প্রত্যেকটি মামলায় বিচার্য বিষয় প্রমাণের জন্য সাক্ষ্য-প্রমাণ আবশ্যক। মামলার বিষয়বস্তুর বিষয়ে চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য আদালত মামলার পক্ষগণের বক্তব্য অনুযায়ী বিচার্য বিষয় প্রমাণ করতে পক্ষ্যগণের সাক্ষ্য গ্রহণ করে। তবে যাচ্ছেতাই ভাবে সাক্ষ্য প্রদান করা যায় না। আবার যাচ্ছেতাই সাক্ষ্য হিসেবে প্রদান করা যাবেনা। এই সাক্ষ্য প্রদানের কিছু বিধিবদ্ধ নিয়মকানুন আছে। তাই সাক্ষ্য কি তা বুঝতে হবে। এই আর্টিকেলে সাক্ষ্য, সাক্ষ্যের প্রকারভেদ সম্পর্কে জানব।
সাক্ষ্য কাকে বলে?
বাংলা “সাক্ষ্য” শব্দটি এসেছে সংস্কৃত শব্দ “সাক্ষী” থেকে, যার অর্থ “দর্শক” বা “প্রমাণকারী”। আবার, বাংলায় “সাক্ষ্য” শব্দের ইংরেজি প্রতিশব্দ হল “evidence”। এই শব্দটি এসেছে ল্যাটিন শব্দ “evidere” থেকে, যার অর্থ “স্পষ্ট করা” বা “প্রমাণ করা”। ল্যাটিন শব্দ “evidere” দুটি শব্দের সমন্বয়ে গঠিত: “e” যার অর্থ “বাইরে” এবং “videre” যার অর্থ “দেখতে”। এইভাবে, “evidere” শব্দের অর্থ “বাইরে থেকে দেখা” বা “স্পষ্টভাবে দেখা”। এই অর্থটি বাংলায় “সাক্ষ্য” শব্দের অর্থের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ, যা এমন একটি বক্তব্য বা বিবৃতি যা কোনও ঘটনা বা বিষয়ের সত্যতা প্রমাণ করার জন্য দেওয়া হয়।
অর্থাৎ, আইনে, সাক্ষ্য হলো এমন কোনও তথ্য, যা কোন ঘটনা বা বিষয়ের সত্যতা, অসত্য, অনুমান, বা অন্যান্য বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে আমাদেরকে নির্ভুল ধারণা দেয়। অথবা এভাবেও বলা যায়, সাক্ষ্য হলো এমন একটি বক্তব্য বা বিবৃতি যা কোন ঘটনা বা বিচার্য বিষয় অথবা প্রাসঙ্গিক বিষয়ের সত্যতা প্রমাণ করার জন্য আদালতে প্রদান করা হয়।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বনাম হোমস (১৮৯৫) মামলায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্ট সাক্ষ্যকে সংজ্ঞায়িত করেছে “বিতর্কিত বিষয় সম্পর্কিত যেকোন অকাল্পনিক তথ্য, তার প্রভাব, প্রবণতা বা পরিকল্পনা যা মনের মধ্যে উক্ত বিষয়ের স্বীকৃতিমূলক বা অস্বীকৃতিমূলক ধারণা তৈরি করে”। ড. মুহাম্মদ শফিউর রহমান বনাম বাংলাদেশ সরকার (১৯৭৩) মামলায় সাক্ষ্য বলতে “বিচার্য বিষয়ের সাথে সংশ্লিষ্ট যেকোন তথ্য বা প্রমান”-কে সাক্ষ্য বলা হয়েছে।
What are Rights? Its Characteristics and Classification
বাংলাদেশের সাক্ষ্য আইন, ১৮৭২-এ যদিও সাক্ষ্য আইনে স্পষ্টভাবে সাক্ষ্যের কোন সংজ্ঞা দেয়া না থাকলেও আইনের ৩ ধারার ব্যাখ্যায় সাক্ষ্য হিসেবে ও বুঝাতে তিন ধরণের সাক্ষ্যের কথা উল্লেখ আছে। যথাঃ মৌখিক সাক্ষ্য, দালিলিল সাক্ষ্য ও শারীরিক বা ফরেনসিক সাক্ষ্য। যাইহোক, “সাক্ষ্য” বলতে এমন কোনও তথ্য বা প্রমাণ বোঝায় যা কোনও দাবি বা সিদ্ধান্তকে সমর্থন করে। এই তথ্য বা প্রমাণটি কোন ব্যক্তির বক্তব্য, কোন দলিল বা কোনও বস্তুগত প্রমাণ হতে পারে। অর্থাৎ, কোন বিচার্য বিষয় বা প্রাসঙ্গিক বিষয় প্রমাণ বা অপ্রমাণ করার জন্য যে সকল বিবৃতি, দলিলসমূহ আদালতে উপস্থাপন করা হয় তাকে সাক্ষ্য বলে।
সাক্ষ্য কত প্রকার ও কি কি?
বাংলাদেশের সাক্ষ্য আইন, ১৮৭২ অনুযায়ী সাক্ষ্য প্রধানত তিন ধরণের, প্রথমত মৌখিক সাক্ষ্য ও দ্বিতীয়ত, দালিলিক সাক্ষ্য ও শারীরিক বা ফরেনসিক সাক্ষ্য। তবে এই তিন ধরণের সাক্ষ্যের বাইরে সাক্ষ্যকে আরো কয়েক প্রকারভেদে আলোচনা করা যায়। বাংলাদেশের সাক্ষ্য আইন এবং প্রখ্যাত আইনবীদদের মতামত আলোচনা করে সাক্ষ্যের অন্যান্য প্রকারভেদ নিম্নরূপঃ
- প্রত্যক্ষ সাক্ষ্য ও অবস্থাগত সাক্ষ্য;
- প্রাথমিক ও গৌণ সাক্ষ্য;
- মৌখিক সাক্ষ্য, দালিলিক সাক্ষ্য অথবা শারীরিক বা ফরেনসিক সাক্ষ্য;
- মৌলিক সাক্ষ্য ও জনশ্রুতিমূলক সাক্ষ্য।
সাক্ষ্যের এই প্রকারভেদ নিচে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হলোঃ
প্রত্যক্ষ সাক্ষ্য ও অবস্থাগত সাক্ষ্য
প্রত্যক্ষ সাক্ষ্য বা (Direct Evidence)
প্রত্যক্ষ সাক্ষ্য বলতে বোঝায় কোন দলিল বা সাক্ষীর যে সমস্ত বিবৃতি মামলার বিচার্য বিষয়ের অস্তিত্ব বা অস্তিত্বহীনতা সম্পর্কে সরাসরি সমর্থণ যোগায়। যেমনঃ ক, খ কে হত্যা করেছে। গ সেই হত্যাকান্ডটি ঘটার সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিল এবং সরাসরি ঘটনাটি প্রত্যক্ষ করেছে। এক্ষেত্রে গ সাক্ষ্য প্রদান করলে গ এর সাক্ষ্যটি হবে প্রত্যক্ষ সাক্ষ্য। প্রত্যক্ষ সাক্ষ্যের চেয়ে উৎকৃষ্ট সাক্ষ্য হতে পারেনা। তাই আদালতে প্রত্যক্ষ সাক্ষ্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। তবে প্রত্যক্ষ সাক্ষের গুরুত্ব নির্ভর করে সাক্ষীর বিশ্বাসযোগ্যতার ওপর। সাক্ষ্য দেয়াই যদি সাক্ষীর পেশা হয়ে থাকে তাহলে তার সাক্ষ্যের গ্রহণযোগ্যতা প্রশ্নবিদ্ধ।
What is Law? What are the different types of law?
অবস্থাগত সাক্ষ্য (Circumstantial Evidence)
অবস্থাগত সাক্ষ্য কতগুলো অবস্থা ও পারিপার্শ্বিকতার সমন্বয় যেগুলি মূল বিচার্য বিষয়ের সাথে সংযুক্ত। কোন ঘটনা বা বিষয়ের প্রকৃতি বা আশেপাশের অবস্থার মাধ্যমে বিচার্য বিষয়ের সত্যতা বা অসত্যতা, অস্তিত্ব বা অস্তিত্বহীনতা সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেয়া যায়। যেমনঃ ক, খ কে হত্যা করছে। এই হত্যাকান্ড সকলের অগোচরে হলেও গ তার অবস্থান থেকে গুলি ছোড়ার ও খ -এর আর্তনাদ শুনতে পেয়েছে। ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে গ রক্তের দাগ ও বন্দুক দেখতে পেয়েছে। পরবর্তিতে তদন্তে জানা যায় বন্দুকটি ক-এর। এখানে গ যদি সাক্ষ্য দেয় তবে তার সাক্ষ্য অবস্থাগত সাক্ষ্য হিসেবে গণ্য হবে। অবস্থাগত সাক্ষ্যের গুরুত্ব অনুধাবন করে বলা হয় এইজন্য যে, ‘সাক্ষী মিথ্যা বলতে পারে, কিন্তু পারিপার্শ্বিক অবস্থা মিথ্যা বলেনা।‘
প্রাথমিক সাক্ষ্য ও গৌণ সাক্ষ্য
প্রাথমিক সাক্ষ্য (Primary Evidence)
প্রাথমিক সাক্ষ্য হল এমন সাক্ষ্য যা কোনও ঘটনা বা বিষয়ের প্রত্যক্ষদর্শীর কাছ থেকে প্রাপ্ত। প্রাথমিক সাক্ষ্য এক প্রকারের মৌল সাক্ষ্য। কোন বিচার্য বিষয়ে প্রাথমিক সাক্ষ্যের অস্তিত্ব থাকলে গে সেটাই প্রমাণ করতে হয়। এই ধরনের সাক্ষ্য সাধারণত মৌখিক বা দালিলিক আকারে থাকে। যেমনঃ একটি গাড়ি দুর্ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীর বক্তব্য বা একটি জমির মূল দলিল। বাংলাদেশের আইনে প্রাথমিক সাক্ষ্যকে সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য সাক্ষ্য হিসাবে বিবেচনা করা হয়।
গৌণ সাক্ষ্য (Secondary Evidence)
গৌণ সাক্ষ্য হল এমন সাক্ষ্য যা কোনও ঘটনা বা বিষয়ের প্রত্যক্ষদর্শীর কাছ থেকে প্রাপ্ত নয়। এই ধরনের সাক্ষ্য সাধারণত মাধ্যমিক সাক্ষ্য বা পরোক্ষ সাক্ষ্য হিসাবে পরিচিত। গৌণ বা মাধ্যমিক সাক্ষ্য প্রাথমিক সাক্ষ্যের উপর ভিত্তি করে। যেমনঃ একজন সাক্ষীর বক্তব্য যে তিনি একজন প্রত্যক্ষদর্শীর কাছ থেকে একটি গল্প শুনেছেন তা একটি মাধ্যমিক সাক্ষ্য। আবার, কোন মূল দলিলের প্রত্যয়িত নকল সাক্ষ্য হিসেবে গৌণ সাক্ষ্যের অন্তর্ভূক্ত। গৌণ সাক্ষ্যকে দ্বিতীয় শ্রেণির সাক্ষ্যও বলা হয়।
মৌখিক সাক্ষ্য, দালিলিক সাক্ষ্য অথবা শারীরিক ও ফরেনসিক সাক্ষ্য
মৌখিক সাক্ষ্য (Oral Evidence)
বাংলাদেশের সাক্ষ্য আইন, ১৮৭২ এর ৩ ধারা অনুযায়ী, বিচার্য বা তদন্তাধীন বিষযয়ে সাক্ষীকে যে সমস্ত বিবৃতি প্রদান করার অনুমতি আদালত দেয় বা সাক্ষীদের যেসব বিবৃতি আদালতের প্রয়োজন হয়, সেসব বিবৃতিকে মৌখিক সাক্ষ্য বলা হয়। যেমনঃ একজন ব্যক্তির বক্তব্য যে তিনি একটি চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছেন বা, একজন ব্যবসায়ীর বক্তব্য যে তিনি একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ দিয়েছেন।
What is Judicial Review? How does it shape the Law and Society?
মৌখিক সাক্ষ্য প্রদানের জন্য সাক্ষীকে আদালতে হাজির হতে হবে এবং তার বক্তব্য শপথ বা প্রতিশ্রুতি সাপেক্ষে দিতে হবে। তবে, মৌখিক সাক্ষ্যের মূল্য নির্ভর করে সাক্ষীর বিশ্বাসযোগ্যতার ওপর।
মৌখিক সাক্ষ্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ধরনের সাক্ষ্য। কোনও বিচার্য বিষয় বা প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে আদালতকে সরাসরি তথ্য প্রদান করে এই ধরনের সাক্ষ্য।
দালিলিক সাক্ষ্য (Documentary Evidence)
বাংলাদেশের সাক্ষ্য আইন, ১৮৭২ এর ৩ ধারা অনুযায়ী, যে সকল দলিল আদালতের পরিদর্শনের জন্য উপস্থাপন করা হয় সেসব দলিলকে দালিলিক সাক্ষ্য বলা হয়। দলিল বলতে বোঝায়, কোনও ঘটনা বা বিষয়ের প্রমাণ হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে এমন কোন লিখিত নথি বা বিবরণ। দালিলিক সাক্ষ্যের কিছু উদাহরণ হলঃ একটি চুক্তির মূল, একটি বিল, একটি জমির দলিল ইত্যাদি।
দালিলিক সাক্ষ্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ধরনের সাক্ষ্য। এই ধরনের সাক্ষ্য আদালতকে কোনও ঘটনা বা বিষয় সম্পর্কে তথ্য প্রদান করে যা মৌখিক সাক্ষ্যের মাধ্যমে প্রদান করা অসম্ভব বা কঠিন হতে পারে। বাংলাদেশের আইনে দালিলিক সাক্ষ্যকে মৌখিক সাক্ষ্যের চেয়ে কম গ্রহণযোগ্য ধরনের সাক্ষ্য হিসাবে বিবেচনা করা হয়।
শারীরিক বা ফরেনসিক সাক্ষ্য (Physical or Forensic Evidence)
সাক্ষ্য আইন, ১৮৭২ এর সর্বশেষ সংশোধনীতে শারীরিক ও ফরেনসিক সাক্ষ্য সংযোজন করা হয়। সাক্ষ্য আইনের ৩ ধারার বলা আছে, “রক্ত, বীর্য, চুল, শরীরের সমস্ত উপাদান, অঙ্গ বা অঙ্গের অংশ, ডিঅক্সিরাইবো নিউক্লিক অ্যাসিড (ডিএনএ), আঙুলের ছাপ, হাতের তালুর ছাপ, আইরিস ছাপ এবং পায়ের ছাপ বা অনুরূপ অন্য কোনও উপাদান বা বস্তু সম্পর্কিত সমস্ত উপকরণ বা বস্তু যেগুলো কোন অপরাধ সংঘটিত হয়েছে কিনা তা প্রতিষ্ঠিত করতে পারবে অথবা কোন অপরাধ ও অপরাধের শিকার বা কোন অপরাধ ও অপরাধীর মধ্যে সংযোগ বা সম্পর্ক স্থাপন করতে পারবে; এবং কোন বিষয়কে প্রমাণ বা অপ্রমাণ করতে পারবে এমন উপকরণ বা বস্তুকে শারীরিক বা ফরেনসিক প্রমাণ বলা হয়।”
মৌলিক সাক্ষ্য ও জনশ্রুতিমূলক সাক্ষ্য
মৌলিক সাক্ষ্য (Original Evidence)
যে সমস্ত মৌখিক বা দালিলিক সাক্ষ্য আদালতে আইনত গ্রহণযোগ্য সেসবগুলোকেই মৌলিক সাক্ষ্য বলা হয়। মৌলিক সাক্ষ্য হলো কোন ঘটনা বা ঘটনার প্রমাণ সম্পর্কে সরেজমিনে পাওয়া তথ্য, কোনভাবে অনুলিপি বা পরিবর্তন করা হয়নি এমন তথ্যের প্রাথমিক উত্স। এটি সাক্ষ্যের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য এবং নির্ভরযোগ্য ধরণ। মৌলিক সাক্ষ্যগুলি বস্তুগত হতে পারে, যেমন হত্যার অস্ত্র বা চুরি হওয়া গাড়ি, বা এটি অবস্তুগতও হতে পারে, যেমন সাক্ষীর সাক্ষ্য বা কোনও অপরাধের ভিডিও রেকর্ডিং প্রভৃতি। উদাহরণ হিসেবে ধরা যাক, ক খ-কে হত্যা করার সময় গ,খ-এর চিৎকার শুনতে পেয়েছে। আদালতে হাজির হয়ে গ নিজ কানে যে চিৎকার শুনেছে তা জানাবে। এভাবে যা সে নিজে অনুভূত করেছে সেটাই আদালতের কাছে প্রাথমিক সাক্ষ্য হিসেবে মৌলিক সাক্ষ্য।
How far Freedom of Expression is appropriate?
জনশ্রুতিমূলক সাক্ষ্য (Hearsay Evidence)
আদালতে বিবৃতি প্রদানকারী সাক্ষী যা নিজে প্রত্যক্ষ করেনি বা নিজে যা অনুভব করেনি, কিন্তু অন্য কোন ব্যক্তির নিকট হতে শুনেছেন বা জেনেছেন এমন কোন ঘটনা সম্পর্কে সাক্ষ্য দিলে তাকে জনশ্রুতিমূলক সাক্ষ্য বলে। জনশ্রুতিমূলক সাক্ষ্য হলো পরোক্ষ কোন উৎস থেকে শোনা বা জানা ও তা আদালতে বিবৃত করা। অন্য কথায়, শোনা সাক্ষ্য হলো জনশ্রুতিমূলক সাক্ষ্য । যেমনঃ ক খ-কে হত্যা করার সময় গ, খ-এর চিৎকার শুনতে পেয়েছে। গ-এর থেকে এই ঘটনা গল্পে গল্পে জেনেছে ঘ, চ, ছ। এখন ঘ, চ বা ছ-এর যে কেউ গ এর কাছে খ এর হত্যাকন্ডের ব্যপারে যা শুনেছে তা আদালতে যেয়ে সাক্ষ্য হিসেবে প্রদান করতে চায় তবে, আদালত ঘ, চ বা ছ এর কাউকেই এসব শোনা কথা সাক্ষ্য হিসেবে প্রদান করার অনুমতি দেবেন না। কারণ এগুলো জনশ্রুতিমূলক সাক্ষ্য হিসেবে গণ্য হবে, ‘Doctrine of best evidence’ বা ‘উৎকৃষ্ট সাক্ষ্য মতবাদ’ কে ভঙ্গ করা হবে, যা ন্যায় বিচারে বাধা প্রদান করতে পারে। এজন্য আইনবীদগণ গুটিকয়েক ব্যতিক্রম ছাড়া জনশ্রুতিমূলক সাক্ষ্যকে গ্রহণ করতে নারাজ। বাংলাদেশের সাক্ষ্য আইন, ১৮৭২-এর ৩২ ও ৩৩ ধারায় এ ব্যতিক্রমগুলি বর্ণিত রয়েছে।
সাক্ষ্য হচ্ছে আদালতে মামলার একটি অপরিহার্য বিষয়। কোনো মামলার সমাধানে সাক্ষ্যের গুরুত্ব অনেক। বিচার ব্যবস্থায় সঠিক বিচার নিশ্চিত করতে সাক্ষ্য একটি গুরুত্বপূর্ণ আইনি ধারণা। সাক্ষ্যের ওপরই নির্ভর করে বিচারিক প্রক্রিয়ার নির্ভুলতা, নির্ভেজালতা ও ন্যায়পরায়ণতা। একটি মামলার বিচার্য বিষয় প্রমাণের জন্য পক্ষদ্বয়ের দাবিকে প্রমাণ বা অপ্রমাণের জন্য সাক্ষ্য আবশ্যক।
সম্পর্কিত আর্টিকেল
কোন আর্টিকেল খুঁজছেন?
আমাদের অনুসরণ করুন
সাম্প্রতিক আর্টিকেল
শেষপর্যন্ত কাশ্মীরের পেহেলগাম সন্ত্রাসী হামলাই কি ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ বাঁধাবে?
পেহেলগাম সন্ত্রাসী হামলা, ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের আশঙ্কা, সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিত, ও সীমান্তে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের অবনতি নিয়ে বিস্তারিত বিশ্লেষণ।
আদালত কী? আদালত কত প্রকার ও কি কি?
আদালত হলো রাষ্ট্র কর্তৃক স্বীকৃত সেই বৈধ প্রতিষ্ঠান, যেখানে প্রচলিত আইন অনুযায়ী বিরোধ নিষ্পত্তি, অপরাধের বিচার ও আইনি অধিকার রক্ষার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়।
ইক্যুইটি বা ন্যায়বিচার (Equity) কী? ইক্যুইটির ম্যাক্সিম সমূহ কী কী?
ইক্যুইটি বা ন্যায়বিচার (Equity) হল সাধারণ আইন (Common Law) এর শর্তের বাইরে গিয়ে ন্যায্যতা ও ন্যায় নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে সৃষ্টি হওয়া একটি স্বতন্ত্র বিচারব্যবস্থা
আব্রাহাম চুক্তিঃ মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতি, এবং ফিলিস্তিনের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা
আব্রাহাম চুক্তি হলো ইসরাইলের সাথে সংযুক্ত আরব আমিরাত ও বাহরাইন সহ আরব দেশগুলোর মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণের জন্য একাধিক চুক্তির সমষ্টি।
পশ্চিমা ডাবল স্ট্যান্ডার্ডঃ ফিলিস্তিনের লাশের ওপর দাঁড়িয়ে মানবাধিকারের বুলি!
পশ্চিমা ডাবল স্ট্যান্ডার্ড দেখলে মনে হয়, গাজায় কোনো মানুষ নিহত হয় না—শুধু "হামাস মেম্বার" হয়! আর ইউক্রেনের গমের ক্ষেত ধ্বংস হলে "হিউম্যানিটি ক্রাইম" হয় ।