বর্তমান সময়ে সবচেয়ে আলোচিত একটি শব্দ হচ্ছে গণতন্ত্র। পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে গণতন্ত্রের ধারণা ছড়িয়েছে যুগ যুগ ধরে। পৃথিবীর নানা প্রান্তে যেয়ে গণতন্ত্র নানাভাবে বিকশিত হয়েছে। কোথাও সংকির্ণ অর্থে, কোথাওবা ব্যপক অর্থে। নানা ধরণের আলোচনা-সমালোচনার পরশে গণতন্ত্র আজকের পর্যায়ে এসে উপনীত হয়েছে। কোথাও একনায়কতন্ত্রকে সরিয়ে দিয়ে জনগণের পূর্ণ আস্থা অর্জন করতে পেরেছে, আবার কোথাওবা নিজেই বেসামরিক স্বৈরশাসকের পদতলে পিষ্ট হয়ে নতুন রূপ নিয়েছে। যাইহোক, এই আলোচনায় আমরা জানার চেষ্টা করব গণতন্ত্র কি, গণতন্ত্রের মূলনীতিগুলো অর্থাৎ, গণতন্ত্রের ভিত্তি এবং কখন একটি দেশকে গণতান্ত্রিক দেশ বলা যাবেনা।
গণতন্ত্র কি?
গণতন্ত্র হলো একটি শাসন ব্যবস্থা যেখানে শাসন কার্য সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণে সাধারণ মানুষের অংশগ্রহন করার ক্ষমতা থাকে। উদাহরণস্বরূপ, যে শাসন ব্যবস্থায়, কে শাসন পরিচালনা করবে কিংবা কোন আইন বা নীতি শাসন গ্রহণ করবে সেই সিদ্ধান্ত যখন সাধারণ মানুষের পছন্দের ভিত্তিতে গ্রহণ করা হয় সেই শাসন ব্যবস্থাকে গণতন্ত্র বলে। গণতন্ত্র শব্দটি এসেছে দুটি গ্রিক শব্দ “demos” অর্থ জনগণ ও “kratos” ক্ষমতা, অর্থাৎ, প্রাচীন গ্রিক শব্দ ডেমোক্রাটিয়া বা “জনগণের কাছে ক্ষমতা” থেকে গণতন্ত্র শব্দটির উৎপত্তি।
কল্যাণ রাষ্ট্র কি? কল্যাণ রাষ্ট্রের মডেল ও বৈশিষ্ট্যগুলো কি কি?
সাধারণ অর্থে, মুক্ত ও অবাধ নির্বাচনের মাধ্যমে সাধারণ জনগণ কর্তৃক নেতৃত্ব বেছে নেয়াকেই গণতন্ত্র বলা হয়। তবে গণতন্ত্র শুধু নির্বাচনের মাধ্যমে নেতৃত্ব বেছে নের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। বরং রাষ্ট্রের হস্তক্ষেপমূক্ত জনগণের ব্যক্তিগত অধিকার চর্চাও গণতন্ত্রের একটি রূপ।

জাতিসংঘের মতে, মানবাধিকার ও মৌলিক ব্যক্তিস্বাধীনতার জন্য একটি সুরক্ষামূলক পরিবেশ নিশ্চিত করে গণতন্ত্র। এটি এমন একটি পরিবেশ যেখানে মানুষ অবাধে তাদের ইচ্ছা প্রকাশ ও প্রয়োগ করতে পারে, এবং সিদ্ধান্তগ্রহণে অংশগ্রহণ করতে পারে এবং সিদ্ধান্তগ্রহণকারীদের জবাবদিহি করতে পারে।
প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিংকনের মতে, গণতন্ত্র হলো, জনগনের জন্য, জনগণের দ্বারা, জনগণের শাসন। অর্থাৎ, জনগণের স্বাধীন ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে, জনগণের মধ্য থেকে, জনগণের প্রতিনিধি নির্বাচন ও শাসন প্রক্রিয়াই হলো গণতন্ত্র।
ব্রাইসের মতে, গণতন্ত্র হলো এমন একটি শাসন ব্যবস্থা যেখানে রাষ্ট্রের শাসনভার কোন নির্দিষ্ট এক বা একাধিক শ্রেণির ওপর নয় বরং একটি সমাজের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের ওপর আইনী প্রক্রিয়ায় বর্তায়। তবে, ডাইসির মতে, গণতন্ত্র হলো এমন একটি শাসন ব্যবস্থা যেখানে একটি সমগ্র জাতির সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশই শাসন পরিচালনায় অংশ নেয়। গেটেলের মতে, গণতন্ত্র হলো সেই শাসন ব্যবস্থা যেখানে জনগণের সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশই সার্বভৌম ক্ষমতা প্রয়োগ করার অধিকার রাখে।
উপরিউক্ত মত, সংজ্ঞা পর্যালোচনা শেষে আমরা এটা বলতেই পারি যে, গণতন্ত্র হচ্ছে সেই শাসন ব্যবস্থা, যে ব্যবস্থায় একটি রাষ্ট্রের সার্বভৌম ক্ষমতা জনগণের হাতে ন্যস্ত থাকে, জনগণই রাষ্ট্রের ক্ষমতার উৎস, এবং এই জনগণই প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষভাবে, তাদের প্রতিনিধিদের মাধ্যমে সরকারে অংশগ্রহণ করে। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় সংখ্যাগরিষ্ঠের মতামতের ভিত্তিতে শাসন পরিচালিত হয়। তবে তার মানে এই নয় যে, সংখ্যালঘুদের মতামত উপেক্ষিত হবে।
গণতন্ত্র কত প্রকার?
গণতন্ত্রকে বিভিন্নভাবে ভাগ করা যায়। একটি সাধারণ বিভাজন হলোঃ প্রত্যক্ষ ও প্রতিনিধিত্বমূলক গণতন্ত্র।
· প্রত্যক্ষ গণতন্ত্র
প্রত্যক্ষ গণতন্ত্র হল এমন একটি শাসন ব্যবস্থা যেখানে জনগণ সরাসরি শাসনকার্যে অংশগ্রহণ করে। এই ব্যবস্থায়, জনগণ নিয়মিতভাবে জনসভা, ভোটগ্রহণ, ইত্যাদির মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেয়। প্রত্যক্ষ গণতন্ত্রের উদাহরণ হল প্রাচীন গ্রিসের অ্যাথেন্স।
· প্রতিনিধিত্বমূলক গণতন্ত্র
প্রতিনিধিত্বমূলক গণতন্ত্র হল এমন একটি শাসন ব্যবস্থা যেখানে জনগণ তাদের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের মাধ্যমে শাসনকার্যে অংশগ্রহণ করে। এই ব্যবস্থায়, জনগণ নির্দিষ্ট সময় অন্তর নির্বাচনের মাধ্যমে তাদের প্রতিনিধিদের নির্বাচন করে। নির্বাচিত প্রতিনিধিরা জনগণের পক্ষে আইন প্রণয়ন, সরকার গঠন, ইত্যাদি কাজ করে। প্রতিনিধিত্বমূলক গণতন্ত্রের উদাহরণ হল আজকের বেশিরভাগ রাষ্ট্র। প্রতিনিধিত্বমূলক গণতন্ত্র আবার দুই ব্যবস্থায় ভাগ করা যায়। যথাঃ ১. সংসদীয় ব্যবস্থা ও ২. রাষ্ট্রপতি শাসিত ব্যবস্থা।
স্নায়ু যুদ্ধ কাকে বলে? স্নায়ু যুদ্ধের উদ্ভব, বিকাশ ও বর্তমান অবস্থা
গণতন্ত্রের মূলনীতি বা গণতন্ত্রের ভিত্তি
গণতন্ত্রের মূলনীতিসমূহ হল এমন কিছু নীতি ও আদর্শ যা গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থার ভিত্তি রচনা করে। গণতন্ত্রের মূলনীতিসমূহ ছাড়া, একটি রাষ্ট্রকে গণতান্ত্রিক বলা যায় না। গণতন্ত্রের মূলনীতিসমূহের মধ্যে রয়েছেঃ
নাগরিক অংশগ্রহণ

গণতন্ত্র নাগরিকদের সরাসরি এবং প্রতিনিধিত্বমূলক নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার এবং ভবিষ্যত গঠনের ক্ষমতা প্রদান করে। নাগরিকদের অংশগ্রহণই হলো গণতন্ত্রের ভিত্তি, যার মধ্যে রয়েছে জনসাধারণের আলোচনা, বিতর্ক, সভা- সমাবেশের মাধ্যমে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ। নাগরিক সংগঠন এবং সুশীল সমাজ এই ধরণের অংশগ্রহণের মাধ্যমে শাসন ব্যবস্থায় সরকার ও সমাজের বৃহত্তর অংশগ্রহণকে উত্সাহিত করে।
সমতা
জাতি, ধর্ম, লিঙ্গ বা অন্যান্য বৈশিষ্ট্য নির্বিশেষে বৈষম্য ছাড়াই সমস্ত মানুষের সাথে সমান আচরণ করা গণতন্ত্রের বৈশিষ্ট্য। তাদের পছন্দ অনুযায়ী ভোটাধিকার এবং ভোটাধিকার প্রয়োগের সমান অধিকার রয়েছে। প্রত্যেকের পছন্দ, প্রতিটি ভোটকে সমানভাবে মূল্যায়ন করার মাধ্যমে সাম্যকে একটি মৌলিক নীতি হিসেবে গণতান্ত্রিক সমাজে কার্যকর করে তোলে।
জবাবদিহিতা
জনগণ নির্বাচিত কর্মকর্তাদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করে, আর তাদের দায়িত্ব হচ্ছে সমাজকে সঠিকভাবে তাদের প্রতিদান দেয়া। জবাবদিহিতার আওতায় থেকে রাজনীতিবিদদের অবশ্যই দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে এবং ব্যক্তিগত লাভের জন্য ক্ষমতার অপব্যবহার করা যাবে না। কর্তৃত্ববাদী সরকারগুলি মিডিয়া এবং সুশীল সমাজকে নিয়ন্ত্রণ করে তাদেরকে জবাবদিহিতার মুখোমুখি করা কঠিন করে তোলে।
স্বচ্ছতা
স্বচ্ছতা বলতে বোঝায়, সরকারের কার্যাবলির কার্যকারিতা, সিদ্ধান্ত গ্রহণ, এবং নিয়ম-অনুসরণ সহ সরকারের কর্মক্ষমতা নাগরিকদের কাছে উন্মুক্ত ও স্পষ্ট থাকবে। রাজনীতিবিদ, কিংবা সরকারকে প্রশ্ন করার সুযোগ থাকবে। নাগরিক, সাংবাদিক কিংবা অন্যান্য পর্যবেক্ষনকারী সংগঠনগুলোর অনুরোধের ভিত্তিতে অবাধ তথ্য সরবরাহের সুযোগ থাকতে হবে।
রাজনৈতিক সহিষ্ণুতা
গণতন্ত্রে রাজনৈতিক সহিষ্ণুতা অপরিহার্য। এক পক্ষের সাথে আরেক পক্ষের, এক দলের সাথে আরেক দলের, এক সমাজের সাথে আরেক সমাজের মতামত ভিন্ন হবেই। এটাই গণতন্ত্রের সৌন্দর্য্য। পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধের সাথে ভিন্ন মতের অবাধ চর্চাই হলো গণতন্ত্র। এই ভিন্ন ভিন্ন মত বা রাজনৈতিক সহিষ্ণুতা যদি না থাকে তাহলে গণতন্ত্র ভেঙে পড়বে। গণতান্ত্রিক চর্চায় সংখ্যাগরিষ্ঠই নেতৃত্ব দেয়। তবে, সংখ্যালঘুদের মতামতকে, অধিকারকে অবশ্যই সম্মান করতে হবে। সত্যিকার অর্থে, ক্ষমতার ভিত্তিতে নয়, বরং প্রত্যেক নাগরিকের সমান ও সম্মানজনক ভাবে মতামত প্রকাশের স্বাধীনতা থাকবে। উন্মুক্ত এবং সমৃদ্ধ চিন্তার ভিত্তিতেই গণতন্ত্র বিকশিত হয়, এবং সংখ্যালঘুদের মতামত প্রকাশের অধিকার দমন করার ফলে গণতন্ত্রের বিকাশ বাধাপ্রাপ্ত হয়।
১৯৫৪ সালের নির্বাচনঃ যুক্তফ্রন্টের গঠন, বিজয় ও মুসলিম লীগের পরাজয়
বহু দলীয় ব্যবস্থা
গণতন্ত্রে নাগরিকদের পছন্দ ভিন্ন ভিন্ন পছন্দ থাকবে। সবার জন্য স্বাধীনভাবে মতামত প্রকাশ করার সমান অধিকার থাকবে। প্রত্যেকেই তাদের আদর্শ, পছন্দ অনুযায়ী সংগঠিত হতে পারবেন, দলের সমর্থণ করতে পারবেন। তাদেরকে কোন একটি নির্দিষ্ট দল বা মতের অনুসারী হতে বাধ্য করা যাবেনা। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় তারা তাদের পছন্দ অনুযায়ী সিদ্ধান্ত প্রদান করতে পারবেন। অর্থাৎ, কোন একক দল নয় বরং, নির্বাচনের সময় একাধিক দলের মধ্যে নির্বাচন করার স্বাধীনতা থাকবে। নাগরিকরাই ঠিক করবেন নির্বাচনের ফলাফলের ভিত্তিতে ক্ষমতা হস্তান্তর প্রক্রিয়া এবং ভবিষ্যতে রাষ্ট্র পরিচালন প্রক্রিয়া কি হবে।
ক্ষমতার অপব্যবহারের উপর নিয়ন্ত্রণ
যখন শাসন কার্যক্রমে নাগরিকদের সমর্থন থাকে এবং রাজনীতিবিদরা নিয়ম কানুন মেনে চলেন তখনই গণতন্ত্র বিকশিত হয়। যখন সরকারগুলি আইনের ঊর্ধ্বে থাকার সিদ্ধান্ত নেয়, রাজনীতিবিদরা বিশ্বাস করেন যে তাদের জন্য ভিন্ন আইন প্রযোজ্য, কিংবা রাষ্ট্র নির্দিষ্ট কোন গোষ্ঠীর পক্ষ নেয়, অথবা জনগণের অর্থ দুর্নীতিগ্রস্ত নেতাদের পকেটে চলে যায় তখনই ক্ষমতার অপব্যবহার ঘটে। গণতন্ত্র রক্ষার জন্য, শাসন কার্যক্রম ও ক্ষমতাকে বিকেন্দ্রিকরণ, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনী আইন ও নির্বাচন নিশ্চিত এবং গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে। মনে রাখতে হবে, সরকারের ক্ষমতা অসীম নয় এবং জনগণই ক্ষমতার উৎস।
অর্থনৈতিক স্বাধীনতা
গণতন্ত্রে, একজন ব্যক্তি তার নিজস্ব জীবন যাপনে সার্বিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে স্বাধীন হবেন। যতক্ষণ না ব্যক্তি নিয়মের অবাধ্য হন, ততক্ষণ তাদের কী শিখতে হবে বা তাদের কী পেশা নিতে হবে বা তাদের কী করতে হবে তা বলার বা ঠিক করে দেয়ার দায়িত্ব্ব সরকারের নয়। ব্যক্তির অর্থনৈতিক স্বাধীনতা অক্ষুন্ন রাখা সরকারের দায়িত্ব। কেননা, শক্তিশালী সমাজ এবং শক্তিশালী জাতীয় অর্থনীতি বিকাশের জন্য অর্থনৈতিক স্বাধীনতা গুরুত্বপূর্ণ।
মৌলিক অধিকার
মানুষের মৌলিক অধিকার সংরক্ষণ গণতন্ত্রের একটি মূলনীতি। মৌলিক অধিকার হল এমন কিছু অধিকার যা সকল মানুষের জন্য অলঙ্ঘ্যনীয়। এই অধিকারসমূহ মানুষের মর্যাদা ও স্বাধীনতা রক্ষার জন্য অপরিহার্য। যেমনঃ জীবন ও ব্যক্তিগত নিরাপত্তার অধিকার, ন্যায়বিচার ও আইনের দৃষ্টিতে সমতার অধিকার, মান সুযোগ ও সুবিধার অধিকার, স্বাধীনতা ও স্বাধীন চিন্তার অধিকার ইত্যাদি।
গণতন্ত্রে জনগণই রাষ্ট্রের সার্বভৌম ক্ষমতার অধিকারী। তাই সরকারের কার্যক্রমে জনগণের স্বার্থের প্রতিফলন ঘটাতে হবে। কিন্তু, সরকারের ক্ষমতার অপব্যবহার রোধ করার জন্য মানুষের মৌলিক অধিকার সংরক্ষণ করা অপরিহার্য।
মানবাধিকার
মানবাধিকার হলো সমস্ত মানবকে জন্মগতভাবে সমান এবং মর্যাদাপূর্ণ অধিকার যা তাঁদের স্বাধীনতা, ন্যায্যতা এবং সমতা নিশ্চিত করে। এই অধিকারগুলি মানুষের জন্মগত অধিকার হিসাবে বিবেচিত হয়। মানবাধিকার সম্পর্কিত আইন ও নীতি মানবজাতির সমস্ত সদস্যদের জন্য প্রযোজ্য। মানবাধিকার সম্পর্কিত আইন ও নীতি মানবজাতির সমস্ত সদস্যদের জন্য প্রযোজ্য। মানবাধিকার সম্পর্কিত আইন ও নীতি মানবজাতির সমস্ত সদস্যদের জন্য প্রযোজ্য। বিভিন্ন ধরণের মানবাধিকার রয়েছে, যেমনঃ সামাজিক ও অর্থনৈতিক অধিকার, রাজনৈতিক অধিকার, সাংস্কৃতিক অধিকার,ইত্যাদি। মানবাধিকার গণতন্ত্রের স্থিতিশীলতা ও সাফল্যের জন্য অপরিহার্য।
অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন
যেভাবে সময়ে সময়ে জনমত পরিবর্তিত হয়, তেমনি কার্যকর গণতন্ত্রের জন্য ক্ষমতার স্বাভাবিক ও নিয়মিত পরিবর্তন আবশ্যক। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতার পালাবদল হতে হবে। একটি সুস্থ গণতন্ত্র নিশ্চিত করতে সরকারের ইচ্ছামাফিক বা অনিয়মিত নির্বাচন আয়োজন করা যাবেনা। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য কার্যকরি, ও সার্বভৌম ক্ষমতা প্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান ও ব্যবস্থা তৈরী ও সংরক্ষণ করতে হবে।

অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পাশাপাশি, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় নির্বাচনের ফলাফল মেনে নিয়ে ক্ষমতাসীনদের অবশ্যই পরাজয় মেনে নিতে হবে এবং শান্তিপূর্ণভাবে পদত্যাগ করতে হবে। ক্ষমতার শান্তিপূর্ন পালাবদলই গণতন্ত্রের স্বরূপ দাড় করায়। নির্বাচনে পরাজিতদের পরাজয় মেনে নেয়ার মানসিকতা তৈরী ও চর্চা করতে হবে।
স্বাধীন বিচার বিভাগ
গণতন্ত্রের জন্য স্বাধীন বিচার বিভাগ অত্যাবশ্যক। বিচার ব্যবস্থা স্বাধীন কি না তা দেখলেই বোঝা যায় একটি দেশ গণতান্ত্রিক কিনা। স্বাধীন বিচার বিভাগ থাকলেই কেবল ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব। শাসক কিংবা শাসিত, গরীব কিংবা ধণী, প্রত্যেকের ক্ষেত্রেই ন্যায় বিচার নিশ্চিত করা বিচার বিভাগের দায়িত্ব। এবং বিচারের বিভাগ যদি স্বাধীন হয় কেবল তখনই ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব। সরকার যদি কোন বিচারিক সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে বা আদালতকে তার সুবিধার্থে ব্যবহার করে তবে সেই গণতন্ত্র টেকসই নয়, অতি শীঘ্রই সেই গণতন্ত্র ভেঙে পড়বে।
আইনের শাসন
আইনের শাসন হল এমন একটি রাজনৈতিক ব্যবস্থা যেখানে সকল নাগরিক, এমনকি সরকারের সদস্যরাও আইনের অধীন। গণতন্ত্রে, আইনের শাসনের অর্থ হলো, একটি দেশের আইন সব মানুষের জন্য সমানভাবে প্রযোজ্য, এবং প্রত্যেককে, বিশেষত সরকারকে অবশ্যই আইন মেনে চলতে হবে। আইনের শাসন গণতন্ত্রের একটি অপরিহার্য নীতি। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা না হলে গণতন্ত্রের মূলনীতিসমূহের বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য আইনের সার্বভৌমত্ব, আইনের সমতা, আইনের প্রাধান্য, আইনের কর্তৃত্ব, আইনের কছে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে।
গণতান্ত্রিক সরকার ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র কি এক?
না, গণতান্ত্রিক সরকার ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র এক নয়। গণতান্ত্রিক সরকার হল একটি শাসনব্যবস্থা যেখানে জনগণ সার্বভৌম ক্ষমতার অধিকারী এবং তারা তাদের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের মাধ্যমে সরকার পরিচালনা করে। অন্যদিকে, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হল এমন একটি রাষ্ট্র যেখানে গণতন্ত্রের মূলনীতিসমূহ, যেমন জনগণের সার্বভৌমত্ব, রাজনৈতিক অধিকার ও স্বাধীনতা, আইনের শাসন, এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতা রক্ষিত হয়।

গণতান্ত্রিক সরকার গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের একটি অপরিহার্য উপাদান। তবে, একটি গণতান্ত্রিক সরকারের উপস্থিতি মানেই সেই রাষ্ট্রটি গণতান্ত্রিক নয়। উদাহরণস্বরূপ, একটি রাষ্ট্রে যদি জনগণের সার্বভৌমত্ব ও রাজনৈতিক অধিকার ও স্বাধীনতা নিশ্চিত না হয়, তাহলে সেই রাষ্ট্রটিকে গণতান্ত্রিক বলা যায় না। একটি রাষ্ট্রকে গণতান্ত্রিক বলার জন্য নিম্নলিখিত শর্তগুলো পূরণ করতে হবেঃ
জনগণের সার্বভৌমত্বঃ জনগণ রাষ্ট্রের সার্বভৌম ক্ষমতার অধিকারী।
রাজনৈতিক অধিকার ও স্বাধীনতাঃ জনগণকে রাজনৈতিক অধিকার ও স্বাধীনতা, যেমন ভোটাধিকার, মত প্রকাশের স্বাধীনতা, সমাবেশের স্বাধীনতা, এবং ধর্মীয় স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে।
আইনের শাসনঃ সকল নাগরিক, এমনকি সরকারের সদস্যরাও আইনের অধীন।
মত প্রকাশের স্বাধীনতাঃ সকল নাগরিকের মত প্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে।
এই শর্তগুলো পূরণ না হলে সেই রাষ্ট্রটিকে গণতান্ত্রিক বলা যাবে না।
কখন বুঝবেন আপনার দেশ গণতান্ত্রিক দেশ নয়?
একবিংশ শতাব্দিতে এসে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা পরবির্তিত, পরিমার্জিত হয়ে এমন এক রূপ নিয়েছে যাকে আর যাইহোক, গণতন্ত্র বলা চলে না। এই গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা শুধু নামের মধ্যেই সীমিত হয়ে এসেছে। গত শতাব্দীর মত এই সময়ে এসে সামরিক শাসন না থাকলেও অনেক দেশের গণতান্ত্রিক উপায়ে নির্বচিত সরকারগুলো নির্বাচনকে অনেকটাই নির্বাসনে পাঠিয়ে দিয়েছে। সরকারগুলো সামরিক একনায়কদের মতই আচরণ করছে। বেসামরিক সরকার হয়েও তারা সামরিক একনায়কদের পদাঙ্ক অনুসরণ করছে। একটি দেশের গণতান্ত্রিক কিনা তা নির্ধারণের জন্য বিভিন্ন মানদণ্ড রয়েছে। এই মানদণ্ডগুলোর মধ্যে রয়েছেঃ
- জনগণের সার্বভৌমত্বঃ গণতন্ত্রে জনগণই রাষ্ট্রের সার্বভৌম ক্ষমতার অধিকারী। অর্থাৎ, জনগণের ইচ্ছাই রাষ্ট্রের শাসনব্যবস্থার ভিত্তি।
- রাজনৈতিক অধিকার ও স্বাধীনতাঃ গণতন্ত্রে জনগণের রাজনৈতিক অধিকার ও স্বাধীনতা নিশ্চিত করা হয়।এর মধ্যে রয়েছে ভোটাধিকার, মত প্রকাশের স্বাধীনতা, সমাবেশের স্বাধীনতা, সংগঠনের স্বাধীনতা, এবং ধর্মীয় স্বাধীনতা।
- আইনের শাসনঃ গণতন্ত্রে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করা হয়। অর্থাৎ, সকল নাগরিক, এমনকি সরকারের সদস্যরাও আইনের অধীন।
- জবাবদিহিতাঃ গণতন্ত্রে সরকারের সদস্যদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা হয়। অর্থাৎ, তারা জনগণের কাছে তাদের কাজের জন্য জবাবদিহি।
- বহুদলীয় ব্যবস্থাঃ গণতন্ত্রে বহুদলীয় ব্যবস্থা বিদ্যমান। অর্থাৎ, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মধ্যে প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার গঠিত হয়।

এই মানদণ্ডগুলোর যেকোনো একটির অনুপস্থিতি একটি দেশের গণতান্ত্রিক কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে পারে। আপনার দেশ গণতান্ত্রিক কিনা তা বুঝতে নিম্নলিখিত লক্ষণগুলো লক্ষ্য রাখতে পারেনঃ
- নির্বাচনঃ একটি গণতন্ত্রের প্রাণভোমরা হচ্ছে নির্বাচন। যদি নির্বাচনে ভোটাধিকার সীমিত থাকে, নির্বাচনে কারচুপি হয়, বা নির্বাচনের ফলাফল জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন না করে তাহলে আপনার দেশ গণতান্ত্রিক নয়। আবার, বেসামরিক একনায়কতন্ত্রের দেশেও নিয়মিত নির্বাচন হয়। তথাকথিত নির্বাচনের মাধ্যমে তারা তাদের ক্ষমতাকে পাকাপোক্ত করার চেষ্টা অব্যাহত রাখে। নির্বাচনের সময় তারা তাদের প্রতিন্দ্বন্দ্বিকে নানা কৌশলের মাধ্যমে নির্বাচনে অযোগ্য করে দেন। নির্বাচনে ভোটারদের উপস্থিতি নাই বললেই চলে, থাকলেও ডামি ভোটার, ডামি প্রার্থী অর্থাৎ নিজেদের দলের লোকজনই প্রতিপক্ষ সেজে জনগণকে ধোঁকা দেয়ার চেষ্টা করে, এমন নির্বাচনের দেশকে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা বলতে নারাজ রাষ্ট্রবিজ্ঞানীরা।
- মানবাধিকারঃ মানবাধিকারের মাধ্যমেই মানুষের মর্যাদা ও স্বাধীনতা রক্ষা করা সম্ভব। মানবাধিকারের মধ্যে রয়েছে ভোটাধিকার, মত প্রকাশের স্বাধীনতা, সমাবেশের স্বাধীনতা, সংগঠনের স্বাধীনতা, এবং ধর্মীয় স্বাধীনতা। এই অধিকারসমূহের মাধ্যমে মানুষ তার ব্যক্তিত্ব বিকাশ করতে পারে এবং পূর্ণাঙ্গ জীবনযাপন করতে পারে। যদি সরকার নাগরিকদের মৌলিক অধিকার ও স্বাধীনতা লঙ্ঘন করে তাহলে তাহলে তা গণতন্ত্রের মূলনীতির পরিপন্থী, আপনার দেশ গণতান্ত্রিক নয়।
- স্বাধীন মিডিয়াঃ স্বাধীন মিডিয়া গণতন্ত্রের একটি অপরিহার্য অংশ। স্বাধীন মিডিয়া জনগণকে সঠিক তথ্য ও ধারণা প্রদান করে। মিডিয়া সরকারের কার্যক্রমের উপর নজর রাখে এবং জনগণকে অবহিত করে। মিডিয়া সমাজের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করে এবং জনগণের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করে। সরকার যদি মিডিয়াকে তার স্বাধীনতা থেকে বঞ্চিত করে তাহলে তা জনগণের মতামত গঠনে হস্তক্ষেপ করে। স্বাধীন মিডিয়াকে নিয়ন্ত্রণ করার বিভিন্ন উপায় রয়েছে। সরকার মিডিয়াকে আইনি বা অর্থনৈতিক চাপ প্রয়োগ করে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। সরকার মিডিয়াকর্মীদের হয়রানি বা হত্যা করে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। সরকার মিডিয়াকে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসতে পারে। যদি সরকার স্বাধীন মিডিয়াকে নিয়ন্ত্রণ করে তাহলে আপনার দেশ গণতান্ত্রিক নয়।
- আইনের শাসনঃ আইনের শাসন বলতে এমন একটি শাসনব্যবস্থাকে বোঝায় যেখানে সকল নাগরিক, এমনকি সরকারের সদস্যরাও আইনের অধীন। আইনের শাসন নিশ্চিত হলে সকল নাগরিকের অধিকার ও স্বাধীনতা রক্ষা পায় এবং সমাজে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা হয়। যদি সরকার আইন প্রণয়ন ও প্রয়োগে অসমতা, বিচার বিভাগের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ, আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় ব্যর্থতার মাধ্যমে আইনের শাসনকে লঙ্ঘন করে তাহলে আপনার দেশ গণতান্ত্রিক নয়।
- জবাবদিহিতাঃ গণতন্ত্রে জনগণই রাষ্ট্রের সার্বভৌম ক্ষমতার অধিকারী। তাই, সরকারের সদস্যরা জনগণের প্রতি দায়বদ্ধ। সরকারের সদস্যরা জনগণের কাছ থেকে ক্ষমতা লাভ করে এবং জনগণের জন্য কাজ করে। তাই, তাদের কাজের জন্য জনগণের কাছে জবাবদিহি করতে হবে। জবাবদিহিতার মাধ্যমে সরকারের সদস্যদের কার্যক্রমের উপর জনগণের নিয়ন্ত্রণ নিশ্চিত হয়। জবাবদিহিতার মাধ্যমে সরকারের সদস্যরা জনগণের স্বার্থের প্রতি সচেতন থাকে এবং জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণে কাজ করে। যদি সরকারের সদস্যরা জনগণের কাছে জবাবদিহি না করে তাহলে আপনার দেশ গণতান্ত্রিক নয়।

এছাড়াও বিবিসি বাংলার একটি আর্টকেলে অগণতান্ত্রিক দেশগুলোর কিছু বৈশিষ্ট্য তুলে ধরা হয়েছে। অগণতান্ত্রিক ও একনায়কতন্ত্রের দেশগুলোতেঃ
- জনগণের মতামতকে সহিংসভাবে দমনের চেষ্টা করা হয়।
- সংসদে ক্ষমতাসীনদের একচ্ছত্র আধিপত্য থাকবে, সংসদ বিরোধী দল বিহীন একদলীয় হয়ে পড়ে।
- শাসক গোষ্ঠী ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য নিরাপত্তা বাহিনীকে রাজনৈতিক দমন-পীড়ন এবং সাধারণ মানুষকে দাবিয়ে রাখার মত নানা ধরণের আইন-বহির্ভূত কাজে ব্যবহার করে।
- সরকারের অংগ সংগঠনগুলো যেমনঃ নির্বাচন কমিশন, সংসদ, বিচার বিভাগ ইত্যাদি প্রতিষ্ঠানে রাজনৈতিক প্রভাব থাকে এবং সেগুলো ভঙ্গুর অবস্থার দিকে অগ্রসর হয়। এ প্রতিষ্ঠানগুলো কার্যত অকার্যকর হয়ে পড়ে, সরকারের পছন্দ অনুযায়ী কাজ করে বা কাজ থেকে বিরত থাকে।
- স্বাধীনভাবে মতপ্রকাশের ক্ষেত্রে সংবাদমাধ্যম, সাধারণ মানুষ বাধাগ্রস্ত হয়।
- ব্যাপকভাবে দুর্নীতির বিস্তার ঘটে। সরকারের বিভিন্ন অংগ প্রতিষ্ঠান যেমন বিচার বিভাগ, শাসন বিভাগের স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা লোপ করে দিয়ে অবাধ দুর্নীতির সুযোগ করে দেয়। বহির্বিশ্বে হাজার হাজার অর্থ সম্পদ নামে বেনামে পাচার করে এবং করতে সহায়তা করে। শাসকের অনুগতদের ব্যপকভাবে দুর্নীতির সুযোগ করে দেয়া হয়। আর যারা অনুগত নয়, তাদেরকে দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত করা হয়।
- শাসকগোষ্ঠী সব সময় ক্ষমতা হারানোর ভয়ে থাকে। তারা তাদের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের প্রতিশোধের ভয়ে অবাধ ও সুষ্ঠূ নির্বাচন আয়োজন করেনা। তারা ক্ষমতা কুক্ষিগত করতে সংবিধান পাল্টায়, এবং একদলীয় শাসন ব্যবস্থার দিকে ধাবিত হয়।
আপনার দেশে যদি এই লক্ষণগুলোর মধ্যে যেকোনো একটি বা অধিকাংশই দেখা যায় তাহলে অভিনন্দন এবং নিশ্চিত থাকুন আপনার দেশ গণতান্ত্রিক নয়! আপনার দেশ বেসামরিক স্বৈরশাসক বা একনায়কতন্ত্রের দেশ।
সম্পর্কিত আর্টিকেল
কোন আর্টিকেল খুঁজছেন?
আমাদের অনুসরণ করুন
এক নজরে এই আর্টিকেলে যেসব বিষয় আলোচনা করা হয়েছে…
সাম্প্রতিক আর্টিকেল
শেষপর্যন্ত কাশ্মীরের পেহেলগাম সন্ত্রাসী হামলাই কি ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ বাঁধাবে?
পেহেলগাম সন্ত্রাসী হামলা, ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের আশঙ্কা, সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিত, ও সীমান্তে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের অবনতি নিয়ে বিস্তারিত বিশ্লেষণ।
আদালত কী? আদালত কত প্রকার ও কি কি?
আদালত হলো রাষ্ট্র কর্তৃক স্বীকৃত সেই বৈধ প্রতিষ্ঠান, যেখানে প্রচলিত আইন অনুযায়ী বিরোধ নিষ্পত্তি, অপরাধের বিচার ও আইনি অধিকার রক্ষার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়।
ইক্যুইটি বা ন্যায়বিচার (Equity) কী? ইক্যুইটির ম্যাক্সিম সমূহ কী কী?
ইক্যুইটি বা ন্যায়বিচার (Equity) হল সাধারণ আইন (Common Law) এর শর্তের বাইরে গিয়ে ন্যায্যতা ও ন্যায় নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে সৃষ্টি হওয়া একটি স্বতন্ত্র বিচারব্যবস্থা
আব্রাহাম চুক্তিঃ মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতি, এবং ফিলিস্তিনের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা
আব্রাহাম চুক্তি হলো ইসরাইলের সাথে সংযুক্ত আরব আমিরাত ও বাহরাইন সহ আরব দেশগুলোর মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণের জন্য একাধিক চুক্তির সমষ্টি।
পশ্চিমা ডাবল স্ট্যান্ডার্ডঃ ফিলিস্তিনের লাশের ওপর দাঁড়িয়ে মানবাধিকারের বুলি!
পশ্চিমা ডাবল স্ট্যান্ডার্ড দেখলে মনে হয়, গাজায় কোনো মানুষ নিহত হয় না—শুধু "হামাস মেম্বার" হয়! আর ইউক্রেনের গমের ক্ষেত ধ্বংস হলে "হিউম্যানিটি ক্রাইম" হয় ।