবস্থা এবং জাতিগত নির্মূলের কথা অস্বীকার এবং এর বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে অস্বীকার করে বর্ণবাদী শ্বেতাঙ্গ মূলধারার তথাকথিত নারীবাদীরা নারীবাদের সংজ্ঞাতেই মুখ থুবড়ে পরেছে। পশ্চিমা নারীবাদীদের নারীবাদ প্রায়ই ভিন্ন মূল্যবোধ বা জীবনধারার লোকদের অস্বীকার করে। তাদের প্রভু পশ্চিমা সাম্রাজ্যবাদ কিংবা পুঁজিবাদের বাইরে তারা কিছু মেনে নিতে নারাজ কিংবা অক্ষম।
‘বিহাইন্ড ইউ ইজ দ্য সি’ বইয়ের ফিলিস্তিনি-আমেরিকান লেখক সুসান মুয়াদ্দি দারাজ গাজা নিয়ে পশ্চিমা নারীবাদীরদের নীরবতাকে অ-শ্বেতাঙ্গ নারীদের প্রতি সুস্পষ্ট বিশ্বাসঘাতকতা হিসেবে দেখছেন। তিনি বিশ্বাস করেন যে সুবিধা অনুযায়ী পক্ষ বেছে নেওয়া এই সুবিধাবাদী নারীবাদীরা পিছনে পড়ে থাকবে কারণ বিশ্ব ক্রমবর্ধমানভাবে ইসরায়েলি উপনিবেশবাদী বাস্তবতা জানছে এবং স্বীকার করছে।
“ফিলিস্তিনকে উপেক্ষা করা ভন্ড নারীবাদীদের প্রতি কিছু কথাঃ ফিলিস্তিনি সম্পর্কে প্রচলিত ধ্যানধারণার পরিবর্তন ঘটছে এবং এটি আপনার উপর নির্ভরশীল নয়। সোজা কথায় আপনাকে আমাদের প্রয়োজন নেই এবং আপনার বোঝার অপেক্ষায় আমর থাকব না। জ্ঞান আহরণ করুন এবং তাল মিলিয়ে চলুন, অথবা পিছনে পড়ুন,” সুসান জোর দিয়ে বলেন।
গাজা নিয়ে পশ্চিমা নারীবাদীদের নীরবতা একটি সুবিধাবাদী এবং বিরক্তিকর আচরণের বহিঃপ্রকাশ। প্রকৃত নারীবাদকে সব ধরণের প্রতিবন্ধকতা অতিক্রম করতে হবে, তাদের স্বার্থ বা বিশ্বাস নির্বিশেষে সমস্ত নারীদের পক্ষে ওকালতি করতে হবে। অকল্পনীয় কষ্ট সহ্য করে আসা ফিলিস্তিনি নারীদের কথা অবশ্যই শোনা এবং সমর্থন করতে হবে। এখন সময় বিশ্ব নারীবাদী সম্প্রদায়ের গাজার সাথে সংহতি প্রকাশ করার এবং নারীবাদের সত্যিকারের মর্মবাণী সমুন্নত রাখারঃ সকল প্রকার নিপীড়নের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করা।













