১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সম্পর্ক ছিল অত্যন্ত উত্তেজনাপূর্ণ। মুক্তিযুদ্ধের ফলে উভয় পক্ষই ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হয়। এই পরিস্থিতিতে দীর্ঘস্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ১৯৭২ সালের জুলাই মাসে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে স্বাক্ষরিত হয় সিমলা চুক্তি। এই চুক্তির মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান উত্তেজনার অবসান ঘটানোর চেষ্টা করা হয়। তবে, সিমলা চুক্তি সত্যিই কি শান্তির পথ সুগম করেছিল, নাকি নতুন জটিলতা সৃষ্টি করেছিল, সেই প্রশ্ন এখনও ইতিহাসবিদ ও রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মাঝে আলোচিত।এই নিবন্ধে ১৯৭২ সালের সিমলা চুক্তির প্রেক্ষাপট, বিষসমূহ নিয়ে আলোচনা করব।
সিমলা চুক্তির পটভূমি
১৯৭১ সালের ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের পরিণতি হিসেবে সিমলা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। এই চুক্তির প্রেক্ষাপট বুঝতে হলে আমাদের যুদ্ধের পূর্ববর্তী ঘটনাবলী এবং যুদ্ধের প্রভাব বিশ্লেষণ করতে হবে।
১৯৭১ সালের মার্চ মাসে পাকিস্তান সেনাবাহিনী পূর্ব পাকিস্তানে (বর্তমান বাংলাদেশ) নিরস্ত্র বাঙালিদের উপর নির্মম গণহত্যা শুরু করে। লক্ষ লক্ষ নিরীহ মানুষকে হত্যা করা হয়। এর প্রতিবাদে পূর্বপাকিস্তানের মানুষ মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। মুক্তিবাহিনী নামে একটি স্বাধীনতা সংগ্রামী সংগঠন গঠিত হয়। ভারত এই মুক্তিযুদ্ধে পূর্বপাকিস্তানের পক্ষে দাঁড়ায় এবং মুক্তিবাহিনীকে ভারত প্রশিক্ষণ এবং সহায়তা প্রদান করে।
How minorities are being oppressed in India?
ডিসেম্বর মাসে ভারত সরাসরি যুদ্ধে যোগদান করে এবং মাত্র ১৩ দিনের মধ্যে পাকিস্তান সেনাবাহিনী আত্মসমর্পণ করে। যুদ্ধের ফলে পূর্ব পাকিস্তান স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্রে পরিণত হয়। যুদ্ধোত্তর পরিস্থিতিতে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা চরম পর্যায়ে পৌঁছায়। পাকিস্তানের ৯৩ হাজার যুদ্ধবন্দী ভারতের হেফাজতে ছিল।

লাদাখের গালওয়ানে চীন-ভারত সংঘর্ষঃ টক্করে কে জিতবে?
এই পরিস্থিতিতে শান্তি পুনরুদ্ধারের জন্য দুই দেশ আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের সিদ্ধান্ত নেয়। ১৯৭২ সালের ২৮ জুন ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী এবং পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী জুলফিকার আলী ভুট্টো ভারতের হিমাচল প্রদেশের সিমলা শহরে যুদ্ধের পর শান্তি প্রতিষ্ঠা করার জন্য কূটনৈতিক আলোচনা শুরু করেন। এই দীর্ঘ আলোচনার পর ২ জুলাই তারা একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেন যা সিমলা চুক্তি নামে পরিচিত।
সিমলা চুক্তির বিষয়সমূহ
সিমলা চুক্তির প্রধান বিষয় ছিল যুদ্ধের ফলে সৃষ্ট সমস্যাগুলো সমাধান করা এবং ভারত-পাকিস্তান মধ্যে শান্তি ও সহযোগিতার দুয়ার খোলা। এই চুক্তির মাধ্যমে দুই দেশ নিম্নলিখিত বিষয়গুলো নিয়ে চুক্তি করেনঃ
- ভারত ও পাকিস্তানের সকল বৈরিতার অবসান ঘটানো, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সকল ক্ষেত্রে বন্ধুত্ব ও সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করা।
- ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে বিবাদিত সীমান্ত বিষয়ে সমাধানের জন্য আলোচনা করার সুযোগ রাখা।
- ভারত পাকিস্তানের কাছ থেকে ১৯৭১ সালের ১৭ ডিসেম্বর থেকে যুদ্ধের ফলে গ্রেফতার হওয়া ৯৩ হাজার পাকিস্তানী সৈন্যদের মুক্তি দেওয়া।
Sheikh Mujibur Rahman: The Architect of Bangladesh
সিমলা চুক্তির প্রধান বিষয়গুলি নিম্নরূপ:
কাশ্মীর সীমান্ত নির্ধারণ
সিমলা চুক্তির একটি প্রধান বিষয় ছিল কাশ্মীরের সীমান্ত নির্ধারন করা। বিতর্কিত কাশ্মীর ভারত ও পাকিস্তান দুইটি অংশে বিভক্ত। এই এলাকাকে কেন্দ্র করে দুই দেশের মধ্যে অনেকগুলো যুদ্ধ হয়েছে। সিমলা চুক্তিতে দুই দেশ একমত হয় যে তারা কাশ্মীরের সীমান্ত নির্ধারণের জন্য দ্বিপাক্ষিক আলোচনা করবে। দুই দেশ কাশ্মীরের সমস্যার সমাধানের জন্য কাশ্মীরী জনগোষ্ঠীর মতামত ও অংশগ্রহণের সুযোগ দেয়ার ক্ষেত্রেও একমত হয়। এছড়া কাশ্মীরের সীমান্ত নির্ধারণের জন্য যুদ্ধের পর যে লাইনে সেনাবাহিনী থামেছিল তাকেই লাইন অব কন্ট্রোল হিসেবে স্থায়ীভাবে স্বীকার করবে।
ঠগীঃ ব্রিটিশ ভারতের নীতিবান খুনী
যুদ্ধবন্দীদের প্রত্যাবাসন
সিমলা চুক্তিতে আরেকটি বিষয় ছিল যুদ্ধবন্দীদের প্রত্যাবাসন। যুদ্ধের শেষে ভারতের হাতে আটকে পড়া ৯৩ হাজার পাকিস্তানী সৈনিকদের পাকিস্তানে ফিরিয়ে দেওয়ার ব্যাপারে দুই দেশ একমত হয়েছিল। তারা এই বিষয়ে একটি আলাদা চুক্তি স্বাক্ষর করবে বলে একমত হয়।
দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক উন্নয়নে প্রতিশ্রুতি
- সিমলা চুক্তিতে ভারত ও পাকিস্তান দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। “ভারত ও পাকিস্তান সরকার তাদের মধ্যে সমস্ত বৈরিতা সমাপ্ত করে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান প্রতিষ্ঠার অঙ্গীকার করে।” উভয় দেশই তাদের সকল বৈরিতার অবসান ঘটানো, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সকল ক্ষেত্রে বন্ধুত্ব ও সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক স্থাপন ও বজায় রাখার জন্য এবং তাদের মধ্যে বিদ্যমান বিরোধ ও মতবিরোধ শান্তিপূর্ণ উপায়ে সমাধানের জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করে। এছাড়াও ভারত ও পাকিস্তান নিজেদের মধ্যে বাণিজ্য ও যোগাযোগ পুনঃস্থাপন, সাংস্কৃতিক বিনিময় বৃদ্ধি ও দ্বিপাক্ষিক সমস্যাগুলি আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করবে একমত হয়।
সিমলা চুক্তির ইতিবাচক দিক
সিমলা চুক্তির একটি দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ছিল ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কে। এই চুক্তি দুই দেশের মধ্যে শান্তি ও সহযোগিতার একটি নতুন আদর্শ স্থাপন করেছিল। সিমলা চুক্তির ইতিবাচক দিকগুলি নিম্নরূপঃ
- যুদ্ধোত্তর উত্তেজনা হ্রাস: চুক্তি স্বাক্ষরের ফলে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে মধ্যে সামরিক সংঘর্ষের সম্ভাবনা কমেছিল।
- যুদ্ধবন্দিদের মুক্তি: চুক্তির অধীনে ভারত ৯৩ হাজার পাকিস্তানি যুদ্ধবন্দিকে মুক্তি দিয়েছিল।
- কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনঃপ্রতিষ্ঠা: চুক্তি স্বাক্ষরের পর ভারত ও পাকিস্তান একে অপরের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনঃপ্রতিষ্ঠা করে।
- সীমান্ত নিরাপত্তা: চুক্তিতে ‘নিয়ন্ত্রণ রেখা’ (Line of Control) স্বীকৃত হওয়ায় সীমান্তে কিছুটা স্থিতিশীলতা আসে।
- আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের নীতি: চুক্তিতে দু’দেশ ‘আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধান’ নীতিতে সম্মত হয়। সিমলা চুক্তি কোনো তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপ ব্যতীত দুই দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা ও সমাধানের পথ খুলে দিয়েছিল।
মুসকান খানের হিজাব ও ভারতের অসাম্প্রদায়িকতা
সিমলা চুক্তির নেতিবাচক দিক
সিমলা চুক্তি, যদিও ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে স্বাক্ষরিত হয়েছিল, এর কিছু নেতিবাচক দিকও ছিল।
- কাশ্মীর সমস্যা অমীমাংসিতঃ সিমলা চুক্তির একটি নেতিবাচক দিক ছিল যে এটি কাশ্মীর সমস্যার সমাধানে কোনো কার্যকরি ও স্থায়ী পদক্ষেপ নিতে পারেনি। চুক্তির ৬(ii) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে যে, দুই দেশ “ভবিষ্যতে পারস্পরিক আলোচনার মাধ্যমে জম্মু ও কাশ্মীরের সকল বিতর্কিত বিষয়ের সমাধান করবে”। কিন্তু এই আলোচনা কখনোই সফল হয়নি এবং কাশ্মীর একটি অমীমাংসিত এলাকা হিসেবে থেকে গেছে। পরবর্তিতে আরো বেশ কয়েকটি ছোটখাটো যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে উভয় দেশ।
- সিমলা চুক্তিতে বাংলাদেশের অনুপস্থিতিঃ সিমলা চুক্তির প্রেক্ষাপটে অনেক গুরুত্বপূর্ন অবদান বাংলাদেশের থাকলেও সিমলা চুক্তিতে বাংলাদেশকে পক্ষ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।ফলে, সিমলা চুক্তিতে বাংলাদেশের ভূমিকা রাখার সুযোগ পুরোপুরি অস্বীকার করা হয়, অথচ বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামকে ঘিরেই সিমলা চুক্তি করা হয়।
- মুক্তিযোদ্ধাদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিতঃ সিমলা চুক্তির আরেকটি নেতিবাচক দিক ছিল যে, এখানে মুক্তিযোদ্ধাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে কোনো স্পষ্ট কথা বলেনি। মুক্তিযোদ্ধারা বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছিলেন। কিন্তু সিমলা চুক্তিতে তাদের কোনো উল্লেখ হয়নি।
- ‘নিয়ন্ত্রণ রেখা‘ কে স্থায়ী সীমানা হিসেবে গ্রহণঃ চুক্তিতে ‘নিয়ন্ত্রণ রেখা’ কে স্থায়ী সীমানা হিসেবে গ্রহণ করা হয়, যা কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা কেড়ে নেওয়ার শামিল।
শান্তির পথ না জটিলতার সূচনা
সিমলা চুক্তি একটি জটিল ইতিহাসের আলোচনার বিষয়। এটি ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের পর শান্তি প্রতিষ্ঠায় ভারত পাকিস্তান দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেছিল। এটি বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও জাতীয় পরিচয় গঠনে সহায়তা করেছিল। কিন্তু এটি কাশ্মীর সমস্যার সমাধানে ব্যর্থ হয়েছিল এবং বাংলাদেশকে উপেক্ষা করে স্বাধীনতা যুদ্ধে বাংলাদেশের অবদান কৃতিত্বকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। যারফলে বাংলাদেশের বৈশ্বিক ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে ভারতের সহযোগিতা অবশ্যই অনস্বীকার্য। কিন্তু স্বাধীনতা যুদ্ধ ও যুদ্ধোত্তর সময়ে ভারতের কার্যকলাপ বাংলাদেশের জনগণকে সন্দিহান করে তোলে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে বাংলাদেশের প্রতিনিধির কাছে আত্মসর্মর্পণ না করে যৌথবাহিনী নেতৃত্বের কাছে আত্মসমর্পণ, পাকিস্তানিদের সমর্পণকৃত অস্ত্রশস্ত্র ভারতের হেফাজতে, সিমলা চুক্তিতে বাংলাদেশের অনুপস্থিতি এসব কিছুই যেন বিতর্কিত এক রাজনীতির পরিচয় বহন করে। প্রশ্ন তোলে সিমলা চুক্তিকি একটি শান্তির পথ নাকি নতুন কোন জটিলতার সূচনা? এই প্রশ্নের উত্তর সহজ নয়।এটি নির্ভর করে যে কোন দৃষ্টিভঙ্গি থেকে এটি বিচার করা হচ্ছে। সে আলোচনা অন্য সময়ে করা যাবে।
সম্পর্কিত আর্টিকেল
কোন আর্টিকেল খুঁজছেন?
আমাদের অনুসরণ করুন
এক নজরে এই আর্টিকেলে যেসব বিষয় আলোচনা করা হয়েছে…
সাম্প্রতিক আর্টিকেল
শেষপর্যন্ত কাশ্মীরের পেহেলগাম সন্ত্রাসী হামলাই কি ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ বাঁধাবে?
পেহেলগাম সন্ত্রাসী হামলা, ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের আশঙ্কা, সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিত, ও সীমান্তে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের অবনতি নিয়ে বিস্তারিত বিশ্লেষণ।
আদালত কী? আদালত কত প্রকার ও কি কি?
আদালত হলো রাষ্ট্র কর্তৃক স্বীকৃত সেই বৈধ প্রতিষ্ঠান, যেখানে প্রচলিত আইন অনুযায়ী বিরোধ নিষ্পত্তি, অপরাধের বিচার ও আইনি অধিকার রক্ষার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়।
ইক্যুইটি বা ন্যায়বিচার (Equity) কী? ইক্যুইটির ম্যাক্সিম সমূহ কী কী?
ইক্যুইটি বা ন্যায়বিচার (Equity) হল সাধারণ আইন (Common Law) এর শর্তের বাইরে গিয়ে ন্যায্যতা ও ন্যায় নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে সৃষ্টি হওয়া একটি স্বতন্ত্র বিচারব্যবস্থা
আব্রাহাম চুক্তিঃ মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতি, এবং ফিলিস্তিনের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা
আব্রাহাম চুক্তি হলো ইসরাইলের সাথে সংযুক্ত আরব আমিরাত ও বাহরাইন সহ আরব দেশগুলোর মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণের জন্য একাধিক চুক্তির সমষ্টি।
পশ্চিমা ডাবল স্ট্যান্ডার্ডঃ ফিলিস্তিনের লাশের ওপর দাঁড়িয়ে মানবাধিকারের বুলি!
পশ্চিমা ডাবল স্ট্যান্ডার্ড দেখলে মনে হয়, গাজায় কোনো মানুষ নিহত হয় না—শুধু "হামাস মেম্বার" হয়! আর ইউক্রেনের গমের ক্ষেত ধ্বংস হলে "হিউম্যানিটি ক্রাইম" হয় ।