প্রটেক্টোরেট রাষ্ট্রের ধারণাটি আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ এবং জটিল বিষয়। এটি একটি বিশেষ ধরণের শাসনব্যবস্থা যেখানে একটি দুর্বল বা ছোট রাষ্ট্র একটি শক্তিশালী রাষ্ট্রের অধীনে থেকে কিছুটা সীমিত স্বাধীনতা ভোগ করে। প্রটেক্টোরেট রাষ্ট্রের মূল বৈশিষ্ট্য হলো এটি নিজস্ব সার্বভৌমত্ব বজায় রাখলেও কৌশলগত এবং সামরিক ক্ষেত্রে শক্তিশালী রাষ্ট্রের উপর নির্ভরশীল থাকে। ইতিহাসের বিভিন্ন সময়ে অনেক রাষ্ট্রকে প্রটেক্টোরেট রাষ্ট্র হিসেবে শাসিত হতে দেখা গেছে, এবং আধুনিক যুগেও এর প্রভাব লক্ষ্য করা যায়। এই নিবন্ধে আমরা প্রটেক্টোরেট রাষ্ট্রের ধারণা, এবং আধুনিক প্রেক্ষাপটে এর প্রাসঙ্গিকতা নিয়ে আলোচনা করবো।
প্রটেক্টোরেট রাষ্ট্র কাকে বলে?
প্রটেক্টোরেট রাষ্ট্র (Protectorate State) বলতে এমন একটি রাষ্ট্রকে বোঝায়, যা অন্য একটি শক্তিশালী রাষ্ট্রের রাজনৈতিক ও সামরিক সুরক্ষার অধীনে থাকে। প্রটেক্টোরেট রাষ্ট্র এককভাবে পুরোপুরি স্বাধীন না হলেও নির্দিষ্ট কিছু বিষয়ে সীমিত স্বাধীনতা ভোগ করে, এবং সামরিক ও কূটনৈতিক ক্ষেত্রে প্রধানত একটি শক্তিশালী রাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণে থাকে। এই শক্তিশালী রাষ্ট্রকে প্রটেক্টোরেটের প্রতিপালক (protectorate) বলা হয়। এই প্রেক্ষাপটে সুরক্ষাকৃত রাষ্ট্র নিজস্ব সার্বভৌমত্ব কিছুটা বজায় রাখতে পারলেও, মূলত সেই শক্তিশালী রাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণের আওতায় থাকে। সহজভাবে বললে, প্রটেক্টোরেট রাষ্ট্র তার সার্বভৌমত্ব পুরোপুরি ধরে রাখতে সক্ষম নয় এবং নির্দিষ্ট বিষয়ে পৃষ্ঠপোষক রাষ্ট্রের ওপর নির্ভরশীল থাকে।

এ ধরনের সম্পর্ক সাধারণত দুই দেশের মধ্যে কোনো চুক্তির মাধ্যমে স্থাপিত হয়, যেখানে দুর্বল রাষ্ট্রটি সামরিক সুরক্ষা ও আন্তর্জাতিক সহায়তার বিনিময়ে শক্তিশালী রাষ্ট্রের নির্দেশ মেনে চলে, কিন্তু অভ্যন্তরীণ শাসনব্যবস্থা এবং আইনি বিষয়গুলোতে সেই রাষ্ট্র কিছুটা স্বাধীনতা ভোগ করে। প্রটেক্টোরেট রাষ্ট্রের মাধ্যমে মূলত একটি শক্তিশালী রাষ্ট্র তার নিজের কৌশলগত স্বার্থ নিশ্চিত করে থাকে।
একটি প্রটেক্টোরেট রাষ্ট্র সাধারণত দুটি প্রধান বৈশিষ্ট্য দ্বারা চিহ্নিত করা হয়:
১. সামরিক ও কূটনৈতিক সুরক্ষা: প্রটেক্টোরেট রাষ্ট্রের সামরিক প্রতিরক্ষা এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্ক পৃষ্ঠপোষক রাষ্ট্রের দ্বারা পরিচালিত হয়। এ ধরনের রাষ্ট্র নিজস্ব সামরিক বাহিনী রাখলেও, তা যথেষ্ট শক্তিশালী হয় না এবং প্রায়ই পৃষ্ঠপোষক রাষ্ট্রের সামরিক শক্তির ওপর নির্ভরশীল থাকে। সেই সঙ্গে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক এবং চুক্তির বিষয়েও পৃষ্ঠপোষক রাষ্ট্রের প্রভাব থাকে।
২. আভ্যন্তরীণ শাসন ক্ষমতা: প্রটেক্টোরেট রাষ্ট্রগুলো সাধারণত তাদের অভ্যন্তরীণ শাসন ও প্রশাসনিক কাঠামোর ওপর নির্দিষ্ট মাত্রায় নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখে। এটি অভ্যন্তরীণ আইন, বিচারব্যবস্থা, এবং কিছু সামাজিক ও অর্থনৈতিক নীতি প্রণয়ন করতে পারে। তবে, গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক এবং কূটনৈতিক সিদ্ধান্তগুলো পৃষ্ঠপোষক রাষ্ট্রের মাধ্যমে নেওয়া হয়।
স্বৈরশাসকের উত্থান, জনগণের প্রতিরোধ ও স্বৈরশাসকের পতনের উপায়
প্রটেক্টোরেট ধারণাটি প্রাচীন ইতিহাসে শিকড় গেড়েছে, তবে এটি মূলত ঔপনিবেশিক যুগে বেশি জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। ঊনবিংশ শতাব্দীর ঔপনিবেশিক যুগে ইউরোপীয় সাম্রাজ্যবাদী শক্তিগুলো বিভিন্ন প্রান্তে তাদের আধিপত্য বিস্তার করেছিল, এবং তখনই ইউরোপীয় শক্তিশালী দেশগুলো তাদের আধিপত্য বিস্তারের জন্য প্রটেক্টোরেট রাষ্ট্রের ধারণা কার্যকরভাবে ব্যবহার করেছিল। ব্রিটেন, ফ্রান্স, এবং অন্যান্য ইউরোপীয় শক্তি আফ্রিকা, এশিয়া এবং মধ্যপ্রাচ্যে অনেক দেশকে প্রটেক্টোরেট করে রাখে। প্রটেক্টোরেট ব্যবস্থার মাধ্যমে তারা ওই দেশগুলোর প্রাকৃতিক সম্পদ এবং ভূ-রাজনৈতিক কৌশলগত অবস্থান ব্যবহার করতে পারত, যদিও সেসব দেশকে সরাসরি উপনিবেশ হিসেবে ঘোষণা করা হয়নি।
প্রটেক্টোরেট রাষ্ট্রের প্রকারভেদ
প্রটেক্টোরেট রাষ্ট্র বিভিন্ন ধরণের হতে পারে। এটি নির্ভর করে কতটুকু ক্ষমতা সেই মূল রাষ্ট্র তাদের উপর প্রয়োগ করছে এবং প্রটেক্টোরেট রাষ্ট্র কতটুকু স্বাধীনতা উপভোগ করছে তার উপর। এই কাঠামোগুলো বিভিন্ন প্রেক্ষাপটে ভিন্ন হতে পারে। এখানে প্রটেক্টোরেট রাষ্ট্রের প্রধান প্রকারভেদগুলোর আলোচনা দেওয়া হলো:
১. সরাসরি প্রটেক্টোরেট রাষ্ট্র
এই ধরনের প্রটেক্টোরেট রাষ্ট্রগুলোর নিজস্ব সামরিক বাহিনী থাকে না বা তাদের সামরিক ব্যবস্থাপনা সম্পূর্ণ মূল রাষ্ট্রের অধীনে থাকে। আন্তর্জাতিক সম্পর্ক, অর্থনীতি এবং সামরিক বিষয়ে তাদের স্বাধীনতার পরিধি খুবই সীমিত। মূলত, তারা কেবল অভ্যন্তরীণ বিষয়গুলোতে সামান্য স্বাধীনতা ভোগ করে। উদাহরণস্বরূপ, ব্রিটিশ প্রটেক্টোরেট হিসেবে থাকা বিভিন্ন আফ্রিকান দেশ। ১৮৮২ সালে মিশরকে ব্রিটেন প্রটেক্টোরেট রাষ্ট্রে পরিণত করে। মিশরের সেচ ব্যবস্থা এবং সুয়েজ খাল ব্রিটিশ স্বার্থে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ছিল, কারণ এটি ভারতসহ অন্যান্য ব্রিটিশ উপনিবেশের সাথে সংযোগের মূল পথ ছিল। মিশর নিজস্বভাবে কিছু অভ্যন্তরীণ বিষয় পরিচালনা করতে পারত, কিন্তু সামরিক ও কূটনৈতিক বিষয়ে ব্রিটেনই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিত।
২. আংশিক প্রটেক্টোরেট রাষ্ট্র
এই ধরনের প্রটেক্টোরেট রাষ্ট্রগুলো কিছুটা স্বাধীনতা ভোগ করে। তারা নিজস্ব সামরিক ও কূটনৈতিক সম্পর্ক বজায় রাখতে পারে, কিন্তু কৌশলগত কোনো সিদ্ধান্ত বা নিরাপত্তা ইস্যুতে মূল রাষ্ট্রের সাথে পরামর্শ করে। মূলত, সামরিক ও আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে এই রাষ্ট্রগুলো সীমাবদ্ধ। উদাহরণস্বরূপ, মরক্কো ফরাসি প্রটেক্টোরেট হিসেবে ছিল। ১৯১২ সালে মরক্কোকে ফ্রান্স প্রটেক্টোরেট রাষ্ট্রে পরিণত করে। যদিও মরক্কোর সুলতান ক্ষমতায় ছিল, কিন্তু আসলে ফরাসিরা সেখানে সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়ন্ত্রণ করত। মরক্কোর কূটনৈতিক এবং অর্থনৈতিক বিষয়গুলো ফ্রান্সের নিয়ন্ত্রণাধীন ছিল, এবং এটি কার্যত ফরাসি শাসনাধীন একটি রাষ্ট্রে পরিণত হয়।
প্রটেক্টোরেট রাষ্ট্রের বৈশিষ্ট্য
প্রটেক্টোরেট রাষ্ট্রগুলোর কিছু গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যা তাদেরকে অন্যান্য রাষ্ট্র সম্পর্ক থেকে আলাদা করে:
১. সামরিক সুরক্ষা ও নিয়ন্ত্রণ
প্রটেক্টোরেট রাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী প্রধানত পৃষ্ঠপোষক রাষ্ট্র দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। প্রটেক্টোরেট রাষ্ট্রের নিজস্ব সামরিক বাহিনী থাকলেও, তারা বড় ধরনের যুদ্ধ বা কূটনৈতিক সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে স্বাধীনতা ভোগ করে না।
২. কূটনৈতিক সম্পর্কের সীমাবদ্ধতা
প্রটেক্টোরেট রাষ্ট্রগুলোর নিজস্ব কূটনৈতিক প্রতিনিধিত্ব এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে সীমিত ক্ষমতা থাকে। তাদের কূটনৈতিক সম্পর্কের প্রধান সিদ্ধান্তগুলো পৃষ্ঠপোষক রাষ্ট্রের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রিত হয়।
৩. অর্থনৈতিক নির্ভরতা
প্রটেক্টোরেট রাষ্ট্রগুলোর অর্থনীতি প্রায়ই তাদের পৃষ্ঠপোষক রাষ্ট্রের উপর নির্ভরশীল থাকে। তাদের অর্থনৈতিক সম্পদ এবং বাণিজ্যিক কার্যক্রম শক্তিশালী রাষ্ট্র দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হতে পারে।
সিকিমের ভারতে অন্তর্ভুক্তি
সিকিমের ভারতভুক্তি প্রটেক্টোরেট রাষ্ট্র সম্পর্কের একটি বাস্তব উদাহরণ হিসেবে কাজ করে, যা সফলভাবে ভারতীয় আধিপত্যের অধীনে আসার পথে একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা। ১৯৫০ সালে, ভারত এবং সিকিমের মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল, যার মাধ্যমে সিকিমকে ভারতের প্রটেক্টোরেট রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষিত করা হয়। চুক্তির মাধ্যমে সিকিমের অভ্যন্তরীণ শাসনবিধি বজায় থাকলেও, এর প্রতিরক্ষা এবং কূটনৈতিক বিষয়গুলো ভারত পরিচালনা করত।
How Sikkim Became A Part Of India?
ভারত এই সম্পর্কটি কৌশলগতভাবে ব্যবহার করেছিল, কারণ সিকিমের অবস্থান ভারত এবং চীনের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূ-রাজনৈতিক স্থান দখল করে। সিকিমের ওপর ভারতের প্রভাব এতটাই বেড়ে যায় যে, ১৯৭৫ সালে সেখানে গণভোটের মাধ্যমে সিকিমকে ভারতীয় প্রদেশ হিসেবে ঘোষণা করা হয়। এই ঘটনাটি ভারতের রাজনৈতিক ক্ষমতা ও কৌশলগত দক্ষতার প্রমাণ হিসেবে বিবেচিত হয়, যেখানে একটি প্রটেক্টোরেট রাষ্ট্রকে সফলভাবে মূল শাসনের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক: স্বৈরাচার হাসিনার প্রটেক্টোরেট রাষ্ট্র বানানোর ব্যর্থ প্রচেষ্টা
বাংলাদেশ এবং ভারতের সম্পর্কেও প্রটেক্টোরেট রাষ্ট্রের ধারণা প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছিল। ভারতের দীর্ঘদিনের কৌশলগত আগ্রহ ছিল বাংলাদেশকে প্রভাবের অধীনে রাখা, বিশেষ করে সামরিক ও কূটনৈতিক ক্ষেত্রে। ২০০৯ সাল থেকে, শেখ হাসিনার শাসনামলে, ভারতের সাথে বাংলাদেশের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তৈরি হয়, এবং বিভিন্ন বিশ্লেষকরা ধারণা করেছিলেন যে, বাংলাদেশ ধীরে ধীরে ভারতের প্রটেক্টোরেট রাষ্ট্রে পরিণত হচ্ছে।
ভারতকে যা দিয়েছি সারা জীবন মনে রাখবে
সময়ের ব্যবধানে শেখ হাসিনা সরকারের অধীনে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ হয়ে ওঠে। ভারতীয় গণমাধ্যম ও বিশেষজ্ঞরা প্রায়ই হাসিনা সরকারকে ভারতের জন্য সুবিধাজনক বলে উল্লেখ করেছেন। বিশেষ করে নিরাপত্তা ও বাণিজ্য চুক্তির মাধ্যমে বাংলাদেশ ভারতের প্রতি নির্ভরশীল হয়ে পড়ে। হাসিনা সরকারের সময়ে, ভারত-বাংলাদেশের বাণিজ্য বৃদ্ধি পায়, সীমান্তবর্তী নিরাপত্তা চুক্তিগুলো স্বাক্ষরিত হয়, এবং ভারতের ব্যবসায়িক স্বার্থগুলি বাংলাদেশে গুরুত্বপূর্ণ অবস্থান দখল করতে থাকে। সমালোচকরা দাবি করেছেন যে, এই সম্পর্কটি বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের জন্য ক্ষতিকর ছিল এবং এটি বাংলাদেশকে ভারতের এক ধরনের স্যাটেলাইট বা প্রটেক্টোরেট রাষ্ট্রে পরিণত করতে পারত।
প্রতিবাদ ও গণঅভ্যুত্থান: ২০২৪ সালের আগস্টে হাসিনা সরকারের পতন
যদিও ভারত হাসিনা সরকারের ওপর নির্ভর করে বাংলাদেশকে প্রটেক্টোরেট রাষ্ট্রের মতো পরিচালনা করতে চেষ্টা করেছিল, ২০২৪ সালের আগস্টে একটি গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক পরিবর্তন ঘটে। ছাত্র ও সাধারণ মানুষের ব্যাপক গণবিপ্লবের মুখে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারকে পদত্যাগ করতে হয়। জনগণের এই বিপ্লব মূলত শেখ হাসিনার স্বৈরতান্ত্রিক শাসন, দুর্নীতি, এবং ভারতের অতিরিক্ত হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে ছিল। সরকারি চাকরিতে বৈষম্যমূলক কোটা সংশোধনের আন্দোলন এক সময় স্বৈরাচার হাসিনার সরকার বিরোধী আন্দোলনে পরিণত হয়। এই বিপ্লবকে “বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার গণ অভ্যুত্থান” নামে অভিহিত করা হয়।
এটি প্রমাণ করে যে, প্রটেক্টোরেট রাষ্ট্রের ধারণা সব সময় কার্যকর হয় না, এবং শক্তিশালী রাষ্ট্রের হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধেও জনগণ বিপ্লব করতে পারে। শেখ হাসিনার পতনের পর, ড. মুহাম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বে বাংলাদেশ তার নিজস্ব সার্বভৌমত্ব পুনরুদ্ধার করার লড়াই শুরু করে ।
আধুনিক যুগে প্রটেক্টোরেট রাষ্ট্রের প্রভাব
আধুনিক যুগে সরাসরি প্রটেক্টোরেট রাষ্ট্রের ধারণা কিছুটা দুর্বল হয়ে গেলেও, অনেক ছোট এবং দুর্বল দেশ এখনও শক্তিশালী রাষ্ট্রের হস্তক্ষেপের মাধ্যমে সীমিত স্বাধীনতা ভোগ করে। এটি বিশেষ করে সামরিক সংঘাত বা দুর্বল অর্থনীতির দেশগুলোতে দেখা যায়। যেমন, উত্তর কোরিয়া চীনের কৌশলগত প্রভাবের অধীনে রয়েছে। যদিও উত্তর কোরিয়া নিজস্ব শাসনব্যবস্থা পরিচালনা করে, চীন তাকে আন্তর্জাতিকভাবে সুরক্ষিত রাখে এবং অর্থনৈতিক সহযোগিতা প্রদান করে। উত্তর কোরিয়া প্রটেক্টোরেট রাষ্ট্র না হলেও, এর সম্পর্কটি কিছুটা প্রটেক্টোরেট কাঠামোর মতোই।
প্রটেক্টোরেট রাষ্ট্রের ধারণাটি বিশ্ব ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। যদিও প্রটেক্টোরেট রাষ্ট্রের ধারণা আজ কিছুটা দুর্বল হয়ে গেছে, তবে বিভিন্ন প্রেক্ষাপটে এর ব্যবহার এবং প্রভাব এখনো বিদ্যমান। এটি একটি সম্পর্ক যেখানে একটি দুর্বল রাষ্ট্র একটি শক্তিশালী রাষ্ট্রের সুরক্ষায় থেকে কিছুটা স্বাধীনতা ভোগ করে। সিকিমের ভারতভুক্তির ঘটনা এবং বাংলাদেশে শেখ হাসিনার শাসনকাল প্রমাণ করে যে, প্রটেক্টোরেট সম্পর্ক সব সময় একভাবে কাজ করে না। যখন শক্তিশালী রাষ্ট্রের প্রভাব অতিরিক্ত হয়ে ওঠে, তখন জনগণের মধ্যে অসন্তোষ জন্মায় এবং পরিবর্তনের জন্য আন্দোলন শুরু হয়।
সম্পর্কিত আর্টিকেল
কোন আর্টিকেল খুঁজছেন?
আমাদের অনুসরণ করুন
এক নজরে এই আর্টিকেলে যেসব বিষয় আলোচনা করা হয়েছে…
সাম্প্রতিক আর্টিকেল
শেষপর্যন্ত কাশ্মীরের পেহেলগাম সন্ত্রাসী হামলাই কি ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ বাঁধাবে?
পেহেলগাম সন্ত্রাসী হামলা, ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের আশঙ্কা, সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিত, ও সীমান্তে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের অবনতি নিয়ে বিস্তারিত বিশ্লেষণ।
আদালত কী? আদালত কত প্রকার ও কি কি?
আদালত হলো রাষ্ট্র কর্তৃক স্বীকৃত সেই বৈধ প্রতিষ্ঠান, যেখানে প্রচলিত আইন অনুযায়ী বিরোধ নিষ্পত্তি, অপরাধের বিচার ও আইনি অধিকার রক্ষার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়।
ইক্যুইটি বা ন্যায়বিচার (Equity) কী? ইক্যুইটির ম্যাক্সিম সমূহ কী কী?
ইক্যুইটি বা ন্যায়বিচার (Equity) হল সাধারণ আইন (Common Law) এর শর্তের বাইরে গিয়ে ন্যায্যতা ও ন্যায় নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে সৃষ্টি হওয়া একটি স্বতন্ত্র বিচারব্যবস্থা
আব্রাহাম চুক্তিঃ মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতি, এবং ফিলিস্তিনের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা
আব্রাহাম চুক্তি হলো ইসরাইলের সাথে সংযুক্ত আরব আমিরাত ও বাহরাইন সহ আরব দেশগুলোর মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণের জন্য একাধিক চুক্তির সমষ্টি।
পশ্চিমা ডাবল স্ট্যান্ডার্ডঃ ফিলিস্তিনের লাশের ওপর দাঁড়িয়ে মানবাধিকারের বুলি!
পশ্চিমা ডাবল স্ট্যান্ডার্ড দেখলে মনে হয়, গাজায় কোনো মানুষ নিহত হয় না—শুধু "হামাস মেম্বার" হয়! আর ইউক্রেনের গমের ক্ষেত ধ্বংস হলে "হিউম্যানিটি ক্রাইম" হয় ।