২০২০ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের হোয়াইট হাউসে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় ইসরাইলের সঙ্গে সংযুক্ত আরব আমিরাত ও বাহরাইনের মধ্যে ‘আব্রাহাম অ্যাকর্ডস’ (Abraham Accords) নামক একটি  ‘ঐতিহাসিক শান্তি চুক্তি’ স্বাক্ষরিত হয়। এই চুক্তি সারা বিশ্বে, বিশেষ করে মুসলিম বিশ্বে, ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। ফিলিস্তিনি জনগণের অধিকার ও স্বাধীনতার প্রশ্নে দীর্ঘদিন ধরে অটল থাকা আরব রাষ্ট্রগুলোর অবস্থানে এই চুক্তি একটি মৌলিক পরিবর্তন এনেছে। চলুন জেনে নেই কী এই আব্রাহাম চুক্তি, এর মূল বিষয়গুলো কী কী, এবং এর পেছনের আসল উদ্দেশ্য কী ছিল। বিশেষ করে ফিলিস্তিনি জনগণের সাথে কীভাবে এই চুক্তির মাধ্যমে বিশ্বাসঘাতকতা করা হয়েছে এবং মধ্যপ্রাচ্যের শক্তির ভারসাম্য কীভাবে পরিবর্তিত হচ্ছে তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব।

আব্রাহাম চুক্তি কী?

আব্রাহাম চুক্তি (Abraham Accords) হল ২০২০ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের হোয়াইট হাউজে ইসরাইলের সাথে সংযুক্ত আরব আমিরাত ও বাহরাইনসহ আরব দেশগুলোর মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণের জন্য একাধিক চুক্তির সমষ্টি। ‘আব্রাহামিক ধর্মের’ (ইহুদি, খ্রিস্টান, ইসলাম) পিতৃপুরুষ ইব্রাহিম (আঃ) (আব্রাহাম) নবীর নামে চুক্তিটির নামকরণ করা হয়। চুক্তিটি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় সম্পন্ন হয়।

আব্রাহাম চুক্তির মূল লক্ষ্য ছিল ইসরাইলের সাথে আরব দেশগুলোর কূটনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক স্বাভাবিক করা। আনুষ্ঠানিকভাবে, এই চুক্তির বিনিময়ে ইসরাইল পশ্চিম তীর (ওয়েস্ট ব্যাংক) ও গাজা উপত্যকায় তাদের সার্বভৌমত্ব স্থগিত করবে এবং সেখানে নতুন বসতি স্থাপন বন্ধ রাখবে বলে প্রতিশ্রুতি দেয়। সেই সাথে ইসরাইল ও আরব দেশগুলোর মধ্যে বিনিয়োগ, পর্যটন, সরাসরি বিমান চলাচল, নিরাপত্তা, টেলিযোগাযোগ এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে সহযোগিতা বৃদ্ধি করার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়।

আব্রাহাম চুক্তিতে কারা স্বাক্ষর করেছে?

২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় আব্রাহাম চুক্তি স্বাক্ষরের মাধ্যমে ইসরাইলের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্বাভাবিক করে চারটি আরব দেশ। এর আগে ১৯৭৯ সালে মিসর এবং ১৯৯৪ সালে জর্ডান ইসরাইলের সঙ্গে চুক্তি করেছিল। এদের মধ্যে সরাসরি চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী এবং পরোক্ষভাবে সমর্থনকারী দেশগুলোর তালিকা নিচে দেওয়া হলোঃ

সরাসরি স্বাক্ষরকারী দেশঃ

১. সংযুক্ত আরব আমিরাত (UAE) ঃ প্রথম আরব দেশ যারা আনুষ্ঠানিকভাবে ইসরাইলকে স্বীকৃতি দেয় (১৩ আগস্ট ২০২০) ।

২. বাহরাইনঃ সংযুক্ত আরব আমিরাতের ১১ দিন পর ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২০ সালে চুক্তিতে স্বাক্ষর করে।

৩. মরক্কোঃ ডিসেম্বর ২০২০ সালে চুক্তিতে স্বাক্ষর করে।

৪. সুদানঃ অক্টোবর ২০২০ সালে চুক্তিতে সম্মত হয়, কিন্তু রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে আনুষ্ঠানিক স্বাক্ষর বিলম্বিত

পরোক্ষভাবে জড়িত দেশ ও ভূমিকাঃ

১. মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রঃ ট্রাম্প প্রশাসন এই চুক্তি প্রণয়নে মূল ভূমিকা পালন করে।

২. সৌদি আরবঃ আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাক্ষর না করলেও গোপনে সংযুক্ত আরব আমিরাত ও বাহরাইনকে চুক্তিতে স্বাক্ষর করিয়ে আব্রাহাম চুক্তির পক্ষেই অবস্থান জানান দেয় সৌদি আরব।

৩. মিসর ও জর্ডানঃ ইতোমধ্যে ইসরাইলের সাথে শান্তিচুক্তি করেছিল (মিসর ১৯৭৯, জর্ডান ১৯৯৪) ।

আব্রাহাম চুক্তির মূল বিষয়গুলো কি কি?

আব্রাহাম চুক্তির প্রধান বিষয়গুলো মূলত ইসরাইলের সাথে আরব দেশগুলোর কূটনৈতিক সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণ, অর্থনৈতিক সহযোগিতা, নিরাপত্তা সহযোগিতা এবং প্রযুক্তি বিনিময়। আর এসব কিছুর পেছনে কলকাঠি নেড়েছে মধ্যপ্রাচ্যে ইরানের ক্রমবর্ধমান রাজনৈতিক, সামরিক এবং অর্থনৈতিক প্রভাবকে দমন করার খায়েশ। নিচে আরো বিস্তারিত আলোচনা করা হলোঃ

কূটনৈতিক সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণ

আব্রাহাম চুক্তির প্রধান বিষয় হল ইসরাইলের সাথে স্বাক্ষরকারী আরব দেশগুলোর কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন। এর মাধ্যমে দূতাবাস খোলা, রাষ্ট্রদূত বিনিময়, এবং আন্তর্জাতিক মঞ্চে একে অপরের সমর্থন করার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এটি ইসরাইলের জন্য মধ্যপ্রাচ্যে তার কূটনৈতিক অবস্থান শক্তিশালী করার একটি বড় সুযোগ তৈরি করেছে।

অর্থনৈতিক সহযোগিতা

চুক্তিতে বাণিজ্য, বিনিয়োগ, পর্যটন এবং প্রযুক্তি বিনিময়ের ক্ষেত্রে ব্যাপক সহযোগিতার কথা বলা হয়েছে। বিশেষ করে সংযুক্ত আরব আমিরাত ও ইসরাইলের মধ্যে বিনিয়োগ ও প্রযুক্তি বিনিময়ের মাধ্যমে উভয় দেশের অর্থনীতি লাভবান হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই সংযুক্ত আরব আমিরাত ও ইসরাইলের মধ্যে ব্যবসা ও পর্যটন খাতকে লক্ষ্য করে সরাসরি বিমান চলাচল শুরু হয়েছে।

নিরাপত্তা সহযোগিতা

আব্রাহাম চুক্তির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক হল নিরাপত্তা সহযোগিতা অর্থাৎ, ইরানকে প্রতিরোধ করা। ইসরাইল ও উপসাগরীয় আরব দেশগুলো ইরানকে এই অঞ্চলের জন্য একটি বড় হুমকি হিসেবে দেখে। ইরান মধ্যপ্রাচ্যে প্রভাব বিস্তার করছে, বিশেষ করে ইরাক, সিরিয়া, লেবানন ও ইয়েমেনে। ইসরায়েলের সঙ্গে উপসাগরীয় দেশগুলোর সম্পর্ক উন্মুক্ত করা গেলে ইরানের বিরুদ্ধে মিত্র দেশগুলোকে নিয়ে আরও সুষ্ঠুভাবে কাজ করার সুযোগ তৈরি হবে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য। আব্রাহাম চুক্তির মাধ্যমে তারা ইরানের বিরুদ্ধে একটি যৌথ নিরাপত্তা জোট গঠন করার পথে এগিয়েছে। এছাড়া, সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলা, গোয়েন্দা তথ্য বিনিময় এবং সামরিক সহযোগিতার ক্ষেত্রেও চুক্তিতে সহযোগিতার কথা বলা হয়েছে।

প্রযুক্তি বিনিময়

ইসরাইল উন্নত প্রযুক্তি, বিশেষ করে কৃষি, জল ব্যবস্থাপনা, সাইবার নিরাপত্তা, এবং স্বাস্থ্যসেবা প্রযুক্তিতে অগ্রগামী। আব্রাহাম চুক্তির মাধ্যমে এই প্রযুক্তিগুলো উপসাগরীয় দেশগুলোতে রপ্তানি করা সহজ হবে। বিশেষ করে সংযুক্ত আরব আমিরাত যেখানে পানির অভাব একটি বড় সমস্যা, সেখানে ইসরাইলের জল সংরক্ষণ ও বিশুদ্ধকরণ প্রযুক্তি অত্যন্ত কার্যকর হতে পারে।

আব্রাহাম চুক্তির প্রভাবঃ মধ্যপ্রাচ্যের নতুন রাজনৈতিক দৃশ্যপট ও ফিলিস্তিনিদের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা

ভূ-রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটঃ ইরান-তুরস্ক বনাম ইসরাইল-সৌদি জোট

আব্রাহাম চুক্তি শুধুমাত্র কূটনৈতিক বা অর্থনৈতিক চুক্তি নয়, এর পেছনে রয়েছে গভীর ভূ-রাজনৈতিক কারণ। বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যের শক্তি ভারসাম্য, আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা, এবং আমেরিকার ভূমিকা এই চুক্তির পেছনে প্রধান চালিকা শক্তি হিসেবে কাজ করেছে। আব্রাহাম চুক্তি মধ্যপ্রাচ্যের শক্তি সমীকরণে একটি বড় পরিবর্তন এনেছে।

আব্রাহাম চুক্তির পেছনে সবচেয়ে বড় ভূ-রাজনৈতিক কারণ হল ইরানকে প্রতিরোধ করা। ইরান মধ্যপ্রাচ্যে তার প্রভাব বিস্তার করছে, বিশেষ করে ইরাক, সিরিয়া, লেবানন ও ইয়েমেনে। উপসাগরীয় আরব দেশগুলো ও ইসরাইল উভয়ই ইরানকে তাদের নিরাপত্তার জন্য হুমকি হিসেবে দেখে। আব্রাহাম চুক্তিতে স্বাক্ষর না করলেও ইরানের ক্রমবর্ধমান প্রভাব মোকাবেলা এবং আমেরিকার সাথে সম্পর্ক জোরদার করতে সৌদি আরব সংযুক্ত আরব আমিরাত ও বাহরাইনকে চুক্তিতে স্বাক্ষর করার অনুমতি দিয়ে পরোক্ষভাবে সমর্থন দিয়ে ইরানের বিরুদ্ধে একটি শক্তিশালী জোট গঠন করতে চেয়েছে।

অন্যদিকে আমেরিকা তার স্বার্থ রক্ষার জন্য মধ্যপ্রাচ্যে ইসরাইলের সাথে আরব দেশগুলোর সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণ চায়। ইসরায়েলের সঙ্গে উপসাগরীয় দেশগুলোর সম্পর্ক উন্মুক্ত করা গেলে ইরানের বিরুদ্ধে মিত্র দেশগুলোকে নিয়ে আরও সুষ্ঠুভাবে কাজ করার সুযোগ তৈরি হবে। এতে করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তার সামরিক উপস্থিতি কম করেও তার প্রভাব বজায় রাখতে পারবে। এটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভূ-রাজনৈতিক স্বার্থের সাথে পুরোপুরি সংগতিপূর্ণ।

এই ভূ-রাজনৈতিক স্বার্থের কারণেই আব্রাহাম চুক্তি মধ্যপ্রাচ্যকে দুটি শিবিরে বিভক্ত করেছেঃ একদিকে ইসরাইল, আরব উপসাগরীয় দেশগুলো ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, অন্যদিকে ইরান, তুরস্ক ও তাদের সমর্থিত গোষ্ঠীগুলো। যদিও তুরস্ক ইরানের সাথে কৌশলগত সহযোগিতা করছে, একই সাথে ইসরাইলের সাথেও বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে। এই নতুন মিত্রতা ও প্রতিদ্বন্দ্বিতা শুধু মধ্যপ্রাচ্যেই নয়, বরং গোটা বিশ্বেই প্রভাব ফেলছে। জোটগুলির এই প্রতিদ্বন্দ্বিতা লিবিয়া, সিরিয়া, ইয়েমেন, ও ইরাকে প্রক্সি যুদ্ধের আকারে প্রকাশ পেয়েছে।

 

ইসরাইলসৌদি জোটইরানতুরস্ক জোট
মার্কিন সমর্থনপুষ্টইসরাইল, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, মিসর, মরোক্কো ও জর্ডানস্থানীয় জনসমর্থনভিত্তিকইরান, তুরস্ক, সিরিয়া, কাতার, ইয়েমেন, লেবানন(হিজবুল্লাহ), ফিলিস্তিন(হামাস)
সেনা অভিযান, প্রযুক্তি ও অর্থনীতিতে শক্তিশালীসেনা অভিযান ও প্রক্সি যুদ্ধে সক্রিয়
স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে উপেক্ষাস্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে সমর্থন

 

মধ্যপ্রাচ্যের এই বিভাজনের প্রমাণ মিলেছে ২০২৩-এ লিবিয়ায়, যেখানে সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইসরাইলি ড্রোন ব্যবহার করে) তুরস্ক-সমর্থিত বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে।

ফিলিস্তিনিদের সাথে বিশ্বাসঘাতকতাঃ “শান্তি”র নামে ছুরিকাঘাত

আব্রাহাম চুক্তি নিয়ে সবচেয়ে বড় সমস্যা হল এটি ফিলিস্তিনি জনগণের স্বার্থকে সম্পূর্ণ উপেক্ষা করেছে। ফিলিস্তিনি নেতা মাহমুদ আব্বাস এই চুক্তিকে “ছুরিকাঘাত” বলে অভিহিত করেন।

২০০২ সালে সৌদি আরবের নেতৃত্বে আরব দেশগুলো “আরব শান্তি উদ্যোগ” নামে একটি প্রস্তাব দিয়েছিল, যেখানে বলা হয়েছিল ইসরাইল যদি ১৯৬৭ সালে দখল করা সমস্ত আরব ভূমি (পশ্চিম তীর, গাজা, পূর্ব জেরুজালেম, গোলান মালভূমি) থেকে সরে আসে এবং ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় সম্মত হয়, তাহলে আরব দেশগুলো ইসরাইলের সাথে স্বাভাবিক সম্পর্ক স্থাপন করবে। ২০০২ সালের আরব শান্তি উদ্যোগে আরোও বলা হয়েছিল, ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত না হলে কোনো আরব দেশ ইসরাইলের সাথে সম্পর্ক স্বাভাবিক করবে না। কিন্তু আব্রাহাম চুক্তির মাধ্যমে আরব দেশগুলো এই দীর্ঘদিনের অবস্থান থেকে সরে এসেছে। আরব দেশগুলো এখন ইসরাইলের সাথে সম্পর্ক উন্নতির জন্য ফিলিস্তিনি ইস্যুকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে না।

২০২০-এ আব্রাহাম চুক্তির মাধ্যমে সংযুক্ত আরব আমিরাত ও বাহরাইন সেই অঙ্গীকার ভেঙে ইসরাইলের সাথে বাণিজ্য, নিরাপত্তা চুক্তি করেছে। ফলে দীর্ঘদিনের ঐতিহাসিক আরব ঐক্যমত ভেঙে গেছে। এমনকি চুক্তির শর্তানুযায়ী ইসরাইল পশ্চিম তীরে নতুন বসতি স্থাপন বন্ধ রাখার প্রতিশ্রুতি দিলেও, চুক্তি স্বাক্ষরের মাত্র ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু নতুন বসতি নির্মাণের ঘোষণা দেন। নেতানিয়াহু ঘোষণা করেন যে ইসরাইল পশ্চিম তীরে তার দখলদারিত্ব ও সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠার পথ থেকে সরে আসবে না। এটি প্রমাণ করে যে ইসরাইল আব্রাহাম চুক্তিকে ফিলিস্তিনিদের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য নয়, বরং আরব দেশগুলোর সাথে সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণের জন্যই ব্যবহার করেছে।

ফলাফল? ২০২০ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত ইসরাইলি দখলদারিত্বের কারণে ১,২০০+ ফিলিস্তিনি নিহত এবং ২০,০০০+ গৃহহারা এবং ৭ অক্টোবর ২০২৩ থেকে এখন পর্যন্ত ফিলিস্তিন-ইসরাইলি যুদ্ধের কারণে ৬২,৬১৪+ ফিলিস্তিনি নিহত এবং প্রায় ২ মিলিয়ন ফিলিস্তিনি গৃহহারা। অথচ চুক্তির স্বাক্ষরকারী দেশগুলো এই নিপীড়নের বিরুদ্ধে কোনো প্রতিবাদ জানায়নি—বরং ইসরাইলের সাথে তাদের বাণিজ্য ২০২৩ নাগাদ ৩০০% বৃদ্ধি পেয়েছে।

ব্যবসায়িক স্বার্থ vs মানবাধিকারঃ পেট্রোডলার বনাম রক্ত

আব্রাহাম চুক্তির আসল চালিকাশক্তি অর্থনীতি ও নিরাপত্তা। স্বাক্ষরকারী দেশগুলো আর্থিক ও ব্যবসায়িক স্বার্থের কারণে ফিলিস্তিনি জনগণের মানবাধিকার ও জীবনকে উপেক্ষা করেছে। স্বাক্ষরকারী দেশগুলো নিজেদের ব্যবসায়িক সুবিধা অর্জনের জন্য ফিলিস্তিনিদের দীর্ঘদিনের সংগ্রামকে বিসর্জন দিয়েছে। সংযুক্ত আরব আমিরাত ও বাহরাইন ইসরাইলের সাথে চুক্তি করে প্রচুর অর্থনৈতিক সুবিধা পেয়েছে। বিশেষ করে উন্নত প্রযুক্তি, সামরিক সরঞ্জাম, এবং বিনিয়োগের ক্ষেত্রে তারা লাভবান হয়েছে। জানা যায়, এ আরব দেশগুলো আগে থেকেই ইসরাইলের সঙ্গে গোপন বাণিজ্যিক কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিল। এ চুক্তির ফলে শুধু সেই সম্পর্কের প্রকাশ্য সংস্করণ ঘটবে। উদাহরণস্বরূপঃ

  • সংযুক্ত আরব আমিরাত ইসরাইলের কাছ থেকে NSO Group-এর স্পাইওয়্যার প্রযুক্তি পেগাসাস সফটওয়্যার কিনে নিজেদের নাগরিকদের গতিবিধি নজরদারি করছে। ইসরাইল-আমিরাত বাণিজ্য ২০২৩ সালে১০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে , যার মধ্যে ৭০%ই ইসরাইলি সাইবার নিরাপত্তা প্রযুক্তি, কৃষি টেক ও ড্রোন । সংযুক্ত আরব আমিরাত যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান, MQ-9B ড্রোন ও অত্যাধুনিক মিসাইল ক্রয়সহ ২০২০-২০২৩ সালে ২৩ বিলিয়ন ডলার মূল্যের অস্ত্র কিনেছে। যদিও ইসরাইলের আপত্তিতে যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান ক্রয় চুক্তি বাতিল হয়ে যায়। আমিরাতের সার্বভৌম সম্পদ তহবিল (ADIA) ইসরাইলি স্টার্টআপে ২ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছে। তারা  ইসরাইলি সেটেলারদের সাথে ওয়েস্ট ব্যাংকে বাণিজ্যিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে!
  • ২০২২ সালে বাহরাইন ইসরাইল থেকে ৫০০ মিলিয়ন ডলার মূল্যের সোলার এনার্জি প্রযুক্তি কিনেছে। বাহরাইন ইসরাইলি ড্রোন কিনে তা ইয়েমেনের যুদ্ধে ব্যবহার করেছে। ইসরাইলি কোম্পানিIDE Technologies বাহরাইনে ৩০০ মিলিয়ন ডলার মূল্যের ডিস্যালিনেশন প্ল্যান্ট তৈরি করছে।
  • সৌদি আরব (যদিও আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাক্ষর করেনি) ইসরাইলের সাথে গোপনে তেল বাণিজ্য চালিয়েছে, যা ২০২৪-এ লিক হওয়া গোপন নথিতে প্রকাশ পায়। ২০২১ সালে সৌদি আরবের কাছে ৫ বিলিয়ন ডলার মূল্যের THAAD মিসাইল ডিফেন্স সিস্টেম বিক্রি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। ২০২২ সালে সৌদি তেল কোম্পানিআরামকো ইসরাইলি এনার্জি স্টার্টআপ StoreDot-এ ৫০০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছে। সৌদি ও ইসরাইলি গোয়েন্দা সংস্থাগুলো ইরানের ড্রোন হামলা প্রতিরোধে তথ্য শেয়ার করছে। এমনকি সৌদি আরব গোপনে ইসরাইলি “আয়রন ডোম” সিস্টেমের জন্য প্রযুক্তি কিনেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান (MBS) ২০২৩ সালে ঘোষণা দিয়েছেন, “সৌদি-ইসরাইল সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণ শুধু সময়ের ব্যাপার।”
  • সুদান এই চুক্তির মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে $১.২ বিলিয়ন ঋণও পেয়ে বিশ্বব্যাংকের ঋণ পরিশোধ করেছে, যা চুক্তির “ব্ল্যাকমেইল” হিসেবে সমালোচিত। এছাড়াও, যুক্তরাষ্ট্র সুদানকে “সন্ত্রাসবাদের রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকদের” তালিকা থেকে বাদ দিতে সম্মত হয়েছে। এই তালিকা থেকে অপসারণের ফলে সুদান বিশ্বব্যাংক এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ এবং সহায়তা পাওয়ার সুযোগ পায়। ইসরায়েলের উন্নত সেচ ও কৃষি প্রযুক্তি সুদানের খাদ্য উৎপাদন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সহায়তা করতে পারে। ২০২৩ এর জুলাইয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এন্টনি ব্লিংকেন ২০০ মিলিয়ন ডলার মানবিক সহায়তা প্রদান করে।
  • যুক্তরাষ্ট্র পশ্চিম সাহারা অঞ্চলে মরক্কোর দখলকে স্বীকৃতি দেয়ার বিনিময়ে মরক্কো ইসরাইলের সাথে সম্পর্ক স্বাভাবিক করে। মরক্কো ইসরাইল থেকে১.২ বিলিয়ন ডলার মূল্যের কৃষি প্রযুক্তি ও সেচ ব্যবস্থা আমদানি করেছে। মরক্কোর পর্যটন খাতে ইসরাইলি পর্যটকদের সংখ্যা ৪০০% বৃদ্ধি পেয়েছে।

এই লেনদেনের মূল্য কী? ফিলিস্তিনিদের অধিকারের বিনিময়ে আরব নেতারা প্রতি বছর ৪.৫ বিলিয়ন ডলার আয় করছেন। অথচ গাজার ৬২০০০+ মানুষ নিহত এবং ২৩ লক্ষ মানুষের ৮০% এখন বাস্তুহারা।

আব্রাহাম চুক্তির প্রতিক্রিয়াঃ শান্তির মুখোশে ভূ-রাজনীতি
আব্রাহাম চুক্তিকে ঘিরে বিশ্বজুড়ে প্রতিক্রিয়ার খেলায় মিশেছে দ্বিচারিতা, সুবিধাবাদ আর ক্ষমতার লড়াইয়ের গন্ধ। আব্রাহাম চুক্তি মধ্যপ্রাচ্যে শান্তির চেয়ে ভূরাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক স্বার্থের প্রতিফলন। ইরানকে কোণঠাসা করা, মার্কিন অস্ত্র বিক্রি, এবং আরব নেতাদের ক্ষমতা টিকিয়ে রাখাই এর মুখ্য উদ্দেশ্য । ফিলিস্তিনিরা আজও ইসরাইলি দখল ও সহিংসতার শিকার, কিন্তু চুক্তির স্বাক্ষরকারী দেশগুলো তাদের ভাগ্য পরিবর্তনে নীরব। এই চুক্তি প্রমাণ করে, আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে নৈতিকতা নয়, ক্ষমতা ও লাভের হিসাবই প্রধান।

পশ্চিমা দেশগুলো এই চুক্তিকে “ঐতিহাসিক শান্তির মাইলফলক” বলে প্রচার করলেও, মুসলিম বিশ্ব এটিকে “ফিলিস্তিনিদের রক্তে লেখা রাজনৈতিক চাল” বলে কটাক্ষ করেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন চুক্তির প্রশংসায় স্ট্যান্ডিং ওভেশন দিলেও তাদের স্বার্থপরতা স্পষ্ট—ট্রাম্প প্রশাসন চুক্তিকে নোবেল শান্তি পুরস্কারের দাবিদার বানানোর চেষ্টা করেছিল, আর বাইডেন ২০২১ সালে ক্ষমতায় এসে ইসরাইলকে ৩.৮ বিলিয়ন ডলারের সামরিক সাহায্য দিয়েছেন!

ইউরোপের দেশগুলো ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র গঠনের দাবিকে উপেক্ষা করলেও ইতালি, গ্রিসের মতো দেশগুলো ইসরাইলের সাথে গ্যাস পাইপলাইন চুক্তি করে নিজেদের পকেট গরম করেছে। অন্যদিকে, ব্রিটেন রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পর ইসরাইলকে “মধ্যপ্রাচ্যের গণতান্ত্রিক মিত্র” বানিয়ে ৫০০ মিলিয়ন পাউন্ডের বাণিজ্য চুক্তি সই করেছে। মজার ব্যাপার হলো, আমেরিকা সংযুক্ত আরব আমিরাতকে F-35 স্টেলথ জেট বিক্রির লোভ দেখিয়েছিল, যা ইসরাইলের “সাইবার আধিপত্য” নীতির সাথে সরাসরি সাংঘর্ষিক!

মুসলিম বিশ্বের প্রতিক্রিয়াও বিভক্ত—পাকিস্তান, ইরান, তুরস্ক সরাসরি চুক্তিকে “ফিলিস্তিনিদের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা” বলে নিন্দা জানালেও, ওআইসি (OIC) সৌদি আরব ও আমিরাতের চাপে কোনো কঠোর পদক্ষেপ নেয়নি। ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে ইসরাইলকে স্বীকৃতি না দেওয়ার ঘোষণা দিলেও, বাস্তবে তাদের বাণিজ্যিক স্বার্থে নীরবতা বজায় রাখছে। ২০২১ সালের এক গোপন রিপোর্টে স্বীকার করা হয়েছে, “আরব নেতাদের অধিকাংশই ফিলিস্তিন ইস্যুকে ব্যাবসার কাছে বিকিয়ে দিয়েছেন।” অথচ, ২০২০ সালের পর থেকে সংযুক্ত আরব আমিরাত ২৩ বিলিয়ন ডলার মূল্যের মার্কিন অস্ত্র কিনেছে!

চীন ও রাশিয়া কৌশলগত নীরবতা বজায় রেখেছে—চীন ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র গঠনের পক্ষে কথা বললেও আসলে আমেরিকার প্রভাব কমিয়ে নিজের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ (BRI) জোরদার করতে চায়। রাশিয়া ইসরাইল-আরব জোটকে ইরানের বিরুদ্ধে ব্যবহার করতে চাইলেও সিরিয়ায় ইরানের সাথে সামরিক জোট ভাঙেনি, বরং ২০২৩ সালে ইসরাইলকে S-400 মিসাইল ডিফেন্স সিস্টেম বিক্রির প্রস্তাব দিয়ে আমেরিকাকে ক্ষেপিয়েছে! একই সাথে চীন-ইসরাইল বাণিজ্য ২০২৩ সালে ২৫ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে, যা ফিলিস্তিনি অধিকারের বক্তব্যের সাথে সাংঘর্ষিক!

আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর ভূমিকাও দ্বিচারিতায় ভরা—জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের পক্ষে ভোট দিলেও নিরাপত্তা পরিষদে আমেরিকার ভেটো ইসরাইলি দখলদারিত্বকে বৈধতা দিচ্ছে। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের মতো সংস্থাগুলো চুক্তিকে “ফিলিস্তিনিদের প্রতি বৈষম্যের legalization” বলে সমালোচনা করলেও, আরব লীগ ২০০২ সালের শান্তি প্রস্তাব ভুলে গিয়ে এখন “বাণিজ্য আগে, নৈতিকতা পরে” নীতিতে চলছে।

বিশ্ব জনমতের দিকে তাকালেও চিত্রটা হতাশাজনক—২০২২ সালের পিউ রিসার্চ জরিপ বলছে, ৬৫% মুসলিম এই চুক্তিকে “অসৎ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত” মনে করেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় #BoycottAbrahamAccords হ্যাশট্যাগে ২.৫ মিলিয়ন পোস্ট শেয়ার হলেও, জাতিসংঘের কার্যকর ভূমিকা শূন্য। ২০২০-২০২৩ সালে ইসরাইলি দখলদারিত্বের প্রতিবাদে বিশ্বজুড়ে ১২০০+ বিক্ষোভ হয়েছে, কিন্তু আল জাজিরা বা টিআরটি ওয়ার্ল্ডের ব্যালেন্সড রিপোর্টিংয়ের বিপরীতে পশ্চিমা মিডিয়া (CNN, BBC) এখনও ইসরাইলি বয়ানকেই প্রাধান্য দেয়।

শেষ কথায় বলতেই হয়— আব্রাহাম চুক্তি প্রমাণ করে যে আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে মানবাধিকার ও ন্যায়বিচারের চেয়ে ক্ষমতা ও লাভের হিসাবই মুখ্য। পশ্চিমা দেশগুলো ইসরাইল-আরব জোটকে শক্তিশালী করে অস্ত্র বাণিজ্য ও ভূ-রাজনৈতিক প্রভাব বাড়াচ্ছে, আর মুসলিম নেতাদের একাংশ ফিলিস্তিনিদের রক্তের বিনিময়ে ক্ষমতার মসনদ পাকা করছে। তারা ইসরাইলের অবৈধ দখলদারিত্ব ও ফিলিস্তিনি জনগণের উপর অত্যাচার উপেক্ষা করে নিজেদের ব্যবসায়িক ও ভূ-রাজনৈতিক স্বার্থ রক্ষার পথ বেছে নিয়েছে। এর ফলে ফিলিস্তিনি জনগণ আরও বিচ্ছিন্ন ও অসহায় হয়ে পড়েছে এবং একটি স্বাধীন ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সম্ভাবনা আরও দূরে সরে গেছে। গাজায় অবরুদ্ধ ফিলিস্তিনিরা, পশ্চিম তীরের জবরদখল, আর বিশ্ব মিডিয়ার উপেক্ষা—এই হলো “শান্তি চুক্তি”র আসল চেহারা!

আর্টিকেলটি শেয়ার করুন

আন্তর্জাতিক রাজনীতি রাকিবুল ইসলামের বিশেষ আগ্রহের বিষয়। তাঁর লেখালেখির মূল বিষয়বস্তু হলো রাজনীতি, সরকার, এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্ক।

Leave A Comment

সম্পর্কিত আর্টিকেল

কোন আর্টিকেল খুঁজছেন?
আমাদের অনুসরণ করুন

লেখক হিসেবে আমাদের সাথে যোগ দিন

সাম্প্রতিক আর্টিকেল

  • গত ১৩ মে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সৌদি আরবের রিয়াদে এক বিনিয়োগ সম্মেলনে সিরিয়ার ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করার ঘোষণা দেন।

সিরিয়ার ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার যুক্তরাষ্ট্রেরঃ নতুন কূটনৈতিক অধ্যায়ের সূচনা

গত ১৩ মে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সৌদি আরবের রিয়াদে এক বিনিয়োগ সম্মেলনে সিরিয়ার ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করার ঘোষণা দেন।

  • গত ১২ই মে, ২০২৫ সাবেক শাসক দল আওয়ামী লীগের সব কার্যক্রম নিষিদ্ধ করে সরকারের প্রজ্ঞাপন জারির পর এবার আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিত করল নির্বাচন কমিশন।

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিত করল নির্বাচন কমিশনঃ রাজনৈতিক প্রভাব ও ভবিষ্যৎ পথ

গত ১২ই মে, ২০২৫ সাবেক শাসক দল আওয়ামী লীগের সব কার্যক্রম নিষিদ্ধ করে সরকারের প্রজ্ঞাপন জারির পর এবার আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিত করল নির্বাচন কমিশন।

  • পিকেকে-র বিলুপ্তির ঘোষণা: তুরস্কের সামনে শান্তি প্রতিষ্ঠার সুযোগ, নাকি কুর্দিদের জন্য অধিকার হারানোর নতুন ঝুঁকি?

পিকেকে-র বিলুপ্তি: তুরস্কের জন্য সুযোগ নাকি কুর্দিদের জন্য নতুন সংকট?

পিকেকে-র বিলুপ্তির ঘোষণা: তুরস্কের সামনে শান্তি প্রতিষ্ঠার সুযোগ, নাকি কুর্দিদের জন্য অধিকার হারানোর নতুন ঝুঁকি?

  • আজ ১০ মে, পাকিস্তান সেনাবাহিনী ভারতের বিরুদ্ধে "অপারেশন বুনিয়ান-উন-মারসুস" নামে ব্যাপক পাল্টা হামলা শুরু করে। এই অভিযানের নামটি কোরআনের সূরা আস-সাফের ৪ নম্বর আয়াত থেকে নেওয়া হয়েছে, যার অর্থ "গলিত সীসায় নির্মিত অভেদ্য প্রাচীর"। গত ৬ মে’র ভারতের "অপারেশন সিঁদুর"-এর জবাবে পাকিস্তান এই পাল্টা হামলা চালিয়েছে। যদিও এখন পর্যন্ত ক্ষয়ক্ষতির পরিমান ভারত প্রকাশ করেনি, পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর দাবি, এই অভিযানে জম্মু-কাশ্মীর, পাঞ্জাব, ও রাজস্থানের একাধিক সামরিক টার্গেটে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়েছে, যার মধ্যে ব্রাহ্মোস মিসাইল ডিপো এবং এস-৪০০ এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম অন্তর্ভুক্ত।

অপারেশন বুনিয়ান-উন-মারসুসঃ ভারতে পাকিস্তানের পাল্টা হামলা

পাকিস্তান ভারতের বিরুদ্ধে "অপারেশন বুনিয়ান-উন-মারসুস" নামে ব্যাপক পাল্টা হামলা শুরু করে। এই অভিযানের নামটির অর্থ "গলিত সীসায় নির্মিত অভেদ্য প্রাচীর"।

  • বিচারিক ব্যবস্থার মূল ভিত্তি হলো আদালতের এখতিয়ার। আদালতের এখতিয়ার তিন প্রকারঃ আদি এখতিয়ার, আপীল এখতিয়ার, এবং পরিদর্শন এখতিয়ার।

আদালতের এখতিয়ারঃ সংজ্ঞা, প্রকারভেদ ও বাংলাদেশে প্রয়োগ

বিচারিক ব্যবস্থার মূল ভিত্তি হলো আদালতের এখতিয়ার। আদালতের এখতিয়ার তিন প্রকারঃ আদি এখতিয়ার, আপীল এখতিয়ার, এবং পরিদর্শন এখতিয়ার।